আজকের অনুষ্ঠানে চীনের একজন বিখ্যাত গায়িকার সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম লো ছি। তার শক্তিশালী কণ্ঠ চীনা সংগীত মহলে অনন্য। তিনি চীনের ‘প্রথম রক গায়িকা’ হিসেবে পরিচিত। যেসব চীনা মানুষ রক সংগীত পছন্দ করে, তারা অবশ্যই লো ছি’র গান শুনেছে। ১৯৯১ সাল আত্মপ্রকাশের পর থেকে তিনি অনেক জনপ্রিয় রক গান গেয়েছেন এবং এক সময় চীনা রক সংগীত উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে তার কিছু সুন্দর গান শুনবো। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন লো ছি’র একটি সুন্দর গান ‘ফিরে আসা’।
লো ছি ১৯৭৫ সালে চীনের চিয়াং সি প্রদেশের নানছাং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৩ বছর বয়সে তিনি মঞ্চে গান গাওয়া শুরু করেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রক ব্যান্ড বন জোভির গান শোনেন এবং রক সংগীত পছন্দ করেন। উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি লো ছি বিভিন্ন জায়গায় পারফর্ম করেছেন। স্নাতক পাসের পর সংগীতের স্বপ্ন অনুসরণের জন্য তিনি বেইজিংয়ে আসেন। সেখানে তার সংগীত জীবন শুরু হয়।
১৯৯১ সালে লো ছি বিখ্যাত একজন সংগীত প্রযোজকের সুপারিশে রক ব্যান্ড ‘কম্পাসে’ যোগ করে প্রধান গায়িকার ভূমিকা পালন করেন। লো ছি’র শক্তিশালী কণ্ঠ ও প্রাণবন্ত পারফরমেন্সের শৈলী তখনকার চীনা সংগীত মহলে এক নতুন জীবনশক্তি যুগিয়েছে। যারা লো ছি’র পারফরমেন্স দেখেছেন তারা অবশ্যই তার গানে আকৃষ্ট হন। বন্ধুরা, এখন আমরা একসঙ্গে শুনবো কম্পাসের একটি জনপ্রিয় গান ‘ইচ্ছা মত করো’।
১৯৯৩ সালে ব্যান্ড কম্পাসের প্রথম অ্যালবাম ‘শক্তিশালী হতে হয়’ মুক্তি পায়। এর আগে চীনে লো ছি’র মত এত শক্তিশালী রক গায়িকা কেউ ছিল না। আরো বেশি মানুষ লো ছি’র মাধ্যমে রক সংগীত জেনেছে ও পছন্দ করেছে। এই অ্যালবাম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, লো ছিও এজন্য বার্ষিক শ্রেষ্ঠ গায়িকার পুরস্কার অর্জন করেন। বন্ধুরা, এখন আমরা শুনবো অ্যালবামের একটি জনপ্রিয় গান ‘আমার ভবিষ্যত নেই’।
কম্পাসের প্রথম অ্যালবাম এত সফল যে, কেউ কেউ বলে লো ছি ভাবিষ্যতে চীনা সংগীত উন্নয়নে নেতৃত্ব দেবেন। তবে একটি দুর্ঘটনা লো ছি’র জীবন পরিবর্তন করেছে। ১৯৯৩ সালে তিনি একটি অনুষ্ঠানে অন্যের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন। ব্যান্ডের অন্যান্য সদস্যের কাজ প্রভাবিত না করার জন্য লো ছি কম্পাস ছেড়ে দেন এবং সব কাজ বন্ধ করে চিকিত্সা নেন। ফলে তার এক চোখ হারিয়ে যায়। তবে এতে তার পরিবর্তন হয় নি, জীবন সামনে এগিয়ে যায়। নিজের ও দর্শককে উত্সাহিত করার জন্য লো ছি গান ‘শক্তিশালী হতে হয়’ প্রকাশ করেন। বন্ধুরা, এখন গানটি শুনুন।
১৯৯৬ সালে লো ছি ব্যক্তিগত অ্যালবাম ‘খুশি মেশিন’ প্রকাশ করেন। সেই দুর্ঘটনায় তার জীবনের গভীর প্রভাবিত হলেও তিনি গানের মাধ্যমে সবার কাছে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করতে চান। এরপর তিনি আরও কয়েকটি গান প্রকাশ করেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হলে সংগীতের কাজ বন্ধ করতে হয়। ১৯৯৮ সালে লো ছি জার্মানি গিয়ে অস্থায়ীভাবে সময় কাটান। বন্ধুরা, এখন আমরা একসঙ্গে তার গাওয়া সুন্দর গান ‘খুশি মেশিন’ শুনব।
২০০৪ সালে লো ছি জার্মান থেকে চীনে ফিরেন। সময় পার হয়েছে, তবে রক সংগীতের প্রতি তার ভালোবাসা কিছুই কমেনি। তিনি অনেক রক সংগীত ফেস্টিভাল ও টিভি সংগীত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, সবার সামনে আবার তার রক সংগীতের সৌন্দর্য তুলে ধরেন। বন্ধুরা, এখন আমরা একসঙ্গে শুনবো লো ছি ২০১৪ সালে চীনের জনপ্রিয় সংগীত অনুষ্ঠান ‘গায়কের’ জন্য গাওয়া একটি সুন্দর গান ‘আমার নাম জানার সবার জন্য গান’।
বর্তমান চীনা রক সংগীত অনেক উন্নত হয়েছে, রক গায়িকার সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তবে লো ছি এখনও চীনা রক সংগীতের অপরিহার্য একজন গায়িকা হিসেবে বিবেচিত হন। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে লো ছি’র আরেকটি সুন্দর গান ‘আমি অপেক্ষা করছি’ শুনবো। আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়ান।