‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৭৩
2024-06-05 14:19:14

‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।

 

৭৩ তম পর্বে যা যা থাকছে:

 

১. রূপালি পর্দায় তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে শেকড়ে ফেরার গল্প 

২. তরুণ শিল্পীদের উদ্দেশ্যে যা বললেন শিল্পী মেহরীন

৩. স্নাতকদের সঙ্গে নিয়োগকারীদের যুক্ত করছে চাকরি মেলা

 

 

১. রূপালি পর্দায় তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হচ্ছে শেকড়ে ফেরার গল্প 

চীনা তরুণদের মধ্যে সিনেমা ও টিভি সিরিজের একটি নতুন ধারা ইদানিং জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বেশ—বাড়ি ফেরার গল্প। ছিমছাম গ্রামে কাটে শৈশব। একটু বড় হতেই তারা স্বপ্নের বীজ বপন করে ব্যস্ত মহানগরে।

 

ইদানিং বদলেছে হাওয়া। ওই তরুণরাই আবার টের পায়, স্বপ্নের ভেতরেও লুকিয়ে থাকে আরেক স্বপ্ন। যে স্বপ্নটা তাদের আবার টেনে নিয়ে যাচ্ছে আগের সেই মায়াঘেরা ছোট্ট সবুজ গ্রামে। ছোট গ্রাম আর ছোট ছোট শহরগুলোকে ঘিরে নীড়ে ফেরা ওই তরুণরা গড়ে তুলছে অন্যরকম ক্যারিয়ার। আর এমন গল্পগুলোই এখন মাতাচ্ছে চীনের রূপালি পর্দা।

 

এসব গল্প মূলত বাস্তব জীবনেরই প্রতিচ্ছবি। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে যোগ হয়েছে মানবিকতা। আর এমন বিষয়গুলোই এখন দেদার টানছে চীনের হলগামী দর্শকদের।

 

ড্রাগন বোট উৎসব উপলক্ষেও চীনে চলছে তরুণদের বাড়ি ফেরার জোয়ার। সময়টাকে লুফে নিতে প্রস্তুত চীনের রূপালি পর্দাও। থিয়েটার মাতাচ্ছে কমেডি ঘরনার সিনেমা 'গোল্ড অর শিট'। এ সিনেমাতেও তুলে ধরা হয়েছে এক তরুণের নিজের শহরে ফিরে আসার গল্প। 

 

একই ধরনের আরও কিছু জনপ্রিয় নাটক হলো ‘মিট ইওরসেলফ’, ‘টু দ্য ওয়ান্ডার’, ‘বিল লাভ ইন স্প্রিং’ এবং ‘রিব্লুমিং ব্লু’। সবকটাতেই উঠে এসেছে শিকড়ে ফিরে যাওয়ার অনন্য সব অনুভূতি।

 

গোল্ড অর শিটের পরিচালক লং ফেই বলেন, ‘এখন অনেকে ব্যস্ত শহর ছেড়ে যার যার এলাকায় ফিরে যাচ্ছে। এটা এখন বেশ আলোচিত। আসলে, আমাদের মধ্যে অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাই এটাকে নিয়ে সিনেমাটি বানাতে চেয়েছি। আমাদের চিত্রনাট্যকারের দারুণ একটি আইডিয়া ছিল যে, একটি ডকুমেন্টারি নির্মাণের গল্পের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি তুলে আনা। এটা অনেকটা 'গল্পের মধ্যে গল্প' বলার মতো। কাঠামোটা বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়েছে।’


চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের সমসাময়িক ঘটনা প্রবাহের থিমগুলোকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন চলচ্চিত্রবোদ্ধারা।

চলচ্চিত্র সমালোচক তান ফেই মনে করেন, ‘চলচ্চিত্র এবং টিভি নাটকে অবশ্যই বাস্তব জীবনের প্রতিফলন থাকা উচিত। আমি মনে করি এক দুই দশক আগে ছোট মফস্বল এলাকাগুলো থেকে বেইজিং, শাংহাই কিংবা কুয়াংচৌ যাওয়া ছিল ট্রেন্ডি বিষয়। তখন  'সোয়ান ডাইভ ফর লাভ' এর মত সিনেমাগুলো জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এখন বড় ও ছোট শহরগুলোর মধ্যে ব্যবধান কমে এসেছে। তরুণরাও নানা কারণে নিজেদের শহরে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

 

এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গল্পগুলোর কল্যাণে ফুলেফেঁপে উঠছে স্থানীয় পর্যটন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ‘মিট ইওরসেল্ফ’ টিভি সিরিজটির কথা। ইউননান প্রদেশের ডালি অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের প্রতি পর্যটকদের আগ্রহের ঢেউ জাগিয়েছে এই সিরিজ।

এদিকে, সিনেমা, টিভি নির্মাতা এবং স্থানীয় পর্যটনকে উৎসাহ যোগাতে চলতি বছরের শুরুতে, চীনের ন্যাশনাল রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনআরটিএ) নিয়েছে একটি উদ্যোগ। ট্রাভেল উইথ মাইক্রো শর্ট প্লেস নামের এ পরিকল্পনায় থাকছে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও প্রতিযোগিতা।

 

প্রতিবেদক : হোসনে মোবারক সৌরভ

সম্পাদক: ফয়সল আবদুল্লাহ

 

২. তরুণ শিল্পীদের উদ্দেশ্যে যা বললেন শিল্পী মেহরীন

 

‘শিল্পীদের কিছুটা নিভৃতচারিণী হওয়াই উচিৎ। প্রত্যেক শিল্পীর ব্যক্তিত্ব, জীবন-যাপন এবং কার্যক্রম সাধারণ মানুষের থেকে একটু আলাদা হওয়া উচিৎ।’ সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপের ঢাকা ব্যুরোকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সঙ্গীত শিল্পী মেহরীন এ কথা বলেন।

এসময় সঙ্গীতাঙ্গনে তরুণদের পদচারণা নিয়ে তিনি বলেন, ‘তরুণ মানেই সম্ভাবনা, তারুণ্য মানেই জ্বলজ্বলে আলো, উদ্দীপনা, উচ্ছ্বাস আর দুঃসাহসী পদক্ষেপের সংমিশ্রণ।’     

‘নতুনদের থেকে অনেক কিছু শিখার আছে আমাদের। পাশাপাশি আমাদের থেকেও তাদের শেখার আছে। বিশেষ করে বড়দের সমীহ করার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিৎ। নতুন এবং পুরাতন মিলে পথহাটাটা যেখানে আছে সেটাই উত্তম।’

 

সাক্ষাৎকার গ্রহণ : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

 

৩. স্নাতকদের সঙ্গে নিয়োগকারীদের যুক্ত করছে চাকরি মেলা

 

চীনের বেইজিংয়ে মঙ্গলবার চিয়াওথং ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হলো চাকরি মেলা। মেলায় ১২২টি কোম্পানি মোট ৪০০টি চাকরি সুযোগ নিয়ে আসে। আর সেখানে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে এসেছিলেন তিন হাজার স্নাতকধারী। তাদের অনেকেই পেয়েছেন চাকরির সুযোগ।

চীনের কলেজ ও স্নাতকধারীদের কর্মসংস্থানের প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এ মেলার আয়োজন করে  চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

 

২০২৪ সাল থেকে স্নাতকধারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য চীনজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ।  দেশব্যাপী ১৭৮টি মেলায় আয়োজিত প্রচার কার্যক্রম সপ্তাহটি চলে গত ২৭ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত। প্রায় ১৭ হাজার অংশগ্রহণকারীর উদোগে সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয় স্নাতকধারীদের।

 

বেইজিংয়ের চিয়াওথং ইউনিভার্সিটি থেকে স্কুল অফ ট্রাফিক অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন বিভাগে সদ্য ডক্টরেট করা লি ছেন। তিনি তার বিষয়ের ওপর কয়েকটি চাকরির খাত খুঁজে পেয়ে বেশ আনন্দিত।

 

এই মেলায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে এগিয়ে থাকা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাগুলোয় প্রতিভার চাহিদা দেখা গেছে। এই কোম্পানিগুলো অত্যাধুনিক পণ্য তৈরিতে তরুণ স্নাতকদের অনেক ভালো সুযোগ দিচ্ছে।

চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেস ইলেকট্রনিকের শিক্ষার্থী ওয়াং জুয়ি, বলেন,

‘আমি চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্স থেকে বিমান চালনা বিষয়ে পড়ছি। বর্তমানে বিমানচালনায় প্রতিযোগিতা অনেক এবং আমি বিশ্বাস করি এমন একটি চাকরি খুঁজে পাবো যা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট থাকবো। চাঁদে অভিযান ও গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানেও আমি অবদান রাখতে চাই।’

ড. লিয়াও ইয়ুং,  বেইজিং চিয়াওথং ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান নির্দেশিকা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক বলেন, ‘আমরা আশা করি যে, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে কলেজ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আদান-প্রদান, যৌথ আলোচনা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। এতে ইন্টার্নশিপ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য আরও কাজের সুযোগও তৈরি হবে।’

 

সর্বোপরি কলেজ পর্যায়ের উদ্যোগগুলো প্রতিভা অন্বেষণ এবং চাহিদার সুনির্দিষ্ট সুবিধার্থে একসঙ্গে কাজ করছে।

 

প্রতিবেদক : রফিক বিপুল

সম্পাদক: ফয়সল আবদুল্লাহ

 

 

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

  

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী 

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী