নতুন যুগে চীনের সংস্কার-পরিকল্পনা: সর্বোত্তম লক্ষ্য অর্জনের জন্য সবচেয়ে কঠিন সমস্যা সমাধান করতে হবে
2024-07-12 15:31:56

মুক্তা: বন্ধুরা, সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ হলো চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র দেশ-প্রশাসনের একটি মৌলিক নীতি। ১৯৭৮ সালে আয়োজিত সিপিসি’র একাদশ কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে, চীনের তত্কালীন শীর্ষনেতা তেং সিয়াও পিং, এ নীতি উত্থাপন করেন। আর, ২০১৩ সালে সিপিসি’র অষ্টাদশ কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ নীতির সম্প্রসারণ ঘটান। চলতি বছর, সিপিসি’র কুড়িতম কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের প্রাক্কালে, আমরা আপনাদেরকে নতুন যুগে চীনের সংস্কারনীতি ও এর বাস্তবায়ন সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে অবহিত করবো। 

(সংগীত)

মুক্তা: আজকের আলোচনা শুরু করছি দুটি আলপাইন গাছের গল্প দিয়ে।  

আলিম: হ্যাঁ, আলপাইন ডুমুর দক্ষিণ চীনের একটি সাধারণ গাছের প্রজাতি। তবে, গাছটির শক্তিশালী জীবনীশক্তি আছে। এটি খরা ও বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধী। এর চারা রোপণ করা ও এর যত্ন নেওয়া সহজ। তাই, এ গাছ সমৃদ্ধি ও কল্যাণের প্রতীক। পূর্ব চীনের একটি উপকূলীয় শহর শেনচেনে দুটি আলপাইন ডুমুর গাছ নিয়ে আছে চমত্কার গল্প। 

মুক্তা: ১৯৯২ সালের জানুয়ারিতে তেং সিয়াও পিং শেনচেন পরিদর্শনের সময় সেই দুটি গাছের একটি রোপণ করেছিলেন। তেং সিয়াও পিংকে ‘চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের প্রবক্তা’ বলা হয়। তিনি চীনে প্রথম যুগসৃষ্টিকারী সংস্কারের সূচনা করেন। ১৯৭৯ সালে তেং সিয়াও পিং শেনচেন শহরকে চীনের ‘প্রথম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ হিসেবেও ঘোষণা করেন। এর পর, মাত্র ৩০ বছরে, এই শহরটি ৩ হাজারেরও কম বাসিন্দার একটি ছোট নানহাই নগর থেকে, প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার একটি বিশ্বমানের আধুনিক মহানগরে পরিণত হয়। ২৪.৮ শতাংশ গড় বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে, এ শহর ‘শেনচেন মিরাকল’ সৃষ্টি করেছে; বিশ্বকে করে অবাক। 

আলিম: ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর কুয়াংতং পরিদর্শনের সময়, চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও সিপিসি’র সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং, শেনচেনে দ্বিতীয় আলপাইন ডুমুর গাছটি রোপণ করেন। সেই দিন শি চিন পিং তেং সিয়াও পিংয়ের ব্রোঞ্জ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তিনি গভীর আন্তরিকতার সাথে, তিন বার মাথা নুইয়ে, তেং সিয়াও পিংয়ের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত ছিল সমসাময়িক চীনের ভাগ্য পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি।’ তিনি সিপিসি তথা দেশকে নতুন যুগে অবিরাম সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন।  

(রে ১)

আলিম: সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক। ভবিষ্যতে আমাদের এ পথে চলা অব্যাহত রাখতে হবে। এটি একটি দেশ ও জনগণকে সমৃদ্ধ করার পথ। 

মুক্তা: বর্তমান বিশ্ব অভূতপূর্ব পরিবর্তনের মুখোমুখি। নতুন দফায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং শিল্পের সংস্কারকাজ উন্নত হচ্ছে। পাশাপাশি, বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদ ও ‘বিশ্বায়ন বিরোধী’ প্রবণতাও বাড়ছে।

আলিম: দেশী ও বিদেশী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সি চিন পিং, ২০১৩ সালে, চীনে সংস্কার প্রক্রিয়া গভীরতর করার ধারণা প্রকাশ করেন এবং এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেন।

 (রে ২)

আলিম: চীনের সংস্কার কার্যক্রম একটি 'কঠিন সময়' এবং 'গভীর জলে' প্রবেশ করেছে। বর্তমানে সংস্কারকাজের ক্ষেত্রে যে-সমস্যাগুলো সমাধান করা দরকার, সেগুলো বিশেষভাবে কঠিন।

মুক্তা: ২০১৮ সালে সি চিন পিং, সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো, সিপিসি ও দেশের বিভিন্ন সংস্থার ভিতরে সংস্কারকাজ শুরু করেন। এটি সার্বিকভাবে সংস্কার গভীরতর করার জন্য সাংগঠনিক নিশ্চয়তা দেয়।  

আলিম: চলতি বছর, সিপিসি’র কুড়িতম কেন্দ্রীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের আগে, সি চিন পিং শিল্পপতিদের সঙ্গে আলোচনাসভায় চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন এবং একাধিক সংস্কার-পরিকল্পনা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সংস্কার ব্যাপকভাবে গভীরতর করার সাথে চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

মুক্তা: নতুন যুগের একজন নেতা হিসেবে, সি চিন পিং রাষ্ট্রশাসনের সামগ্রিক কৌশলে ব্যাপকভাবে সংস্কার কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তিনি ব্যাপক ও মৌলিক সংস্কারের কথা বলেন; তিনি বিশ্বাস করেন, আংশিক নয়, বরং সার্বিক সংস্কার দেশ ও জাতির জন্য অপরিহার্য ও কল্যাণকর। (ছাই/আলিম)