ফলের বাগানের যান্ত্রিকীকরণ প্রসঙ্গ
2024-06-03 10:37:26

শায়ানসি প্রদেশের ইয়ানআন শহরের হুয়াংলিং জেলার ফলের বাগানকে যান্ত্রিকীকরণের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। নতুন নতুন যান্ত্রিক সরঞ্জাম ব্যবহারের মাধ্যমে, জেলায় বার্ষিক ফলের মোট উত্পাদন ৪.০৩ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ৮৬ শতাংশ ফলই উন্নত মানের। এখানে উত্পাদিত আপেল ও নাশপাতিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল ভোক্তাদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়।

হুয়াংলিং জেলা চীনের ফল শিল্পের দ্রুত বিকাশের একটি প্রতীক। চীন একটি ফল উত্পাদনকারী বড় দেশ। জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি, ফলের বাগানের আয়তন ও উত্পাদন দ্রুত বাড়ছেও বটে।  

চীনের কৃষি ও গ্রাম মন্ত্রণালয়ের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিভাগ জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোয়, চীনের ফলের বাগানের যান্ত্রিকীকরণের মান অনেক উন্নত হয়েছে। উত্তর চীনে অনেক আধুনিক আপেল বাগান ও দক্ষিণ চীনে আধুনিক কমলা বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু ফলের বাগানের উত্পাদন-প্রক্রিয়ার যান্ত্রিকীকরণের বিভিন্ন ধাপের মধ্যে এখনও ভারসাম্যহীনতা রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে বহুমুখী যান্ত্রিকীকরণের হার ৩০ শতাংশেরও কম।

জাতীয় আপেল শিল্প প্রযুক্তি ব্যবস্থার প্রধান বিজ্ঞানী ও নর্থওয়েস্ট এঅ্যান্ডএফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মা ফেং ওয়াং বলেন, শ্রমের ব্যয় চীনের আপেল উত্পাদন শিল্পের সবচেয়ে বড় খরচের খাত। এক্ষেত্রে নতুন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, নতুন কৃষক, ও নতুন উত্পাদনের কাঠামো সৃষ্টি করতে হবে; যান্ত্রিকীকরণের মান উন্নত করতে হবে।

কৃষি ও গ্রাম মন্ত্রণালয়ের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিভাগের উপ-পরিচালক স্যু চেন সিং জানান, বর্তমানে চীনের বাগানগুলোতে গাছের সুরক্ষা, গাছ ছাঁটা, সেচ দেওয়া, গ্রেডিং ও বাছাই করা, এবং সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উচ্চ মাত্রার যান্ত্রিকীকরণ সম্ভব হয়েছে। চারা উত্পাদন ও রোপণ, সার প্রয়োগ, এবং পরিবহনের মতো কাজগুলোও ধীরে ধীরে যান্ত্রিকীকরণ করা হচ্ছে। ছাঁটাই, ব্যাগিং, বাছাই, ইত্যাদি ক্ষেত্র এখনও যান্ত্রিকীকরণ করা সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে বাগান যান্ত্রিকীকরণের কাজকে আরও সহজ-সরল করতে হবে এবং শ্রম-সংরক্ষণের ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে স্মার্ট ও সবুজ বিকাশের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।

সম্প্রতি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বিভাগ এবং শায়ানসি প্রদেশের কৃষি ও গ্রাম ব্যুরো যৌথভাবে, হুয়াংলিং জেলায় বাগান যান্ত্রিকীকরণ প্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামবিষয়ক প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ৪০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান শতাধিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম এতে প্রদর্শন করে। সারা দেশের প্রায় ৩০০ মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। আর অনলাইনে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী দর্শকের সংখ্যা ছিল প্রায় ২.৬ লাখ।

স্যু চেন সিং বলেন, ফলের বাগানের আধুনিকায়ন প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম এবং উত্পাদনের পদ্ধতিতে উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ। এ খাতের উন্নয়নে নতুন চালিকাশক্তি যোগ করতে হবে।

জানা গেছে, চীনের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সংস্থাগুলো মূল্যায়ন রূপরেখা প্রণয়ন ও সংশোধনকাজ ত্বরান্বিত করবে; আইন অনুযায়ী ফলের চাষ ও উত্পাদনের জন্য সবুজ করিডোর খোলা হবে।

স্যু চেন সিং বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নতুন সমবায়, ফল কোম্পানি, ও পারিবারিক খামার গড়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে। কৃষি যন্ত্রপাতির জন্য সামাজিক পরিষেবার উন্নয়নে সহায়তা করতে হবে এবং এ শিল্পকে গুণগত মানসম্পন্ন ও আরও দক্ষ শিল্পে পরিণত করতে হবে। (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)