চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের সুষ্ঠু উন্নয়ন বিশ্বের জনকল্যাণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে
2024-06-13 20:38:51

জুন ১৩: ‘এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে, বিওয়াইডি কোম্পানির নতুন জ্বালানি যানবাহনের বিক্রির পরিমাণ ১ লাখ ৭৬ হাজারে পৌঁছেছে। আমাদের বিশ্বায়নের নীতিতে আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি।’ ১২ জুন চীনের গাড়ি উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান- বিওয়াইডি কোম্পানি চায়না মিডিয়া গ্রুপ সিএমজিকে এ তথ্য জানিয়েছে।সংশ্লিষ্ট তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত, চীন থেকে রপ্তানিকৃত গাড়ির পরিমাণ ২৪ লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছেছে। এটি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে নতুন জ্বালানি গাড়ির অব্যাহত রপ্তানি চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি যুগিয়েছে। 


বতর্মানে, বিশ্বের ভূ-রাজনীতির উত্তেজনাময় পরিস্থিতি দিন দিন গুরুতর হচ্ছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের শক্তি আগের মত ঘাটতিজনিত সমস্যায় ভুগছে। এর পাশাপাশি, কোন কোন পশ্চিমাদেশ তথাকথিত ‘সম্পর্ক ছিন্ন করা’সহ নানা ভুল তত্ত্ব প্রচার করছে, যা বিশ্বের বাণিজ্যপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে। এই প্রেক্ষাপটে, চাপের মধ্যেও চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য সুষ্ঠু উন্নয়নের প্রবণতা বজায় রেখেছে। এতে চীনের অর্থনীতির প্রাণশক্তি অনুভব করা যায়। 


চীনের সরকারি তথ্যে দেখা যায়, এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে, চীনের পণ্য বাণিজ্যের আমদানি ও রপ্তানির মোট পরিমাণ ১৭.৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৩ শতাংশ বেশি। রয়টার্সসহ একাধিক বিদেশি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ বাণিজ্যের খাতে চীনের প্রতি বাধা প্রদানের নীতি অনুসরণ করছে।এর মধ্যেও চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। এতে চীনের অর্থনীতির শক্তিশালী সহনশীলতা প্রতিফলিত হয়েছে। 


সুষ্ঠু উন্নয়নের প্রবণতা ছাড়াও, চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের ‘ উচ্চ প্রযুক্তি’, ‘স্মার্ট’ , ‘ টেকসই ও পরিবেশবান্ধব’ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে, চীনের পণ্য বাণিজ্যে রপ্তানির পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.১ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে উচ্চ প্রযুক্তিগত, যান্ত্রিক ও ইলেকট্রিকাল পণ্য রপ্তানির মোট পরিমাণের প্রায় ৬০শতাংশে পৌঁছেছে। 


বিশ্বব্যাপী কেন চীনা ‘স্মার্ট পণ্যে’র জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে?আমরা নতুন জ্বালানি গাড়ি নিয়ে একটি উদাহরণ দিতে পারি। চায়না প্যাসেঞ্জার কার অ্যাসোসিয়েশন বা চীনের যাত্রীবাহী গাড়ি সংস্থার মহাসচিব ছুই তং সু সিএমজিকে বলেন, চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সুবিধা রয়েছে: সম্পূর্ণ শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইন,উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, চীনের বড় আকারের বাজার ও বিশাল মানব সম্পদ ইত্যাদি। 


বিওয়াইডি কোম্পানি সিএমজিকে জানায়, তারা আন্তর্জাতিক বাজারে সবসময় উন্মুক্ত ও সহযোগিতামূলক মনোভাব বজায় রেখেছে।  তারা বলেছে, ‘ আমরা স্থানীয় সরবরাহ চেইনকে আরও উন্নত করব, স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণের জন্য আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি করব।’


চীনের পাওয়ার ব্যাটারির উৎপাদনকারী সিএটিএল কোম্পানি সিএমজিকে জানায়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত, বিদেশি বাজারে তাদের পণ্য গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬.২শতাংশ বেশি এবং বাজারের একই ধরনের পণ্যের মোট পরিমাণের ২৭.৪ শতাংশে পৌঁছেছে,যা বিশ্বের শীর্ষ স্থানে রয়েছে। তারা জানায়, উদ্ভাবন হচ্ছে তাদের কোম্পানির উন্নয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাণশক্তি ও সাফল্যের চাবিকাঠি। 


বাস্তবতা হচ্ছে, চীন যেমন বিশ্বকে নতুন ও উদ্ভাবনী পণ্য প্রদান করছে, তেমনি  বিশ্বের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে এবং বড় বাজারও ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট তথ্যে দেখা যায়, এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে, চীনের পণ্য বাণিজ্যের আমদানির পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.৪শতাংশ বেড়েছে। এর পাশাপাশি, আরও বেশি বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীনে আরও বেশি বিনিয়োগ করছে, উন্নত হচ্ছে। তারা সুযোগ ও সুবিধা অর্জন করছে। 


চীনের সর্বশেষ সরকারি তথ্যে দেখা যায়, দেশের ৮১.৬ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্যভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান অনুমান করছে যে চলতি বছরের প্রথমার্ধে, তাদের পণ্য রপ্তানি পরিস্থিতি সুষ্ঠু প্রবণতায় রয়েছে। অর্থনীতি অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে বলেই চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের উন্নয়নে সুষ্ঠু প্রবণতা বজায় রয়েছে। তা অবশ্যই বিশ্বের জনকল্যাণ বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করবে। 


(আকাশ/শান্তা/ফেইফেই)