‘ঘুরে বেড়াই’ পর্ব- ৭৯
2024-07-16 18:58:34

 এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে

১। চালু হল চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ঢাকা-বেইজিং ফ্লাইট

২। প্রাচীন চীনের জীবন উপভোগ করবেন পর্যটকরা

বিশ্বব্যাপী অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রেখেছে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। কতো-শতো দেশ, কতো সংস্কৃতি, কতো ভাষা, কতো পেশা,.... কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা সময়ের টানাটানিতে দেখা হয় না, ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’

‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু...’সেই অদেখাকে দেখাতেই আমাদের আয়োজন "ঘুরে বেড়াই"।

দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান, সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান ‘ঘুরে বেড়াই’।

ঘুড়ে বেড়াই অনুষ্ঠানের ৭৯তম পর্ব আজ। আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি, আফরিন মিম।

 ১। চালু হল চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ঢাকা-বেইজিং ফ্লাইট

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যাত্রীভ্রমণের ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা-বেইজিং সরাসরি ফ্লাইট চালু করেছে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স। 

সোমবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের সিজেড-৮০১০ ফ্লাইট স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে ১২১জন যাত্রী নিয়ে উড়াল দেয় বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে। মঙ্গলবার বেইজিং সময় ভোর ৫টা ৯মিনিটে পৌঁছায় বেইজিংয়ের তাসিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

এর আগে ফিতা ও কেক কেটে ঢাকা বেইজিং রুটের যাত্রা উদ্বোধন করেন হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম এবং চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ঢাকা অফিসের মহাব্যবস্থাপক সিয়া খাং চিয়া।

এ দিকে রাত ৮টা ২০ মিনিটে বেইজিং থেকে ঢাকা রুটের চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের সিজেড-৮০০৯ ফ্লাইটটি ১১৮ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ওয়াটার স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় উদ্বোধনী ফ্লাইটটিকে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, "চায়না সাউদার্নের ঢাকা-কুয়াংচৌ রুটে সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে, এখন ঢাকা-বেইজিং রুটেও সপ্তাহে দুইটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। আমি আশা করছি সামনে দুই রুটেই ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। এতে করে পর্যটকরা খুব সহজেই চীনে এবং বাংলাদেশে আসতে পারবেন। যা আমাদের অর্থনীতিতেও অবদান রাখবে"।

সিয়া খাং চিয়া, মহাব্যবস্থাপক, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ঢাকা অফিস

চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ঢাকা অফিসের মহাব্যবস্থাপক সিয়া খাং চিয়া বলেন, ঢাকা-বেইজিং রুটে যাত্রীরা ফ্রি ট্রানজিট আবাসন সুবিধা, এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার ভাউচার, ট্যাক্সি ভাউচার, চারশ ইউয়ান মূল্যের খাবার ভাউচার, ইন্টারন্যাশনাল চেক ইন পরিষেবা পাবেন সাওছিয়াও সিটি টার্মিনালে। এ ছাড়াও আরও অনেক পরিষেবা পাবেন এই রুটের যাত্রীরা।

সু শাং লি, প্রথম যাত্রী

ঢাকা বেইজিং রুটের প্রথম যাত্রী সু শাং লি বলেন, প্রথমবার এই রুটে যাতায়াত করছি। অনুভূতি খুবই ভালো। চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের সেবা খুবই ভালো’।

ঢাকা বেইজিং রুটে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিকভাবে প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও শনিবার ঢাকা থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করবে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট।

ঢাকা-বেইজিং,বেইজিং-ঢাকা একমুখী বিমান টিকিটের মুল্য পড়বে ১৪০০ ইউয়ান, এবং দ্বি মুখী বিমান মূল্য পড়বে ২৬০০ ইউয়ান।

এই রুটে অত্যাধুনিক এয়ারবাস এ-৩২১ দ্বারা ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এই উড়োজাহাজে ১২টি বিজনেস, ১৮৭টি ইকোনমি ক্লাসসহ মোট ১৯৯টি আসন রয়েছে।

ফ্লাইট শিডিউল-

বেইজিং থেকে ঢাকা (সিজেড০০৯)

* বেইজিং ত্যাগ করার (বেইজিং) সময় বিকাল ৫টা ২০ মিনিট

* ঢাকা পৌঁছানোর বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টা ৪০ মিনিট

ঢাকা থেকে বেইজিং (সিজেড৮০১০)

* ঢাকা ত্যাগ করার (বাংলাদেশ) সময় রাত ১০ টা ১০মিনিট

* বেইজিং পৌঁছানোর (বেইজিং)সময় ভোর ৫টা ১৫ মিনিট

 প্রতিবেদন- আফরিন মিম

সম্পাদনা- শান্তা মারিয়া

২। প্রাচীন চীনের জীবন উপভোগ করবেন পর্যটকরা

প্রাচীন চীনের অভিজাত সমাজের বিলাসবহুল জীবনের মজাই ছিল আলাদা। সেই জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে পর্যটকরা চলে যেতে পারেন চেচিয়াং প্রদেশের থোংসিয়াং সিটির ফুইউয়ান সিনিক স্পটে। এখানে চলছে একটি বিশেষ উৎসব। ২৮ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই সিনিক স্পটে পর্যটকদের জন্য রয়েছে দারুণ কিছু চমক।

চীনের বেস্ট সেলিং বই থিয়াওচান কুরেন ইপাইথিয়ান। এর বাংলা অর্থ হলো একশ দিনের জন্য প্রাচীনদের জীবনযাপন। এ বইতে লেখক ইয়ুনচিয়া বিস্তারিতভাবে দক্ষিণ সোং রাজবংশের সময়কার জীবনধারা বর্ণনা করেছেন। সোং রাজবংশ ৯৬০ থেকে ১২৭৯ সাল পর্যন্ত চীনে রাজত্ব করে।

১১২৫ সালে উত্তর পশ্চিম এশিয়া থেকে আগত যাযাবর গোষ্ঠীগুলো সোং রাজবংশের উপর আঘাত হেনে উত্তর চীনে তাদের রাজধানী বিয়ানলিয়াং দখল করে নিলে সোংরাজদরবার দক্ষিণে চলে আসে এবং হাংচৌতে রাজধানী স্থাপন করে।

পরবর্তি ১৫০ বছর ধরে  সোং রাজবংশ তাদের শাসন অব্যহত রাখে।  এই সময়কে বলা হয় দক্ষিণ সোং রাজবংশের শাসন।

সেই সময়কার খাদ্য, পোশাক, সাজসজ্জা, আসবাব, বাড়িঘর, নিয়মরীতি সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা রয়েছে বইতে। এই বইকে অনুসরণ করে  ফুইউয়ান সিনিক স্পটে গড়ে তোলা হয়েছে এক মডেল এনসিয়েন্ট টাউন। এই সিনিক স্পটে প্রবেশের পর পর্যটকরা রাজকীয় পোশাক পরতে পারবেন।

মেকওভার পার্লারে তাদের ঠিক সেই যুগের মতো করে সাজিয়ে দেয়া হবে। তারা প্রাচীন অভিজাতদের জীবনধারা অনুভব করার জন্য সেই যুগের দৈনন্দিন কাজ করবেন। দক্ষিণ সোং রাজবংশের সময়কার অভিজাতদের পোশাক পরে তাদের আসবাব ব্যবহার করবেন। ওই রকম পাত্রে খাবার খাবেন। খাবারটিও হবে সেই যুগের রেসিপিতে তৈরি। চা পরিবেশিত হবে ঠিক সেই সময়কার মতো। তারা রাজকীয় পরিবেশে চায়ের পেয়ালা হাতে গল্প করবেন। সেই যুগের সাংস্কৃতিক বিনোদন উপভোগ করবেন।

মোট কথা নিজেকে মনে হবে প্রাচীন চীনের একজন রাজকীয় ব্যক্তি। এই মজার অভিজ্ঞতা নিতে পর্যটকরা ভিড় করছেন এই পর্যটন স্থানে।

এখানকার সুভ্যেনির দোকানগুলোতেও এখন রমরমা ব্যবসা চলছে। কারণ পর্যটকরা এসব দোকান থেকে পছন্দসই সুভ্যেনির কিনছেন ব্যাপক হারে। প্রাচীন চীনের জীবন অনুভব করতে চাইলে তাই চমৎকার গন্তব্য হচ্ছে থোংসিয়াং সিটির ফুইউয়ান এনসিয়েন্ট টাউন।

প্রতিবেদন- শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা- আফরিন মিম

ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও প্রযোজনা - আফরিন মিম

অডিও সম্পাদনা- রফিক বিপুল

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী