চীনের সাংস্কৃতিক পর্যটন বাজার বিকশিত হচ্ছে
2024-07-29 14:43:55

জুলাই ২৯: চলতি বছর চীনের সাংস্কৃতিক পর্যটন বাজার ক্রমশ বিকশিত হচ্ছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনে ভ্রমণকারী পর্যটকের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪২ কোটি পার্সনটাইমস, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬.৭ শতাংশ বেশি। এ সময়কালে, দেশীয় পর্যটকরা ভ্রমণে মোট ১.৫২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ব্যয় করেছেন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি। উক্ত সময়কালে স্থানীয় ও বিদেশী পর্যটকরা ১৪.১ কোটিরও বেশি বার চীনে প্রবেশ করেছেন ও চীনের বাইরে গেছেন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১৭.৮ শতাংশ বেশি। এ প্রেক্ষাপটে, দেশের জাতীয় পর্যায়ের সাংস্কৃতিক পর্যটনসম্পদের সুরক্ষা ও উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য আছে।

সম্প্রতি চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের নতুন দফা জাতীয় পর্যায়ের পর্যটনকেন্দ্রের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে ২২টি জায়গা স্থান পেয়েছে। এ পর্যন্ত চীনে জাতীয় পর্যটনকেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮৫-এ।

চীনের জাতীয় পর্যটনকেন্দ্রের নাম-তালিকায় কয়েকটি সাংস্কৃতিক রিসোর্ট বাদে বাকিগুলোর বেশিরভাগই নদী, হ্রদ ও পাহাড়সংশ্লিষ্ট প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটক আকর্ষণ করে থাকে। তাই, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা হলো পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। কোনো প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থানকে জাতীয় পর্যায়ের পর্যটনকেন্দ্র হতে হলে, সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশের মান অনেক উন্নত হতে হয়।

গত ফেব্রুয়ারিতে চীনের পর্যটন গবেষণা একাডেমি “চীনে পর্যটন উন্নয়ন প্রতিবেদন, ২০২৩-২০২৪” প্রকাশ করে। ২০২১ সালে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে সানচিয়াংইউয়ান, জায়ান্ট পান্ডা, সাইবেরিয়ান বাঘ ও চিতাবাঘ, হাইনান রেইন ফরেস্ট এবং উই পাহাড়সহ প্রথম দফা পাঁচটি জাতীয় পার্ক নির্মাণ করে। এ পর্যন্ত ৪৯টি জাতীয় উদ্যান প্রার্থী এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে (এতে ৫টি সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্ক অন্তর্ভুক্ত)। এগুলোর মোট আয়তন প্রায় ১১ লাখ বর্গকিলোমিটার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩৫ সালের মধ্যে চীন বিশ্বের বৃহত্তম জাতীয় উদ্যানব্যবস্থা গড়ে তুলবে।

প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র, প্রাকৃতিক ল্যান্ডস্কেপ, প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, ও জীববৈচিত্র্যে পূর্ণ জাতীয় উদ্যানগুলো। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জাতীয় উদ্যানে ভ্রমণকারী পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। যৌথভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা ও পর্যটন উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ‘জাতীয় উদ্যানব্যবস্থা পরিকল্পনা’ অনুযায়ী, জাতীয় উদ্যানে সবচেয়ে কঠোর সুরক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জাতীয় সাংস্কৃতিক উদ্যান নির্মাণ নতুন যুগে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ ও সাংস্কৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, উত্তরাধিকার এবং ব্যবহার প্রচারের জন্য একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। এটি হলো নতুন যুগে সংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা। জাতীয় সাংস্কৃতিক উদ্যান বরাবর বেশ কয়েকটি প্রদেশ ও অঞ্চল, সাংস্কৃতিক গবেষণার সাফল্য অনুযায়ী, ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক ও পর্যটন অভিজ্ঞতার ইভেন্ট তুলে ধরছে।

জাতীয় সাংস্কৃতিক উদ্যান নির্মাণকাজ চালু হওয়ার পর, কার্যকরভাবে চীনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পদ্ধতিগত ও সামগ্রিক সুরক্ষা এবং চীনের চমত্কার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির উত্তরাধিকার ও বিকাশকে উন্নত করছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জাতীয় সাংস্কৃতিক উদ্যান জাতীয় সাংস্কৃতিক পরিচয় গঠন ও চীনা জাতির চেতনা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছে। জাতীয় সাংস্কৃতিক উদ্যানের প্রতিটি চীনা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং আধুনিক সভ্যতার জানালা। এ জানালা দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের পর্যটকরা চীন সম্পর্কে জানতে পারেন। (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)