যে-কারণে সিনচিয়াংয়ের আঙুর এতো মিষ্টি
2024-05-31 12:43:41

 

এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও সিচাং-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর সিচাং সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা সিনচিয়াং নিয়ে কথা বলব।

 

বেশিরভাগ লোক, যারা সিনচিয়াংয়ের আঙ্গুরের স্বাদ নিয়েছেন, তাঁরা এটি প্রশ্ন করেন। প্রশ্নটি হচ্ছে: সিনচিয়াংয়ের আঙুর এতো মিষ্টি কেন? সিনচিয়াং উত্তর-পশ্চিম চীনের অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে অবস্থিত, সমুদ্র থেকে অনেক দূরে এবং সেখানে একটি নাতিশীতোষ্ণ মহাদেশীয় জলবায়ু রয়েছে। এখানে শীতকাল ঠাণ্ডা পড়ে এবং গ্রীষ্মকালে গরম। সামান্য বৃষ্টিপাত হয় এবং জলবায়ু খুব শুষ্ক। যদিও জলবায়ু শুষ্ক এবং বৃষ্টিপাত কম, প্রচুর সূর্যালোক পাহাড়ের বরফ ও তুষার গলে ফসলের জন্য মূল্যবান জল সরবরাহ করে। দিনের বেলা উচ্চ তাপমাত্রা ফসলের সালোকসংশ্লেষণকে শক্তিশালী করতে পারে এবং রাতে কম তাপমাত্রা ফসলের শ্বাস-প্রশ্বাসকে দুর্বল করতে পারে। তাই, সিনচিয়াংয়ের ফল বিশেষভাবে বড় ও মিষ্টি হয়।

সিনচিয়াংয়ে আঙ্গুর চাষের পদ্ধতিও অন্যান্য জায়গা থেকে আলাদা। প্রতি শরতে আঙ্গুর গাছের পাতা ঝড়ে যায়। শীত আসার আগে আঙ্গুরের লতাগুলোকে মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়অ হয়। যখন বসন্ত আসে, তখন মাটি সরানো হয়। প্রায় দুই বা তিন সপ্তাহ পরে আবারও আঙ্গুরের চারা গজায় গ্রীষ্মের শুরুতে। আঙ্গুরের পাতাগুলো খুব ঘনভাবে বৃদ্ধি পায়। পাতাগুলো স্তরে স্তরে স্তুপীকৃত হয় এবং সূর্যের আলোতে দুলতে থাকে। আঙ্গুরগুলো তখনও খুব ছোট থাকে, পাকে না। পাতাগুলো থাকে বিশেষভাবে ঘন। তাই তখন পাতা ছাঁটতে হয়। সূর্যালোককে বাধা দেয় এমন শাখা এবং পাতাগুলো কেটে ফেলার জন্য বিশেষভাবে ছাঁটাইয়ের কাজটা করা হয়। এতে আঙ্গুরগুলো সূর্যের আলো সম্পূর্ণরূপে শোষণ করতে পারে। মিড-অটাম ফেস্টিভ্যালের আগে আঙ্গুর পাকে।

সিনচিয়াংয়ের আঙ্গুর বিশ্বের সেরা, এবং তুর্পানের আঙ্গুর দেশে ও বিদেশে বিশেষভাবে বিখ্যাত। আঙ্গুর সাধারণত এপ্রিলের শেষে পাকে। আগস্টে এতো আঙুর দেখা যায় যে, সেগুলো সারা রাস্তায় বিক্রি হয়। আপনি যদি গ্রেপ ভ্যালিতে যান এবং আঙ্গুর খাওয়ার সময় গান ও নাচ উপভোগ করেন, তবে এটি একটি দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হবে! যখন আঙ্গুরের ফলন হয়, তখন আঙ্গুরগুলো গাছে ঝুলে থাকে বিপুলভাবে। আঙুরের কোনোটি মুক্তার মতো স্বচ্ছ, কোনোটি এগেটের মতো উজ্জ্বল, আবার কোনোটি পান্নার মতো সবুজ। রঙিন ও তাজা আঙ্গুর মুখে জল আনে। বিশেষ করে, সবচেয়ে জনপ্রিয় বীজহীন সাদা আঙ্গুরের চামড়া পাতলা। এ আঙুর রসালো, সুস্বাদু, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এগুলো ‘মুক্তা’ নামে পরিচিত এবং এগুলোতে চিনির পরিমাণ ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হয়, যা ক্যালিফোর্নিয়ার আঙুরের চেয়ে বেশি। এ ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে সিনচিয়াংয়ের আঙুর। অবশ্য, সিনচিয়াংয়ের আঙুরের চাষের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং এর প্রজাতির সংখ্যা ৬ শতাধিক।

প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে সিচাং’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও সিচাংয়ের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা:  https://bengali.cri.cn/  সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)