জুলাই ৯: পয়লা জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মার্কিন যুব-বিনিময় দলের কাছে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। এবারের চীন সফরের মাধ্যমে মার্কিন যুবকরা চীনকে উপলব্ধি করে, চীনা যুবকদের সঙ্গে নানা বিষয়ে বিনিময় করে ভাল অংশীদার ও ভাল বন্ধু হয়ে উঠবে।
গত কয়েকদিনে, এবারের বিনিময়দলে অংশগ্রহণকারী সদস্য এবং দু’দেশের বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিরা বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্টের বার্তার মধ্য দিয়ে চীন ও মার্কিন জনগণের বন্ধুত্ব এবং যুবকদের বিনিময়ের ওপর তাঁর গুরুত্বারোপ এবং সক্রিয় সমর্থন প্রতিফলিত হয়েছে। দু’দেশের যুবকদের উচিত এবারের মূল্যবান সুযোগ কাজে লাগিয়ে গভীরভাবে বিনিময় করে মৈত্রী স্থাপন করা, যাতে চীন ও মার্কিন জনগণের বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে যুব সম্প্রদায় আরো অবদান রাখতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ৭টি রাজ্যের ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯০ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী নিয়ে গঠিত একটি মার্কিন ‘যুব পিয়ার’ বিনিময়দল চীন সফর করেছে। তারা একের পর এক বেইজিং, শিচিয়াচুয়াং, ফুচৌ এবং হাংচৌ পরিদর্শন করেছে, পথে স্থানীয় চীনা শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করে, স্থানীয় শহরের বৈশিষ্ট্যযুক্ত সংস্কৃতি অনুভব করে এবং প্রাচীন সভ্যতার আধুনিক নাড়ি উপলব্ধি করে মার্কিন যুব প্রতিনিধিদল।
ওয়াশিংটন রাজ্যের লিংকন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জ্যাকব মেন্ডোজা বলেছেন, “আমি একটি উষ্ণ অভ্যর্থনা অনুভব করেছি’। প্রেসিডেন্ট সি’র বার্তা আমাকে উজ্জীবিত করেছে। আমি একজন ‘চীন অনুরাগী’, এবারের যাত্রার মাধ্যমে আমি চীনকে আরও অনুসন্ধান করেছি, উপলব্ধি করেছি এবং চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে আমার চেতনা আরও গভীরতর হয়েছে।”
লিংকন উচ্চ বিদ্যালয়ের সংগীত শিক্ষক লিন আইজেনহাউয়ার, পঞ্চমবারের মতো ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে চীনে এসেছেন। প্রেসিডেন্ট সি’র বার্তায়, ‘ভবিষ্যত তরুণদের ওপর নির্ভর করে’- এই কথার ভূয়সী প্রশংসা করেন এই মার্কিন শিক্ষক। তিনি বলেন, যারা মার্কিন-চীন সম্পর্কের বন্ধুত্বপূর্ণ বিকাশের আশা করেন, তারা জানেন, ভবিষ্যৎ দু’দেশের তরুণ প্রজন্মের বোঝাপড়ার ওপর নির্ভর করে। দু’দেশের শিক্ষার্থীরা একে অপরের কাছ থেকে শিখেছে এবং এই ভ্রমণের মাধ্যমে গভীর বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে।
হ্য পেই প্রদেশের শিচুয়াচুয়াং বিদেশী ভাষা বিদ্যালয়ে, বিনিময়দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে একটি ‘ভবিষ্যৎ নিয়ে যৌথভাবে কথা বলা’ শীর্ষক সংলাপ করেছেন। প্রতি পাঁচ বা ছয় জন মার্কিন শিক্ষার্থী এবং চীনা শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে গঠিত গ্রুপগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেছে।
ফুচিয়ান প্রদেশের ফু চৌ শহরের তৃতীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মার্কিন ও চীনা শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে চীনা চিত্রকর্ম, কাগজ কাটা এবং ক্যালিগ্রাফির অভিজ্ঞতা অর্জন করে। ওয়াশিংটনের টাকোমাতে পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী লিয়াম তার চীনা বন্ধু চেং ছিয়ানের সাহায্যে প্রথমবারের মতো ব্রাশ দিয়ে তার নিজের চীনা নাম লেখার চেষ্টা করেছেন।
বিদ্যালয়ের বাইরেও চীন সম্পর্কে উপলব্ধি করার আরেকটি শ্রেণিকক্ষ: বেইজিংয়ে ‘চুইয়ুংকুয়ান’ মহাপ্রাচীর আরোহণ করা, রাজকীয় প্রাসাদ পরিদর্শন করা এবং বেইজিংয়ের কেন্দ্রীয় অক্ষরেখা দিয়ে সাইকেলে চড়া; শিচিয়াচুয়াংয়ে চীনা এবং মার্কিন কিশোর-কিশোরীদের হাত ধরে একটি রক মিউজিক ফেস্টিভালে একসাথে গান গাওয়া; ফুচৌতে, কুলিংয়ের গল্পগুলোর ইতিহাস ও উত্তরাধিকার শোনা; হাংচৌতে পশ্চিম হ্রদে নৌকা চালিয়ে চীনের পাহাড় ও জলকে অনুভব করা; এবং অবশেষে শাংহাইয়েঅনুসন্ধানকাজ আরও সমৃদ্ধ করার প্রত্যাশায় রয়েছে বিনিময়দল।
মার্কিন যুবকরা চীনা শিক্ষার্থীদের সাথে একসঙ্গে যাত্রা করে বহু চ্যানেলের মাধ্যমে চীনের প্রাচীন সভ্যতা এবং আধুনিক বিকাশের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এই প্রক্রিয়ায় বন্ধুত্বের বীজ অঙ্কুরিত হয়।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, এবারের মার্কিন যুব-বিনিময়দল চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে আরও বেশি বন্ধুত্বের সেতু স্থাপন করবে, যাতে দু’দেশের জনগণের মৈত্রীকে এগিয়ে নিতে নিজেদের অবদান রাখতে পারে। (ওয়াং হাইমান/হাশিম/ছাই)