এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও সিচাং-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর সিচাং সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা সিনচিয়াং নিয়ে কথা বলব।
উরুমছি শুল্ক বিভাগের তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে সিনচিয়াংয়ের বৈদেশিক বাণিজ্যে আমদানি ও রফতানির মোট মূল্য ছিল ২২০৬৩ কোটি ইউয়ান, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ৪৮.৪ শতাংশ বেশি। একই সময়কালে, সিনচিয়াং বন্দর দিয়ে আমদানি ও রফতানিকৃত মালের পরিমাণ ছিল ৩৯.৩৩৮ মিলিয়ন টন, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ১১.৯ শতাংশ বেশি।
সিনচিয়াংয়ের বৈদেশিক বাণিজ্যে অর্জিত প্রবৃদ্ধির জন্য চীনের বিশেষ অঞ্চলটির বিশেষ অবস্থানগত সুবিধা এবং স্থানীয় পর্যায়ে গৃহীত বাণিজ্যবান্ধব নীতিমালা ও সেসবের কার্যকর প্রয়োগকে কৃতিত্ব দেওয়া যেতে পারে। এতদঞ্চলের বিভিন্ন বিভাগ একযোগে কাজ করে চলেছে একটি ভালো ব্যবসা-পরিবেশ গড়ে তুলতে। এখানকার রফতানি-পণ্যেও বৈচিত্র্য আছে। স্থানীয় পর্যায়ে ভোগের ক্রমশ বৃদ্ধি, আমদানিও বাড়াচ্ছে।
এবারের ‘চীন-এশিয়া-ইউরোপ এক্সপো’-তে অংশ নেয় সিনচিয়াং। সেখানে এ অঞ্চলটির উন্নয়ন-সাফল্য প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ব। গত ৩০ জুন শেষ হওয়া অষ্টম চীন-এশিয়া-ইউরোপ এক্সপোতে ৫০টি দেশ, অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং দেশ-বিদেশের ৩,২০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। এক্সপোতে ৬১৫৫৫ কোটি ইউয়ান মূল্যে বেশকিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাওজি ইউকাই গ্লাস (গ্রুপ) কোম্পানি লিমিটেড আরতুশ পৌর সরকারের সাথে একটি ৪০ হাজার-টন বিমান-গ্রেড টাইটানিয়াম স্পঞ্জ এবং টাইটানিয়ামভিত্তিক নতুন উপাদান প্রকল্প স্বাক্ষর করেছে। বাওজি ইউকাই গ্লাস (গ্রুপ) কোম্পানি লিমিটেডের সহ-সভাপতি ইয়াং পো বলেন, ‘আমরা মধ্য-এশীয় বাজার সম্প্রসারণের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা বাড়াতে সিনচিয়াংয়ের অবস্থানগত সুবিধার সুযোগ নেব।’
চীন-এশিয়া-ইউরোপ এক্সপো ছাড়াও, সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা, চীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিষেবা মেলা, এবং চীন আমদানি-রফতানি পণ্য মেলার মতো প্রদর্শনীতেও সক্রিয় ছিল ও আছে। দশম চীন আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি মেলঅ চলতি বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিনচিয়াং লেভো টেকনোলজি বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রকল্পচুক্তি স্বাক্ষর করে।
সিনচিয়াং লেভো টেকনোলজির নির্বাহী উপ-মহাব্যবস্থাপক তিয়ান হুই বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান একটি মূল প্রকৌশলকেন্দ্র এবং একটি গবেষণা ও উন্নয়নকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে।
চলতি বছরের প্রথমার্ধে হংকং ও ম্যাকাওয়ের সাথে সিনচিয়াংয়ের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিনিময় কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। একই সময়ে, উজবেকিস্তান-সিনচিয়াং পণ্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এসব প্রদর্শনী ও কার্যক্রমে সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ পণ্য ও সেবা নিয়ে হাজির হয়।
সিনচিয়াং চিনচাংয়ু তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক বলেন, তার কোম্পানি কর্তৃক আবিষ্কৃত বিভিন্ন প্রযুক্তি, পরিবহন, খননসহ বিভিন্ন কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে ও হচ্ছে। ভবিষ্যতে, এই প্রতিষ্ঠান উপগ্রহ নেভিগেশন শিল্প এবং সফ্টওয়্যার শিল্পের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
সিনচিয়াংয়ের স্থানীয় সরকার ও কোম্পানিগুলো বিদেশে বাজার সম্প্রসারণের জন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে সিনচিয়াংয়ের সরকারি প্রতিনিধিরা কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তান সফর করেন। সিনচিয়াং মধ্য-এশিয়া তেল ও গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারপারসন লি ওয়েনপিন বলেন, যোগাযোগ, আলোচনা ও সাইট পরিদর্শনের মাধ্যমে, তিনি মধ্য-এশীয় বাজারের চাহিদা ও প্রবণতা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছেন।
রেশমপথ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মূল অংশ সিনচিয়াং। এখানকার বিভিন্ন কোম্পানি ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের আওতায়, নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশের সাথে সিনচিয়াংয়ের বাণিজ্য ক্রমশ বাড়ছে।
সিনচিয়াংয়ের ইয়িং কাস্টমস পণ্যের ছাড়পত্র দিতে এখন সময় নিচ্ছে মাত্র ৩০ মিনিট, যা আগে অনেক বেশি ছিল। এতে পচনশীল পণ্যের গুণগত মান ধরে রাখা সহজতর হচ্ছে। ইয়িং কাস্টমসের পরিদর্শন বিভাগের প্রধান ঝং চিনলং বলেন, ভবিষ্যতে শুল্ক ছাড়পত্র দেওয়ার সময় আরও কমে আসবে।
প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে সিচাং’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও সিচাংয়ের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://bengali.cri.cn/ সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)