আগস্ট ১২: অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী এরিক মাসকিন চীনের সংস্কার, উন্মুক্তকরণ ও অর্থনীতি নিয়ে গভীর গবেষণা করেছেন। তিনি জানান, চীন অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। এরিক মাসকিন সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপ বা সিএমজিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। আমরা আজ এ বিষয়ে দৃষ্টি দেবো।
১৪ জুলাই মৌলিক বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক কংগ্রেস-২০২৪ বেইজিংয়ের ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়। এতে দেশ-বিদেশের আট শতাধিক পণ্ডিত অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী এরিক মাসকিন রয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা অনুসারে, বিশ্বের উচ্চ মানের বৈজ্ঞানিক বিনিময়ের মঞ্চ প্রতিষ্ঠা এগিয়ে নেওয়া, মৌলিক বিজ্ঞান খাতের উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়া এবং মানবজাতির বৈজ্ঞানিক সভ্যতার অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে মৌলিক বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক কংগ্রেস কাজ করছে।
এবারের আন্তর্জাতিক কংগ্রেস নিয়ে এরিক মাসকিন সিএমজির সঙ্গে কথা বলেন। তিনি মনে করেন, এবারের কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো আন্তর্জাতিক রূপ। বর্তমান বিশ্বে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক খাতে উত্তেজনা দিন দিন গুরুতর হচ্ছে। তবে বিজ্ঞান আমাদের একতাবদ্ধ করতে পারে। এ ছাড়া বিজ্ঞানও একতা প্রয়োজন। বিশ্বে চীন হোক, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপ হোক, প্রত্যেক দেশে অসাধারণ বিজ্ঞানী আছে। এবারের মৌলিক বিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে সব বিজ্ঞানী একত্রিত হয়েছে। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া এবারের সম্মেলনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হচ্ছে তা আমাদের সচেতনতা দিয়েছে যে, মৌলিক বিজ্ঞানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। ইতিহাস আমাদের জানায়, সব মহান প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ভিত্তি হচ্ছে মৌলিক বিজ্ঞান।
এরিক মাসকিন ১৯৯৬ সালে চীন প্রথমবার এসেছেন। এরপর তিনি অনেক বার চীন সফর করেছেন। চীন সম্পর্কে তিনি জানান, কোনো সন্দেহ নেই, চীন উন্মুক্তকরণ চালিয়ে আসছে, এবং চীন বিশ্বের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান মহলের একটি অংশে পরিণত হয়েছে। যাতে করে চীনের পরিবর্তন অনেক এগিয়ে যায়। এতে ৪০ বছরের আগে একটি গরীব দেশ থেকে চীন এখন একটি সমৃদ্ধ ও উচ্চ গতির উন্নয়নের অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
অনেক বছর ধরে এরিক মাসকিন চীনের অর্থনীতি উন্নয়নে নজর রাখছেন। চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণে যে চীনা মেধা রয়েছে, তার প্রতি তিনি ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছেন। এ ছাড়া চীন নতুন মানের উৎপাদন শক্তি উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছেন।
তিনি জানান, ‘৪০ বছর ধরে চীন অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। চীনের সাফল্যের কয়েকটি কারণ আছে। প্রথমত চীন বাজার অর্থনীতি এগিয়ে নিয়েছে। বাজারের শক্তি চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া, বিশ্বের জন্য চীন উন্মুক্তকরণ চালিয়েছে। যা একটি সঠিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ ছাড়া, চীন সরকারের কাঠামও দারুণ সফল বলে আমি মনে করি।’
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘নতুন মানের উৎপাদন শক্তির’ ধারণা উত্থাপন করেছেন। এ বিষয়ে এরিক মাসকিন অনেক ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তা অনেক অর্থপূর্ণ। ২১ শতকের প্রযুক্তি এখন ২০ শতকের প্রযুক্তিকে প্রতিস্থাপন করছে। চীনের প্রতি, সামনের দিকে থাকা এবং নতুন প্রযুক্তিতে অর্থ ও সম্পদ বিনিয়োগ করা তাৎপূর্যপূর্ণ। যেমন, চীন ইতোমধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ খাতে চীনের বিনিয়োগ অনেক কৌশলী। কারণ, বিশ্বের এসব বৈদ্যুতিক গাড়ি দরকার।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, বিশ্বের অনেক সৌভাগ্য চীনের শক্তিশালী অর্থনীতি আছে। বিশ্ব উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে চীনের অর্থনীতি কাজ করছে। এ ছাড়া, চ্যালেঞ্জের সামনে তা আরও বেশি নিশ্চয়তা দেয়। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশকে সহযোগিতা, উন্মুক্তকরণ ও ভাগাভাগির আহ্বানও জানান তিনি। যাতে করে, একযোগে যুগের অগ্রগতি এগিয়ে নেওয়া যায়।
(আকাশ/তৌহিদ/জিনিয়া)