জুন ২৪: সম্প্রতি চীনে আসা বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। অনলাইন ও অফলাইনে চীনা ভ্রমণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চীনা ভ্রমণ সম্পর্কিত ভিডিও ও লাইভস্ট্রিমিং ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বিশেষ করে, চীনা খাবারগুলো বিদেশি পর্যটকদেরকে অনেক আকর্ষণ করছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি এ বিষয়টি তুলে ধরবো।
চীনে একটি কথা আছে, ‘দেখে বিশ্বাস করা যায়।’ একটি দেশ জানার উপায় হল সেদেশে যাওয়া। আসলে চীনে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অনেক বিদেশির জন্য কুসংস্কার ভাঙার একটি যাত্রায় পরিণত হয়েছে। ‘বৈপরীত্যের অনুভূতি’ হল অনেক বিদেশি পর্যটক চীনের মহান নদী ও পাহাড় উপভোগ করার সবচেয়ে দারুণ অনুভূতি। অস্ট্রেলিয়ার ব্লগার জোসি চীনে ভ্রমণ করার পর বলেন, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, সংবাদ প্রতিবেদন থেকে চীন সম্পর্কে আমার আগের উপলব্ধি ‘খুব সংকীর্ণ’ ছিল। তাঁর ভিডিওগুলোতে চীনে ভ্রমণ করেছেন বা বসবাস করেছেন- এমন বিপুল সংখ্যক বিদেশির মন্তব্য দেখা যায়। কোন কোন ফোলোয়ার বলেন, যতক্ষণ চীনে থাকি, ততক্ষণ বুঝতে পারি, পশ্চিমা দেশগুলোর চীন সম্পর্কে খবরগুলো কত হাস্যকর।
অধিক থেকে অধিকতর বিদেশি মানুষ চীনে এসেছেন। তাঁরা চীনা শহরগুলোর দৃশ্য ও সংস্কৃতি অনুসন্ধান করতে চান। ভারতের ব্লগার ট্র্যাভেল ওয়িথ একে (Travel with AK) সিনচিয়াংয়ে ভ্রমণ করেছেন। তিনি উরুমুছির পরিচ্ছন্নতা ও উন্নয়ন দেখে হতবাক হয়ে গেছেন। হুনান প্রদেশের চাংচিয়াচিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ান মানুষের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এমন কি, দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি কথা আছে, আপনার পিতামাতার প্রতি অনুগত হতে চাইলে, তাদের চাংচিয়াচিয়ে ভ্রমণে পাঠান। বিভিন্ন দেশের ভ্রমণ ব্লগারের চীনা ভ্রমণের ভিডিওগুলো বিদেশে সামাজিক মাধ্যমে সহজেই লক্ষ লক্ষ রিচ পায়।
মজার ব্যাপার হলো, বিদেশিদের চীন ভ্রমণের ভিডিওগুলোর মাধ্যমে চীনা মানুষও পুনরায় নিজের দেশের সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারেন। ইরাকের খাবার ব্লগার আহমেদ জব্বার চীনের শান্তিতে ঈর্ষান্বিত। এ বছরের বসন্ত উত্সবের সময় হঠাৎ আতশবাজির শব্দে তার মনে হলো যে- যুদ্ধ শুরু হয়েছে। চীনা ফোলোয়ার নিজের দেশের কষ্টার্জিত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিলাপ করেন। ব্রিটিশ ব্লগার হাচিনসনের পরিবারের পাঁচ সদস্য ভোর পাঁচটায় চীনের সড়কে হাঁটাহাঁটি করেন। তাঁরা শান্ত ও পরিষ্কার রাস্তা দেখে বিস্মিত হন। চীনা নেটিজেনদের বিভ্রান্তি দেখে তাঁরা বলেন, আমি জানি না শুক্রবার ভোরের প্রথম প্রহরে বিশ্বের কয়টি স্থান এতটা শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ হতে পারে।
বিদেশি পর্যটকরা বিশ্বের কাছে একটি নিরাপদ, আধুনিক, শান্ত, পরিচ্ছন্ন, সুস্বাদু, উষ্ণ ও দয়ালু চীন তুলে ধরেন।
পরিসংখ্যানে বলা হয়, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় চীনে আসা বিদেশিদের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। মোট ৪.৬৬ লাখ বিদেশি ভিসা দেওয়া হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১৮.৮ শতাংশ বেশি। ১৯৮৮ মিলিয়ন বিদেশি ভিসা ছাড়াই চীনে প্রবেশ করেছে; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬৬.১ শতাংশ বেশি। যেহেতু চীন ভিসা নীতি সহজ ও উন্নত করার পাশাপাশি চীন ও বিদেশের কর্মী বিনিময়ের সুবিধাজনক ব্যবস্থা চালু করেছে। চীন ভ্রমণের মাধ্যমে বিশ্বে একটি বিশ্বাসযোগ্য, সুন্দর ও সম্মানজনক চীন তুলে ধরা হয়েছে।
(ছাই/তৌহিদ/ওয়াং হাইমান)