স্থানীয় সময় ১৯ জুলাই রাত ৯টা ২৫ মিনিটে দীর্ঘ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে থাইল্যান্ড থেকে লাওস পর্যন্ত আন্তঃসীমান্ত রেলপথে ১৩৩ যাত্রীবাহি ট্রেন ব্যাংকক ক্রুং থেপ আফিওয়াত থেকে রওয়ানা হয়ে উত্তরে গিয়ে নংখাই বর্ডার চেকপয়েন্টের মধ্য দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে লাওসের পিয়েনটিয়ান খামসাবথ স্টেশনে পৌঁছায়। যাত্রাটি প্রায় ১২ ঘন্টার।
প্রথম ট্রেনটি থাই-লাওস আন্তঃসীমান্ত রেলপথের যাত্রীবাহী লাইন আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবার প্রতীক। ট্রেনে কয়েকশ’ যাত্রী গুরুত্বপূর্ণ যাত্রাটি স্বচক্ষে দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন।
যাত্রী নাপাসোন জানান, এটি তাঁর প্রথম ট্রেনে করে লাওসে ভ্রমণ। টিকিটের চাহিদা বেশি ছিল। টিকিট কাটানোর সময় শুধু তিনটি খালি ছিল। তাই, টিকিট পেলেও বন্ধুর সাথে একসঙ্গে বসতে পারেননি।
রেল লাইনটি থাইল্যান্ডের আগের ব্যাংকক-নং খাই লাইনের বিস্তৃত লাইন। ৬৫৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের লাইনটির দক্ষিণ ও উত্তরে যথাক্রমে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ও লাওসের পিয়েন্টিয়ন। যা দু’দেশের রাজধানী সংযুক্ত করা নতুন বাছাইয়ে পরিণত হয়েছে।
যাত্রী বানইয়া বললেন, চাকরির কারণে তিনি ট্রেনে করে ব্যাংকক ও নং খাইয়ের মধ্যে যাতায়াত করেন। নতুন লাইনটি আগের পুরনো ট্রেনের চেয়ে আরো সুবিধাজনক ও আরামদায়ক। এয়ার-কন্ডিশনড স্লিপিং বার্থের উপর ও নিচে বার্থের মধ্যে জায়গা আরো বেশি হয়েছে। অভিজ্ঞতা খুব ভালো।
বর্তমানে থাই-লাওস আন্তঃসীমান্ত যাত্রীবাহী ট্রেনের ‘দু’টি জায়গা দু’বার পরীক্ষা’র কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স চালু রয়েছে। ট্রেনটি দু’দেশের সীমান্তে থাই পক্ষের নং খাইয়ে প্রায় ৪০ মিনিট থামে। আন্তঃসীমান্ত যাত্রী প্রস্থান আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর আবার ট্রেনে এসে দশ-বার কিলোমিটার দূরে খামসাবথ স্টেশনে যাবে।
২০ তারিখ ৯টা ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি লাওসের পিয়েন্টিয়ন খামসাবথ স্টেশনে পৌঁছায়। পৌঁছানোর পর থাই যাত্রী গব উত্তেজিতভাবে বললেন, এটি আমার প্রথমবার থাইল্যান্ড থেকে ট্রেনে করে সরাসরিভাবে পিয়েন্টিয়নে পৌঁছানো। স্লিপিং বার্থে এক রাত ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই এটি গন্তব্যে পৌঁছে যায়। খুবই সুবিধাজনক।
থাই-লাওস আন্তঃসীমান্ত রেলপথ শুধু দু’টি দেশকে সংযুক্ত করেছে তা নয়, বরং আরো বেশি মানুষের আরো দূরে নিয়ে যাবে। যেমন কোন কোন যাত্রী খামসাবথ স্টেশনে পৌঁছানোর পর গণ-পরিবহন করে চীন-লাওস রেলপথের পিয়েন্টিয়ন স্টেশনে গিয়ে চীন-লাওস রেলপথে করে উত্তর লাওস বা চীনে যেতে পারবেন। যা লাওস-থাই আন্তঃসীমান্ত রেলপথ এবং চীন-লাওস রেলপথের আন্তঃযোগাযোগ বাস্তবায়ন বলা যায়।
ব্রিটেন থেকে আসা রিচার্ডের পিয়েন্টিয়নে পৌঁছানোর পর চীন-লাওস রেলপথের পিয়েন্টিয়ন স্টেশনে গিয়ে চীন-লাওস রেলপথে লুয়াং প্রাবাং-এ যাবার পরিকল্পনা ছিল।
৩০ বছর আগে তিনি চীনে এসেছিলেন। এবার আমার সময় কম। কিন্তু আমার একটি বড় পরিকল্পনা আছে। পরবর্তীতে আমি ট্রেনে করে সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও লাওসের মাধ্যমে চীনে যাব। চীনে ফিরে যাওয়া প্রত্যাশা করি আমি। সেখানকার নতুন প্রজন্মের ট্রেনের অভিজ্ঞতা নিতে চাই। রিচার্ড তার উত্তেজনা লুকাতে না পেরে এমন কথা বললেন। (প্রেমা/হাশিম)