২৫ মে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে, সি’আন আন্তর্জাতিক বন্দর স্টেশনে বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে এক্স ৮১৫৭ নম্বর চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেন ধীরে ধীরে রওয়ানা হয়ে, পোল্যান্ডের মারাশেভিচের পথে যাত্রা করে।
এ পর্যন্ত চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেন মোট ৯০ হাজার ট্রিপের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এতে ৩৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ৮৭ লাখের বেশি (বিশ-ফুট সমতুল্য) ইউনিট বা টিইইউ মালামাল পাঠানো হয়েছে।
নতুন রেকর্ড হলো চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেন নতুন ইউরেশিয়ান স্থল পরিবহন চ্যানেলের শক্তিশালী সাক্ষী, পাশাপাশি চীন বিশ্বের আর্থ-বাণিজ্যিক যোগাযোগের সঙ্গে আরো ঘনিষ্ঠ হবার প্রাণবন্ত সূচি।
২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের সংখ্যা ১ হাজার ৭০২ থেকে ১৭ হাজার পর্যন্ত বেড়েছে। বার্ষিক পরিবহন মালামালের মূল্য ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫৬.৭ বিলিয়ন মার্কিন পর্যন্ত বেড়েছে। ১০ হাজার ট্রেন চালু করতে শুরু দিকের ৯০ মাস থেকে বর্তমানে ৭ মাস পর্যন্ত কমেছে।
চীনের আলাশানখৌ, খোরগোস, এরেনহট, মানচৌলি, সুইফেনহো ও থংচিয়াংপেই—ছ’টি বন্দরের মাধ্যমে গমন করা পশ্চিম, মধ্য ও পূর্ব— তিনটি প্রধান চ্যানেলের পরিবহন ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটারের চিত্র নির্ধারিত অপারেটিং লাইন ৮৭টিতে পৌঁছায়, যা চীনের ১২২টি শহরের সঙ্গে সংযুক্ত।
বিদেশে আগের ইউরোপে যাওয়া প্রধান চ্যানেল সুসংহত ও স্থিতিশীল করার ভিত্তিতে, ক্যাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণসাগর পার হওয়া নতুন দক্ষিণ চ্যানেল সাফল্যের সঙ্গে এ পর্যন্ত ইউরোপের ২৫টি দেশের ২২৩টি শহর এবং ১১টি এশীয় দেশের শতাধিক শহরে যাওয়া যায়। পরিষেবা নেটওয়ার্ক মৌলিকভাবে ইউরেশিয়ায় বিস্তৃত হয়েছে।
শুরু দিকের ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের মতো আইটি পণ্য থেকে এ পর্যন্ত চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনে পরিবহন মালামালের রকমফের যথাক্রমে পোশাক ও জুতা, অটোমোবাইল ও আনুষাঙ্গিক, সাধারণ পণ্যদ্রব্য, খাদ্য, কাঠ, রাসায়নিক ও যন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জাম ইত্যাদি ৫০ হাজারের বেশি পণ্যে সম্প্রসারিত হয়েছে।
একই সময় চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের কারণে আরো বেশি ইলেকট্রোনিক পণ্যদ্রব্য, ঘরে ব্যবহার্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও নতুন জ্বালানি গাড়ির মতো ‘মেইড ইন চায়না’ পণ্য আরো দ্রুত ও সস্তা দামে ইউরোপে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে অনেক নতুন লজিস্টিক, শিল্প, বাণিজ্য কেন্দ্র ও শিল্প পার্ক অঞ্চল সঙ্গে সঙ্গে আবির্ভূত হয়।
এ ছাড়া চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেন চীনের অন্তর্দেশীয় শহরের উন্মুক্তকরণ বেগবান করে। কোন কোন সমুদ্রের ধারে নয় বা সীমান্তের শহর নয় এমন শহর চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের উপর নির্ভর করে, যথাক্রমে উন্মুক্ত নতুন স্থানে পরিণত হয়ে উঠে।
চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের চালু বরাবর দেশের জনগণের জন্য বাস্তব লাভের সুযোগ নিয়ে আসে, পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ প্রতিষ্ঠান বিদেশি বাজারে ‘প্রতিযোগিতা’ করার জন্য একটি সুবিধাজনক পথ খুলছে।
ভবিষ্যতে ‘লোহার উট ট্রেন’ আরো ঘনিষ্ঠ ও সম্প্রসারিত বর্তনী চিত্র আরো বড় ‘বন্ধু চক্র’ সম্প্রসারণ করে, আরো বেশি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। (প্রেমা/হাশিম)