জুলাই ১৮: সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ চীন ও বিশ্বের উন্নয়নের একটি অসাধারণ প্রক্রিয়া। এই নীতি সম্পর্কে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন: ‘চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ করা চীনা জনগণের উন্নয়ন, উদ্ভাবন, সুন্দর ভবিষ্যত চাওয়ার চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের উন্নয়ন, সহযোগিতা, শান্তিপূর্ণ জীবন চাওয়ার প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণে চীনের দ্বিতীয় এই বিপ্লব, কেবল চীনকে গভীরভাবে পরিবর্তন করেনি, বিশ্বকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।’
এখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চীনের সার্বিক ও গভীরতর সংস্কার ও চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নে বিভিন্ন দেশের অভিন্ন উন্নয়ন, মানবজাতির সভ্যতার অগ্রগতি, এবং শান্তি, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও আরও সুন্দর বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় কী কী অনুপ্রেরণা ও প্রজ্ঞা দেবে, এ জন্য বিশ্বের খুব বড় প্রত্যাশা রয়েছে।
বিগত কয়েক দশকে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীনের কেন্দ্রীয় সার্বিক ও গভীরতর সংস্কার কমিটির নেতৃত্ব দিয়ে ৭২টি সংস্কার সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেছেন, ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার পদক্ষেপ আয়োজন করেছেন, অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কার, সমাজ, পরিবেশ, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রের ৩ হাজারটিরও বেশি সংস্কার পরিকল্পনা চালু করেছেন। চীনের সংস্কার বিভিন্ন খাতে স্থিতিশীল ও দৃঢ়ভাবে চলছে এবং ক্রমাগত অগ্রগতি করছে। অনেক ক্ষেত্রের ঐতিহাসিক পরিবর্তন, ব্যবস্থানিক পুনর্নির্মাণ ও সামগ্রিক পুনর্গঠন হয়েছে।
অনেক বিদেশি বিশিষ্টজন মনে করে, চীনের সংস্কার ও আধুনিকায়ন বিশ্ব, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ভালো উদাহরণ প্রদান করেছে, এর মধ্যে থাকা ধারণা ও প্রজ্ঞা সারা বিশ্বের সংস্কারের জন্য শেখার যোগ্য।
ব্রিটিশ পণ্ডিত মার্টিন জ্যাক বলেন, চীনের সংস্কার সমসাময়িক মানব ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক রূপান্তর বাস্তবায়ন করেছে।
জাতিসংঘের সাবেক উপমহাসচিব এরিক সোলহেইম পরিবেশ সংরক্ষণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমন্বয়ের ক্ষেত্রে চীনের সাফল্যের উচ্চ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, চীন বিশ্বের সবুজ উন্নয়নের মেরুদণ্ডে পরিণত হয়েছে। চীনের অংশগ্রহণ ছাড়া, অন্য কোন দেশ সবুজ উন্নয়ন অর্জন করতে চাইলে আরও বেশি সময় ও ব্যয় করতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের প্রজ্ঞা চীনা উন্নয়নের সামগ্রিক অবস্থার নিয়ন্ত্রণে প্রতিফলিত হয়। পরিবেশগত পরিচালনা প্রচার থেকে উচ্চমানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, দৃঢ়ভাবে দুর্নীতি দমন. সার্বিক দারিদ্র্য বিমোচন পর্যন্ত, এবং বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে নতুন মানের উত্পাদন শক্তি উন্নয়ন করা পর্যন্ত, তার এ সব ধারণা চীনের উন্নয়নের জন্য অক্ষয় চালিকাশক্তি প্রদান করেছে।
শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ইয়াসিরু রানারাজা বলেন, প্রেসিডেন্ট সি’র নেতৃত্বে চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন দারিদ্র্য বিমোচন, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, সবুজ ও টেকসই উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশ্বের জন্য নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
চীনে চিলির সাবেক রাষ্ট্রদূত ফার্নান্দো রেয়েস মাতা বলেন, চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন অত্যন্ত গভীর ও শক্তিশালী ধারণা, যা আধুনিকায়ন সম্পর্কে মানুষদের পুরানো ধারণা পরিবর্তন করেছে এবং বিশ্বের দক্ষিণ দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জাগিয়েছে।
বিদেশি ব্যক্তিরা মনে করে, সি চিন পিং উত্থাপিত মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ, ‘এক অঞ্চল এক-পথ উদ্যোগ’, বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ, বিশ্ব নিরাপত্তা উদ্যোগ, বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগ ইত্যাদি বিশ্ব পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ও ধারণা সক্রিয়ভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য চীনের সমাধান ও প্রজ্ঞা প্রদান করেছে, মানবজাতির সভ্যতার অগ্রগতি ও নতুন উন্নয়নের জন্য নতুন পথ দেখিয়েছে।
(তুহিনা/হাশিম/স্বর্ণা)