উগান্ডার জন্য চীনা প্রতিষ্ঠানের ‘সবুজ তেলক্ষেত’ তৈরি করছে চীনা প্রতিষ্ঠান
2024-06-18 13:54:04

লেক আলবার্ট পশ্চিম উগান্ডার সীমান্তে অবস্থিত। এটি আফ্রিকার সপ্তম বড় লেক। লেক থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি নীল-সাদা, উঁচু ড্রিলিং ডেরিক সবার নজর কাড়ে। ড্রিলিংয়ের কাজ চলছে, তবে কর্কশ কোনো শব্দ শোনা যায় না। সেখানে শুধু বাতাস, পানি ও পাখির শব্দ শোনা যায়।

        চায়না ন্যাশনাল অফশোর অয়েল কর্পোরেশন (সিএনওওসি)-এর বিনিয়োগে নির্মিত, কিংফিশার তেলক্ষেত্র প্রকল্প হলো উগান্ডার প্রথম বাণিজ্যিক তেল প্রকল্প, যা লেক আলবার্ট অঞ্চলে তেলক্ষেত্র উন্নয়ন প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তেলক্ষেত্রের আয়তন ১ হাজার ৫১৮ বর্গকিলোমিটার এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রথম পর্বের প্রকল্পে দু’টো কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ কারখানা এবং ৩৫টি কূপ-এলাকা নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।

        লেক আলবার্ট অঞ্চলে বক, কৃষ্ণসার মৃগ ও আঙ্কে লংহর্ন মতো বন্যপ্রাণীর বাস। তেলক্ষেত্র প্রকল্পের নিকটবর্তী ৮টি গ্রামে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ বসবাস করেন।

        প্রকল্প শুরু হবার পর থেকে, সিএনওওসি ইতিবাচকভাবে স্থানীয় সকরারের চাহিদা অনুসারে, কঠোরভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ সংকট নিয়ন্ত্রণ করছে, ‘সবুজ তেলক্ষেত্র’ তৈরি করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

        জানা গেছে, সিএনওওসি উগান্ডার জন্য বিশেষ করে ৮ হাজার মিটারের শব্দহীন ও স্বয়ংক্রিয় উচ্চ-মানের তেল ড্রিলিং রিগ উত্পাদন করেছে। ভবিষ্যতে তেল সংগ্রহ করার সময় হ্রদের পানির দূষণ এড়াতে, তেল ড্রিলিং রিগে চীনের নিজস্ব গবেষণায় উদ্ভাবিত স্যুয়ানচি রোটারি নির্দেশিকাব্যবস্থা ব্যবহার করা হবে। ফলে, ড্রিলের পাইপ হ্রদের নিচ থেকে তির্যকভাবে তেল নিষ্কাশন করতে পারবে।

        তেলক্ষেত্র প্রকল্পের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবার পর, ‘যুক্ত গ্যাসের শূন্য নির্গমন’ বাস্তবায়িত হবে। তেল নিষ্কাশনের প্রক্রিয়ায় উত্পাদিত গ্যাস পুনর্ব্যবহার করে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসে রূপান্তর করা হবে, যা কার্বন নির্গমন কমাতে সহায়তা করবে।

        প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ছাড়া, সিএনওওসি স্থানীয়দের জীবিকা উন্নত ও কর্মসংস্থান বাড়াতে সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে। কোম্পানি তেলক্ষেত্রের পাশে স্থানীয় প্রথম রাস্তা নির্মাণ করেছে। এতে গ্রামবাসীদের এখন আর ছোট্ট পাহাড়ি পথে চলাচল করতে হয় না।

        “চীনা প্রতিষ্ঠান আমাদের জীবনে বিরাট পরিবর্তন ডেকে এনেছে। রাস্তা নির্মাণ করার পর আমাদের বাচ্চারা আরও দূরের স্কুলে লেখাপড়া করতে পারছে। গ্রামবাসীরাও আরও ভালো হাসপাতালে চিকিত্সা নিতে পারছে”, স্থানীয় জেলে শেরিফ এমন কথা বললেন।

        উগান্ডার বিনিয়োগ ও বেসরকারিকরণ প্রতিমন্ত্রী এভলিন আর্নেট এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ‘কিংফিশার তেলক্ষেত্র প্রকল্প দেশটির শিল্পব্যবস্থার আপগ্রেডিংয়ে সাহায্য দেবে। চীনা প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা উগান্ডার উন্নয়নে নতুন চালিকাশক্তি যোগাচ্ছে এবং দেশটির সবুজ ও টেকসই শিল্পায়ন প্রক্রিয়া বেগবানে সহায়তা দিচ্ছে।’ (প্রেমা/আলিম)