‘ঘুরে বেড়াই’ পর্ব- ৭৭
2024-07-02 18:27:10

এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে

১। ওল্ড সামার প্যালেস: অনন্য সৌন্দর্যময় স্থান

২। পৃথিবীর প্রথম ‘ফ্রোজেন’ওয়ার্ল্ড, কী আছে এতে  

৩। টুকরো খবর-

 

·        এই গ্রীষ্মে নতুন চমক দেখাচ্ছে শাংহাই ডিজনি রিসোর্ট

·        ছিংহাই প্রদেশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ বুলেগেরিয়ার পর্যটকরা

 

বিশ্বব্যাপী অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রেখেছে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। কতো-শতো দেশ, কতো সংস্কৃতি, কতো ভাষা, কতো পেশা,.... কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা সময়ের টানাটানিতে দেখা হয় না, ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’

‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু...’সেই অদেখাকে দেখাতেই আমাদের আয়োজন "ঘুরে বেড়াই"।

দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান, সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান ‘ঘুরে বেড়াই’।

ঘুড়ে বেড়াই অনুষ্ঠানের ৭৭তম পর্ব আজ। আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি, আফরিন মিম।

 

১। ওল্ড সামার প্যালেস: অনন্য সৌন্দর্যময় স্থান

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে রয়েছে অনেক দৃষ্টিনন্দন পার্ক। এই মহানগরীর অন্যতম বিখ্যাত পার্ক হলো ওল্ড সামার প্যালেস পার্ক। হাইডিয়ান জেলায় পিকিং ইউনিভারসিটির কাছেই অবস্থিত এই পার্ক ।

এর আরেক নাম ইয়ুয়ানমিং ইয়ুয়ান। এর অর্থ হলো প্রকৃত উজ্জ্বলতার বাগান। এটিকে বলা হতো একসময় ইমপেরিয়াল গার্ডেন বা রাজকীয় উদ্যান। বিশাল উদ্যানটি বাগান, জলাশয়, বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন ঐতিহাসিক স্থাপনায় পরিপূর্ণ।

জলাশয়গুলোর উপরে রয়েছে কারুকার্যকরা অনেকগুলো সেতু। এই পার্কের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। ১৭০৭ সালে প্রথম এই পার্ক নির্মাণ শুরু হয়। ছিং রাজবংশের সময়ে গড়ে ওঠা এই পার্ক সম্রাট খাংসি এটি নির্মাণ করেন। এটি ছিল সম্রাটের চতুর্থ পুত্র রাজকুমার ইয়ংয়ের জন্য উপহার। পরে রাজকুমার ইয়ংচ্যং সম্রাট হন এবং এই পার্কটিকে আরও সম্প্রসারণ করেন। এখানে তিনি বেশ কিছু ভবন নির্মাণ করেন।

সম্রাট ইয়ংচ্যং এখানে ফোয়ারা, পুকুর, লেকসহ ২৮টি দৃষ্টিনন্দন স্পট নির্মাণ করেন। ছিয়ানলং সম্রাটের সময়ও এখানে বেশ কিছু নির্মাণ কাজ হয় ফলে উদ্যানটি আরও সুন্দর হয়ে ওঠে।

১৮৬০ সালে দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধের সময় ফরাসি ও ব্রিটিশ সেনারা এখানে লুটতরাজ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এখান থেকে লুটকরা জেড পাথরের ভাস্কর্য, সিল্ক, স্বর্ণ ও মূল্যবান শিল্প সামগ্রী বিশ্বের অনেক দেশের জাদুঘরে রয়েছে। পরবর্তিকালে এই উদ্যানের অনেক সংস্কার কাজ হয় এবং এটিকে দৃষ্টিনন্দন পার্কে পরিণত করা হয়।

পুরো উদ্যানটি ঘুরে দেখতে সারাদিন লেগে যেতে পারে। পর্যটকরা এখানে দেখতে পাবেন চমৎকার কিছু ভাস্কর্য, স্থাপনা এবং লেকের জলে পদ্মফুলের শোভা। একটি গোলাকার দীঘি রয়েছে যা পদ্মফুলে ভরা। পাথরের সেতুগুলো অসাধারণ সুন্দর কারুকাজ করা। এই পার্ক ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় রয়েছে।

গ্রীষ্মকালে এই উদ্যানে বেড়াতে সবচেয়ে আরাম। গাছপালার জন্য উদ্যানটির পরিবেশ অনেক শীতল। জলাশয়ে রঙিন মাছের খেলা দেখতেও ভালো লাগবে। ইয়ুয়ানমিং ইয়ুয়ান সাবওয়ে স্টেশন থেকে এটি পাঁচমিনিটের হাঁটা পথ।

প্রতিবেদন- শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা-আফরিন মিম

কণ্ঠ- হোসনে মোবারক সৌরভ

 

২। পৃথিবীর প্রথম ‘ফ্রোজেন’ওয়ার্ল্ড, কী আছে এতে  

 

ওয়ার্ল্ড অব ফ্রোজেন। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এটি এমন এক স্থান—যেখানে জমে যেতে হবে ঠান্ডায়। শীতের এই রাজ্যেই থাকবে রূপকথার রানি এলসার বরফ প্রাসাদ। ডেনিশ রূপকথা ‘দ্য স্নো কুইন’ অবলম্বনে নির্মিত ডিজনির অ্যানিমেশন ফিল্ম ‘ফ্রোজেন’-এ এলসার চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সিনেমার পর্দায় দেখা ফ্রোজেন ল্যান্ড এখন বাস্তবেই তৈরি করেছে ওয়াল্ট ডিজনি। 

চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে অবস্থিত ডিজনিল্যান্ডের ভেতরেই নির্মিত হয়েছে ফ্রোজেন ল্যান্ড। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রিসোর্টগুলোতে ৬০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার অংশ হিসেবে তৈরি হয়েছে এই বরফ রাজ্য। 

২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এই ফ্রোজেন ওয়ার্ল্ড।  এলসার বরফ প্রাসাদ ছাড়াও এই নগরীতে আছে দুটি রাইড। এর মধ্যে একটি রাইডে আছে নৌকা ভ্রমণ। সিনেমায় ব্যবহৃত মিউজিকের মাধ্যমে এই ভ্রমণে উইন্টার ওয়ান্ডারল্যান্ডের অনুভূতি পাবেন দর্শনার্থীরা। অন্য রাইডটি মূলত বরফের ওপর দিয়ে একটি রোলার কোস্টার ভ্রমণ।

রূপকথার রাজ্যে ঘোড়া কিংবা রেইনডিয়ারের সাহায্যে যেসব স্লেজ গাড়ির বর্ণনা পাওয়া যায় তথা ফ্রোজেন সিনেমায় আমরা যে ধরনের স্লেজ দেখি সেই ধরনের বাহনই আছে দ্বিতীয় রাইডে। 

বরফ রাজ্যে দর্শনার্থীদের জন্য যথারীতি একটি রেস্তোরাঁও আছে। এই রেস্তোরাঁয় মূলত নর্ডিক বা শীতপ্রধান স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলগুলোর খাবার সরবরাহ করা হয়। 

এই নতুন বরফ রাজ্যে আবারও জমজমাট হয়ে উঠছে হংকং ডিজনি। এই পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিচেল মরিয়ার্টি বলেন, ‘বিপুল জনপ্রিয় এই থিম (বরফ রাজ্য) বিশ্বজুড়ে হংকং ডিজনিল্যান্ডের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

হংকং ছাড়াও বিভিন্ন দেশে থাকা ডিজনিল্যান্ডগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ১০ বছর ধরে পার্কগুলোতে ৬০ বিলিয়ন ডলার খরচ করবে তারা।

প্রতিবেদন- আফরিন মিম

সম্পাদনা-  ফয়সল আবদুল্লাহ

কণ্ঠ- আফরিন মিম

 

 

৩। টুকরো খবর-

 

·        এই গ্রীষ্মে নতুন চমক দেখাচ্ছে শাংহাই ডিজনি রিসোর্ট

 

নতুন চমক নিয়ে এসেছে শাংহাই ডিজনি রিসোর্ট। এই গ্রীষ্মে তারা নতুন দুটি ডিজনি ক্যারেকটার এনেছে। পাশাপাশি গ্রীষ্মের মৌসুমি খাদ্য ও পানীয়ের নতুন আইটেমও এনেছে তারা।

 

 

পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিওর টয় স্টোরি থেকে এসেছে নতুন চরিত্র পার্টি সোরাস রেক্স। অন্যদিকে লিলো অ্যান্ড স্টিচ ছবিতে স্টিচের গোলাপি বন্ধু অ্যাঞ্জেলকেও এনেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। মিকি, ডাফিসহ অন্য বন্ধুরা গ্রীষ্মের নতুন পোশাক পেয়েছে। তাদের পোশাকে ফুল ও ফলের মোটিফ দর্শকদের আনন্দ দিচ্ছে।

 

 

নতুন বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ডিজনি রিসোর্টের প্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মিকি ও ডাফি। শুধু তাদের নতুন পোশাক পরানোতেই গ্রীষ্মের আয়োজন শেষ হয়ে যাবে না। পুরো পার্ককেই গ্রীষ্মের উপযোগী সাজে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

পরিবর্তন এসেছে গেম আইটেম ও রেস্টুরেন্ট মেন্যুতে। অন্যদিকে আয়োজিত হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন নানা রকম ইভেন্ট।

 

প্রতিবেদন- শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা-আফরিন মিম

কণ্ঠ- শাহান শাহ রাসেল

 

·        ছিংহাই প্রদেশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ বুলেগেরিয়ার পর্যটকরা

 

ছিংহাই প্রদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং স্থানীয়দের জীবনধারায় মুগ্ধ মধ্য ইউরোপীয় দেশ বুলগেরিয়ার একদল পর্যটক। শুক্রবার চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ছিংহাই প্রদেশ ভ্রমণে এসেছেন তারা। পর্যটকদের স্বাগত জানায় প্রদেশটির একটি প্রতিনিধিদল।

 

 

পর্যটকরা সোফিয়ার চায়না কালচারাল সেন্টারে আয়োজিত প্রচার সম্মেলনে একটি ফটো প্রদর্শনী, সূচিকর্মের মতো অনন্য স্থানীয় পণ্যের প্রদর্শনী এবং ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ সম্পর্কে ধারণা পায়।

 

বুলগেরিয়া ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোডের চেয়ারম্যান জাহারি জাহারিয়েভ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘যখন আমরা বন্ধুত্বের কথা বলি, তখন পর্যটনের ভূমিকা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।’

 

তিনি বলেন, বুলগেরিয়ানদের সঙ্গে চীনাদের সরাসরি সংযোগ, বুলগেরিয়ান অঞ্চল এবং শহরগুলোর সঙ্গে চীনের অঞ্চল ও শহরগুলোর জানাশোনা আরও বাড়বে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

 

বুলগেরিয়ার চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক পরামর্শদাতা কুয়ান সিন বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে আশা করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বুলগেরিয়ানরা ছিংহাইয়ের সংস্কৃতি ও পর্যটন সম্পর্কে আরও জানতে পারছে।’

 

 

ছিংহাই প্রদেশ তিব্বত মালভূমিতে অবস্থিত একটি প্রদেশ। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চল এটি। পাশাপাশি এ অঞ্চলের রয়েছে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। কুনলুন পর্বতমালা এবং সানচিয়াংইউয়ান ন্যাশনাল পার্ক এই প্রদেশের বিখ্যাত পর্যটন গন্তব্য।

 

প্রতিবেদন- আফরিন মিম

সম্পাদনা- ফয়সল আবদুল্লাহ

কণ্ঠ- শুভ আনোয়ার

 

ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও প্রযোজনা - আফরিন মিম

অডিও সম্পাদনা- রফিক বিপুল

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী