জুলাই ৪: ১৫ জুলাই থেকে, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স বেইজিং তাসিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত একটি নতুন সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে। রুটে চলবে এয়ারবাস এ৩২১ বিমান। প্রতি সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট থাকবে; সোমবার ও শনিবার। এর মধ্যে, বেইজিং থেকে ঢাকার ফ্লাইট নম্বর হবে ‘সি জেড ৮০০৯’, প্রস্থানের সময় হবে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিট, এবং ফ্লাইটের সময়কাল হবে প্রায় ৫ ঘন্টা ২০ মিনিট। আর, ঢাকা থেকে বেইজিংগামী ফ্লাইট নম্বর হবে ‘সি জেড ৮০১০’, যার প্রস্থানের সময় হবে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিট, এবং ফ্লাইটের মোট সময়কাল প্রায় ৫ ঘন্টা ৫ মিনিট।
পয়লা জুলাই, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের ঢাকা-বেইজিং রুটের এক প্রচার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল প্রশাসন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, অল-বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমার্স এবং অন্যান্য বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অনুষ্ঠানে বলেন, চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক অব্যাহতভাবে সামনে এগিয়ে চলেছে। দুই দেশের মধ্যে ঘন ঘন কর্মী বিনিময়, ফলপ্রসূ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা, এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় চলছে। চীন ও বাংলাদেশের রাজধানীদ্বয়ের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে, দু’দেশের মধ্যে বিমান চলাচলের নেটওয়ার্ক আরও উন্নত হবে, দু’দেশের মধ্যে কর্মীবিনিময় সহজতর হবে, দু’দেশের মধ্যে মানুষে-মানুষে বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে, এবং দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও উন্নত হবে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আশা প্রকাশ করেন যে, চীন ও বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি লোক উভয় দিকে ভ্রমণ করবেন ও ব্যবসার সুযোগ সন্ধান করবেন এবং আরও বেশি চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। পাশাপাশি, তিনি দু’দেশের জনগণকে ঘন ঘন একে অন্যের দেশ ভ্রমণ করতে এবং চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ জনমতের ভিত্তিকে সুসংহত করতে উত্সাহিত করেন। তিনি চীনে বিদেশীদের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক ও সুবিধাজনক ভ্রমণ-পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দেন।
বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদার এবং সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বন্ধু। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে চীন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, দু’দেশের মধ্যে মানবিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় ক্রমাগত গভীর হয়েছে, এবং চীনে ভ্রমণ, বিদেশে অধ্যয়ন এবং ব্যবসা করার জন্য বাংলাদেশিদের উত্সাহ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকা-বেইজিং সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে দু’দেশের মধ্যে অর্থনীতি, বাণিজ্য, পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে বিনিময় আরও প্রসারিত হবে। বাংলাদেশ চীনের সাথে অর্থনীতি, বাণিজ্য, মানবিক, শিক্ষা, পর্যটন, ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর করার আশা করে, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বৃহত্তর উন্নয়ন সম্ভব হয়।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত এবং চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে যোগদানকারী প্রথম দক্ষিণ এশীয় দেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৫ সালে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী পালিত হবে। এ প্রেক্ষাপটে, দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার নতুন নতুন সম্ভাবনাও সৃষ্টি হচ্ছে। (জিনিয়া/আলিম/ফেই)