‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৭৭
2024-07-03 16:59:51

‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।

 

৭৭ তম পর্বে যা যা থাকছে:

১. নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষার দুই তরুণ শিক্ষক যা বললেন  

২. দ্বিতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড আন্তর্জাতিক দক্ষতা প্রতিযোগিতা

 

১.  নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষার দুই তরুণ শিক্ষক যা বললেন  

বাংলাদেশের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের চীনা দুই তরুণ শিক্ষক লি চিং এবং লিউ সুয়ান। সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপের ঢাকা ব্যুরোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।  বাংলাদেশের মানুষ, খাবার ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তারা। এসময় তরুণ শিক্ষক হিসেবে তাদের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন তারা।  

প্রশ্নঃ আপনারা বাংলাদেশে কতদিন ধরে আছেন?

লিউ সুয়ানঃ ‘আমরা এখানে গতবছরের জুলাইয়ে এসেছি। প্রায় একবছর হয়ে গেছে।‘

লি চিংঃ ‘সময় খুব দ্রুত চলে যায়। আমার মনে পড়ছে যেদিন আমি প্রথম এখানে এসছিলাম। আমি অনেকবার ভেবেছি, বাংলাদেশ কেমন হবে? আমি যখন বিমান থেকে দেখছিলাম, বাহ! বাংলাদেশ তো খুব সুন্দর। অনেক নদী আছে। অনেক ভবন আছে। জনবহুল একটি দেশ বাংলাদেশ।     

বাংলাদেশে খুব দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। এখানে অনেক তরুণ জনশক্তি আছে। তারা খুব পরিশ্রম করে দেশের উন্নয়নে। প্রত্যেকেই নিজের জীবনের উন্নতির জন্য প্রচণ্ড পরিশ্রম করে।‘ 

 

লিউ সুয়ানঃ ‘আমি একটু ভিন্নভাবে দেখি। আমি এখানকার মানুষের মনমানসিকতা পছন্দ করি। আমার মনে হয়, তোমরা জানো কীভাবে জীবনটাকে উপভোগ করা যায়।‘ 

লি চিংঃ ‘হ্যাঁ এটা একটা ভালো বিষয়। তারা আসলেই জানে কীভাবে জীবনটা উপভোগ করা যায়। তারা তাদের কাজ এবং জীবনকে আলাদা করে দেখে। কাজের সময় শুধুই আমার কাজ এবং কাজের পর জীবনটা উপভোগ করছি। এটা অনেক ভালো একটি ব্যাপার।‘

প্রশ্নঃ আপনারা যদি আমাদের সঙ্গে এখানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

লিউ সুয়ানঃ ‘আমি আসলে আমার অভিজ্ঞতা না, অনুভূতিটা শেয়ার করবো। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বয়সই ১৮ বছরের উপরে। তারা চীনা কোম্পানিতে চাকরি করে। তারা এখানে কেন এসেছে জিজ্ঞেস করলে বলে, বেতন এবং পদবীর উন্নয়নের জন্য তারা চীনা ভাষা শিখতে এসেছে। তখন আমার কাছে মনে হয়, আমার চাকরি অর্থবহ। কারণ অনেক ছাত্রকে এটি সহযোগিতা করে।‘

 

লি চিংঃ ‘আমার স্টুডেন্টদেরও চাকরি আছে। এরপরেও তারা রাতে এসে চীনা ভাষা শেখে। তারা অনেক লম্বা সময় ধরে কাজ করে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম তারা বেশিভাগই খুব ভোরে মানে ৬টায় ঘুম থেকে ওঠে। আমাদের ক্লাস বেশিভাগ সময় সন্ধ্যা ৬:৩০ থেকে শুরু হয় রাত ৮টা পর্যন্ত চলে। তো তারা সারাদিন এতো লম্বা সময় কাজ করে তবুও এখানে এসে পড়াশোনা করছে। আমি তাদের নিয়ে গর্ব করি।‘

‘মানুষ বলে ভাষা একজন আরেকজনকে ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে, তাই আমি মনে করি প্রত্যেককে বুঝার জন্য এটি একটি মাধ্যম। বাংলাদেশ চীন সম্পর্ক এভাবে অনেক উন্নত হবে।‘    

 

সাক্ষাৎকারগ্রহণ : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

 

২. দ্বিতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড আন্তর্জাতিক দক্ষতা প্রতিযোগিতা

 

সম্প্রতি দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ছৌংছিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দ্বিতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড আন্তর্জাতিক দক্ষতা প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশ থেকে ১৯০ জন প্রতিভাবান তরুণ তাদের পেশাগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনী প্রদর্শন করেন। অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগিদের গড় বয়স ছিল বাইশ বছর।  

 

একষট্টি’টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৬০০ জন দক্ষ পেশাদার তরুণ এই প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়। মেধাবী যুবকদের যোগাযোগ, দক্ষতা বিনিময় এবং কারিগরি দক্ষতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতার প্রচারের মাধ্যমে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা এই ইভেন্টের লক্ষ্য ছিল। 

এই বছরের প্রতিযোগিতায় অর্ধেকেরও বেশি নতুন মানের উৎপাদনশীল পণ্য এবং  স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও রোবট অপারেটিং সিস্টেমকে  অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রতিযোগিদের মধ্যে পঁচানব্বই শতাংশ প্রতিযোগির বয়স ছিল ত্রিশ বছরের বেশি এবং চল্লিশ শতাংশ প্রতিযোগির বয়স ছিলো বিশ বছরেরও কম।  

রোবট অপরেটিং সিস্টেম  ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী সর্বকনিষ্ঠ প্রতিযোগী পনের বছর বয়সী ট্যুমেলু লেসুথো। তার বয়স কম হলেও তিনি ব্যতিক্রমী দক্ষতা দেখিয়ে সবাইকে তাক করে দেন।

অংশগ্রহণকারী তরুণরা জানান, "আমি অনুভব করছি যে  ইতিমধ্যেই আমি অভিজ্ঞতা অর্জন করছি। এটি আমার জন্য ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো করার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলবে"  

রোবট অপারেটিং সিস্টেমটি মেকানিক্স, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমেশন, প্রোগ্রামিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে প্রতিযোগিদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ হিসেবে তৈরি করবে।  

ইয়াং রোংচিন , শিল্প রোবট সিস্টেম অপারেশন ইভেন্ট প্রধান বিচারক

"প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে দেখা যায় প্রতিযোগীরা প্রায় চল্লিশ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়। এই ধরনের পারফরম্যান্স বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের অংশগ্রহণকারীদের সর্বোচ্চ কৃতিত্বের প্রমাণ"

এই বছর প্রতিযোগিতায় বুদ্ধিমান অটোমোবাইল সফ্টওয়্যার প্রযুক্তিসহ ছয়টি ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা অংশগ্রহণকারীদের নতুন প্রযুক্তির যানবাহন শিল্পের ভবিষ্যত দিক সম্পর্কে ধারণা দেয়।

 

চীনে ২০০ মিলিয়নেরও বেশি দক্ষ শ্রমিক রয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় তারা সহযোগিতা আরও গভীর করতে বেল্ট অ্যান্ড রোড অংশীদার দেশগুলোর অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

 

 

 

প্রতিবেদক : রফিক বিপুল

সম্পাদক: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

 

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

  

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী 

অডিও সম্পাদনা:  রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী