জুন ৩: বর্তমানে চীনের অধিকাংশ এলাকায় গ্রীষ্মকালীন শস্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। এটা বছরের প্রথম শস্যসংগ্রহ। গ্রীষ্মকালীন শস্যের পরিমাণ সাধারণত সারা বছরে সংগৃহীত মোট শস্যের প্রায় ২১ শতাংশ হয়। গ্রীষ্মকালীন শস্য সংগ্রহের জন্য চীনের বিভিন্ন এলাকা নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে।
চীনে ১৩টি প্রধান শস্য-উত্পাদন এলাকা এবং ৮০০টি শস্য-উত্পাদন জেলা আছে। ১৩টি প্রধান এলাকায় মোট শস্য উত্পাদিত হয় গোটা দেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি। কৃষি ও গ্রাম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ২০২৪ সালে ১১টি প্রধান গম উত্পাদনকারী প্রদেশের উত্পাদন বাড়বে। গমের উত্পাদন বৃদ্ধি সাধারণত স্বাভাবিকের চেয়ে ভালো এবং আগের বছরের তুলনায় বেশি। পরবর্তীতে কোনো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ না-ঘটলে, আরেকটি বাম্পার ফলন হবে।
বর্তমানে চীনা কৃষিশিল্পে আগের তুলনায় বেশি যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হলো গ্রীষ্মকালীন শস্য সংগ্রহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়তা এবং একটি শক্তিশালী কৃষিদেশ হিসেবে চীনকে গড়ে তোলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। নতুন প্রযুক্তি, শক্তিশালী সরঞ্জাম, উন্নত কৃষিপদ্ধতি শস্য সংগ্রহের দক্ষতা বাড়ায় ও বাড়াচ্ছে।
গম সংগ্রহের জন্য সারা চীনে ৬ লক্ষাধিক কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহৃত হয়; ভুট্টার চাষে পেইতৌ নেভিগেশন ব্যবস্থার সাথে অনলাইনে সংযুক্ত মানবহীন কৃষি যন্ত্রপাতি দক্ষতার সাথে কাজ করে; ধানের পোকা প্রতিরোধব্যবস্থা সঠিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আগাম সতর্কতা দেয়। মোদ্দাকথা, চাষবাস এখন ‘বুদ্ধিমান চাষবাস’-এ উন্নীত হয়েছে। এবারের গ্রীষ্মকালীন শস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার আগের যে-কোনো সময়ের তুলনায় বেশি হবে।
পরিসংখ্যান অনুসারে, বর্তমানে চীনের প্রধান শস্য সংগ্রহব্যবস্থা মৌলিকভাবে যান্ত্রিকীকরণ করা হয়েছে। ধান, গম ও ভূট্টা সংগ্রহের ক্ষেত্রে মেশিনের ব্যবহার যথাক্রমে ৯৭, ৯৪ ও ৭৮ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে, কৃষিতে যন্ত্রের অবদান ২০১২ সালের ৫৪.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৬২ শতাংশ হয়েছে। ক্রমবর্ধমান হারে কৃষকরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি থেকে উপকৃত হচ্ছেন।
গ্রীষ্মকালীন শস্য সংগ্রহের জন্য আজকাল, বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন পর্যায়ের কৃষি সরঞ্চাম বিভাগ, উপযুক্ত মেশিন ও সরঞ্জামাদি আগাম প্রস্তুত করে; বিভিন্ন কর্মদল সংগঠিত করে; এবং প্রযুক্তিগত সহায়তাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। পাশাপাশি, পরিবহন, শিল্প ও টেলিযোগাযোগ, এবং পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল বিভাগগুলোর সাথে সহযোগিতাও চলে কৃষিখাতের। এখন কৃষি খাত কার্যকরভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও আগাম সতর্কতা পায়; সড়কপথে সংগৃহীত শস্য সরবরাহব্যবস্থা মসৃণ থাকে; কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে প্রয়োজনীয় তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়।
চলতি বছর কৃষি ও গ্রাম মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে, কৃষি সরঞ্জাম কেনা ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভর্তুকির নতুন ব্যবস্থা নেবে। জরুরিভাবে প্রয়োজনীয় কৃষি যন্ত্রপাতি সনাক্তকরণের জন্য, একটি সবুজ করিডোর খোলা হবে। উত্পাদন লাইনে উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োগ ত্বরান্বিত করা হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সমর্থনে ক্রমবর্ধমান হারে কৃষকরা ‘ইন্টারনেট অফ থিংস’ প্রযুক্তি ও বুদ্ধিমান সরঞ্জাম ব্যবহার করছেন। এর মাধ্যমে চীনের কৃষিশিল্প উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। উন্নত কৃষিযন্ত্রপাতি শস্য সংগ্রহের সক্ষমতা অনেক বাড়িয়েছে। গ্রীষ্মকালীন শস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। (ছাই/আলিম/ওয়াং হাইমান)