সবেমাত্র সমাপ্ত সিপিসি’র একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনে সার্বিকভাবে সংস্কার গভীরতর করা এবং চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের জন্য ‘সিদ্ধান্ত’ পেশ করা হয়। এ সিদ্ধান্তে কৌশলগত ও সামষ্টিক দিক থেকে সংস্কারের দিক নির্দেশনা, সংস্কারের উদেশ্য আখ্যায়িত করা হয়। এ সিদ্ধান্ত কীভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি কীভাবে চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের জন্য দৃঢ় চালিকাশক্তি ও ব্যবস্থামূলক নিশ্চয়তা প্রদান করে। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয়ে একটু আলোচনা করবো
ক: ২২ হাজার শব্দের এ সিদ্ধান্তে রয়েছে ৩০০টি বিস্তারিত সংস্কামূলক ব্যবস্থা। তাতে রাষ্ট্র প্রশাসনের নানান দিক অন্তর্ভুক্ত, যা সার্বিকভাবে সংস্কার গভীরতর করা এবং চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকানের রোডম্যাপ তৈরি করে।
খ: আজ আমরা এ সিদ্ধান্তের জন্ম সম্পর্কে জানাবো।
ক: এ সিদ্ধান্ত খসড়া তৈরি করতে ২০২৩ সালের শীতকাল থেকে ২০২৪ সালের গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময় লেগেছে। সিপিসির শীর্ষ নেতা সি চিন পিং সিদ্ধান্তের নথি খসড়া গ্রুপের নেতা ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সিপিসি’র বিশতম কংগ্রেসের পর থেকে আমি বরাবরই সার্বিকভাবে সংস্কার গভীরতর করার বিষয়ে ভেবে আসছি। এ নথি খসড়া তৈরির প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্র প্রচার এবং সবার চিন্তাধারা ভেবে দেখা হয়েছে।
খ: সি চিন পিং’র নেতৃত্বে ৭০ জনেরও বেশি সদস্য পার্টি ও পার্টির বাইরে বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চলে গিয়ে তদন্ত ও জরিপ করেছেন এবং ব্যাপকভাবে বিভিন্ন স্তরের অভিমত গ্রহণ করেছেন
ক: ৭মা সেরও বেশি সময় ধরে তৈরি করা এ সিদ্ধান্ত সিপিসি’র বিশতম জাতীয় কংগ্রেসের তৃতীয় পুর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সর্বসম্মত ভোটে গৃহীত হয়।
খ: এ সিদ্ধান্ত থেকে জানা যায়, এর আছে ব্যবস্থামূলক কৌশলগত পদক্ষেপের পাশাপাশি রয়েছে গভীর ও বিস্তারিত ব্যবস্থা। চীনের এক প্রবাদের মধ্য দিয়ে বর্ণনা করে বলা যায় যে, একটি বিস্তৃত এবং গভীর অবস্থানের পাশাপাশি সূক্ষ্মতার ওপরও গুরুত্বারোপ করতে হবে।
(রেকর্ড-১)
ক: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেশ কয়েকবার ‘একটি বিস্তৃত এবং গভীর অবস্থানের পাশাপাশি সূক্ষ্মতার ওপরও গুরুত্বারোপ করতে হয়’ কথাটি উদ্ধৃত করেছেন। বিস্তৃত এবং গভীর অবস্থান এবং সূক্ষ্মতা যথাক্রমে সম্পূর্ণতা এবং অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। এ কথা চীনাদের নিজেকে গড়ে তোলা এবং দেশ প্রশাসনের পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে।
খ: উদাহরণস্বরূপ, এ সিদ্ধান্তের বিস্তৃত দিক হলো সম্পূর্ণ অবস্থা অনুসরণ করে দৃষ্টিপ্রসারে সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ক: এ সিদ্ধান্তে রয়েছে ১৫টি অংশ। তাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে অর্থনীতি, গণজীবিকা, শিক্ষা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, গণতন্ত্র, আইনী প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীন পার্টির সংগঠনসহ নানা ক্ষেত্র। এ সিদ্ধান্ত সিপিসি’র ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক নথি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
খ: ব্যবস্থামূলক চেতনা চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের দেশ প্রাশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এটি আবার এ সিদ্ধান্তের অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ নীতির একটি। ২০ হাজারের বেশি শব্দ নিয়ে গঠিত এ সিদ্ধান্তে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং গণজীবিকার উন্নতিকে কেন্দ্র করে সার্বিকভাবে সংস্কার গভীরতর করার কার্যক্রমে ব্যবস্থামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খ: বিস্তৃত ও গভীর দিক তুলে ধরছি আমরা, তাহলে সূক্ষ্মতার দিক কিভাবে প্রতিফলিত হয়?
ক: এ সিদ্ধান্তে রয়েছে বিস্তারিত ৩০০টিরও বেশি সংস্কারের ধারা। যা আধুনিকায়নের বিভিন্ন দিক কাভার করে। জনসাধারণের খাওয়া, কাপড়চোপড় এবং যাতায়াতসহ নানা খাতের ওপর মনোনিবেশ করা হয়। তাই বলা যায়, এ সিদ্ধান্ত শুধু রূপরেখা নয়, চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের রোডম্যাপও নির্ধারিত হয়েছে এতে।
খ: আরও উল্লেখ্য করতে হয় যে, এ সিদ্ধান্তে শুধু দেশের প্রশাসনের সংস্কার নয়, আরও উচ্চমানের উন্মুক্তকরণের কৌশলও প্রবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি, ব্যবস্থামূলক উন্মুক্তকরণ, বৈদেশিক বাণিজ্যিক সংস্কার, বিদেশী বিনিয়োগ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রশাসনের ব্যবস্থামূলক সংস্কার গভীরতর করা হবে এবং ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে’র আওতায় উচ্চমানের যৌথ নির্মাণ বেগবান করা হবে। এ সব ব্যবস্থা বিদেশী বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ বটে।
ক: যাই হোক, নতুন যুগে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নীতি মানব জাতির অভিন্ন স্বার্থের সমাজ সূচনা করবে বলে আশা করা যায়।
(রুবি/হাশিম/লাবণ্য)