‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৭৯
2024-07-17 19:17:28

‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।

৭৯ তম পর্বে যা যা থাকছে:

১. গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে দলে দলে চীনের তাইওয়ানের তরুণরা 

২. লক্ষ্য স্থির করে এর উন্নয়নে কাজ করা উচিৎ, তরুণ সাংবাদিক

৩. ম্যাকাওতে ছাত্রদের নিয়ে সামরিক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প   

১.  গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে দলে দলে চীনের তাইওয়ানের তরুণরা 

সম্প্রতি তাইওয়ানের তরুণদের নিয়ে ২১তম বার্ষিক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূর্ব চীনের ফুচিয়ান প্রদেশের ফুচৌ শহরে অনুষ্ঠিত এই ক্যাম্পে তাইওয়ান অঞ্চলের প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন কলেজ ছাত্র অংশগ্রহণ করে।

তাইওয়ান প্রণালীর উভয় পাশের তরুণদের মধ্যে যোগাযোগ গভীর করতে অল-চায়না ফেডারেশন অফ তাইওয়ান কম্প্যেট্রিয়টস এই ক্যাম্পের আয়োজন করে। আর এটি তাইওয়ানের প্রতিবেশি শহর ফুচৌতে করা হয়। কারণ সেখান থেকে শুরু করে ক্যাম্পে আসা যুবকরা অন্যদের সঙ্গে দেখা করা এবং নতুন অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য চীনা মূল ভূখণ্ডের অন্যান্য প্রদেশে ভ্রমণ করতে পারবে।   

তাইওয়ান অঞ্চলের একজন ছাত্র বিউং ইসমাহাসান তার ভালো লাগার কথা জানান।

‘প্রণালীর উভয় পাশের যুবকদের জন্য যোগাযোগ আমার জন্য একটি খুব ভালো অভিজ্ঞতা। এটি আমাদের একে অপরকে ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে  ও বুঝতে সাহায্য করে এবং আমি মনে করি এটি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করতে পারে।"   

তাইওয়ানের আরেক ছাত্র ওয়াং শু-হুয়ান শিক্ষা ক্ষেত্রে বিনিময়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। 

"আমি এখানে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাই, তাদের শেখার উপায় জানতে চাই, তাদের লাইব্রেরিগুলোতে যেতে চাই এবং তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস দেখতে চাই।’

এই ছাত্ররা ফুচৌতে একটি যৌথ সামুদ্রিক অনুসন্ধান এবং উদ্ধার মহড়া দেখে।  যার মধ্যে হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং জাহাজে আগুন, সরিয়ে নেওয়া এবং তেল ছড়িয়ে পড়া সহ সিমুলেটেড জরুরী পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে জানতে পারে তারা। 

এখানকার যাত্রাটি তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে বন্ধন এবং একটি সাধারণ সাংস্কৃতিক পরিচয় ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধাগুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এই ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী তরুণরা।

এদিকে, তাইওয়ানের কয়েক হাজার তরুণ সপ্তাহব্যাপী পূর্ব চীনের চ্যচিয়াং প্রদেশ ভ্রমণ করেছেন। এখান থেকে তারা মূল ভূখণ্ডের গভীর উপলব্ধি খুঁজে পেয়েছেন এবং তাদের থেকে সাংস্কৃতিক শিকড় সম্পর্কে আরও শেখার সুযোগ পেয়েছেন।

 

সম্প্রতি ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির জারি করা ভ্রমণ সতর্কতা সত্ত্বেও, দ্বীপ অঞ্চলের তরুণরা এই গ্রীষ্মে চীনের মূল ভূখণ্ডে ভিড় করেন। 

তাদের মধ্য থেকে ৭০০ জন তরুণ বার্ষিক ক্রস-স্ট্রেইট ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরামেও অংশগ্রহণ করেন। 

এই ধরণের পদক্ষেপের মাধ্যমে শেকড় সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেয় বলে মনে করেন তাইওয়ানের যুবক সাই শেং-ফ্যাং।

"আমি আশা করি আমরা এর মাধ্যমে আরও সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পাবো, আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় খুঁজে পাবো  এবং আমরা কোথা থেকে এসেছি এই বিষয়েই জানতে পারবো’’।

ভ্রমণের সময় শিক্ষার্থীরা চ্যচিয়াং জাদুঘর, ঐতিহাসিক স্থান, কারখানা এবং বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। তারা সাংস্কৃতিক পরিচয়ের মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

২. লক্ষ্য স্থির করে এর উন্নয়নে কাজ করা উচিৎ,  তরুণ সাংবাদিক

সম্প্রতি চীন সফর করেছেন বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গবেষক, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা এই প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। সদ্য ফিরে আসা এই দলটির তরুণ এক সদস্য সাংবাদিক মহীউদ্দিন মুজাহিদ। সিএমজি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার সফরের নানা অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন।

 ‘আমরা চীনে শাংহাই তথ্য কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। সেখানে দুইদেশের মধ্যে বিনিময় আলোচনাও হয়েছে।’

‘চীনা গণমাধ্যমগুলো দেখে মনে হয়েছে, চীনারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে খুব ধারণ করে। তাদের সবকিছুতেই গোল অর্জন করার একটি বিষয় আছে। এটি আমাকে খুব আকর্ষণ করেছে।‘  

‘চীনের তরুণদের মধ্যে আমি যা দেখেছি, তারা ভীষণ পরিশ্রমী এবং তারা প্রত্যেকেই নিজের কাজের প্রতি মনোযোগী। যার যেই কাজ সে শুধু সেটা নিয়েই ব্যস্ত।‘  

‘আমি মনে করি, তরুণদের উচিৎ নিজেদের জায়গা স্থির করা, নিজেদের লক্ষ্য স্থির করা এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। যার যেই কাজ সেটি ঠিক মতো করলে দেশের উন্নয়ন ঘটবেই।’ 

সম্পাদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

৩. ম্যাকাওতে ছাত্রদের জন্য সামরিক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প শুরু

চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ম্যাকাওয়ের তরুণদের নিয়ে ১৭তম সামরিক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প শুরু হয়েছে। শনিবার চীনা গণমুক্তি ফৌজ পিএলএ ‘র ম্যাকাও গ্যারিসনে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই ক্যাম্প।

চীনা পিএলএ ম্যাকাও গ্যারিসন এবং ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল সরকারের যৌথ আয়োজনে সাত দিনের এই গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে ম্যাকাওয়ের ১৫০জন তরুণ অংশগ্রহণ করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, "সামরিক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প" এর পতাকা হাতে চীনের জাতীয় সঙ্গীত গান অংশগ্রহণকারীরা। এসময় তাদের সামরিক ক্যাম্প জীবন শুরু করার জন্য একটি সুশৃঙ্খল ফ্যাশনে সারিবদ্ধ করে দাঁড় করানো হয়।

গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পটিকে শৈল্পিক পরিবেশনার মতো কার্যক্রম দিয়ে সাজানো হয়েছে। এতে শুটিংয়ের মতো একাধিক সামরিক প্রশিক্ষণসহ জাতীয় প্রতিরক্ষা, কূটনীতি এবং ব্যক্তিগত প্রাথমিক চিকিৎসা শেখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

প্রথম সংস্করণটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে, ২ হাজার ১০০টিরও বেশি ম্যাকাও অঞ্চলের ছাত্র সামরিক জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদক: শান্তা মারিয়া

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী 

অডিও সম্পাদনা:  রফিক বিপুল/রওজায়ে জাবিদা ঐশী 

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী