‘ঘুরে বেড়াই’ পর্ব- ৭২
2024-05-28 19:30:41

এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে

১। ভিসা ছাড়াই ১৫ দিন চীন ভ্রমণের সুযোগ

২। সিনচিয়াংয়ে পর্যটকের ঢল

৩। টুকরো খবর-

·       প্রিপেইড ট্রাভেল কার্ডে শাংহাই ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা

·       সিচাংয়ে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক

·       চা বাগানে পর্যটন বাড়ছে

 

 

 

বিশ্বব্যাপী অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রেখেছে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। কতো-শতো দেশ, কতো সংস্কৃতি, কতো ভাষা, কতো পেশা,.... কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা সময়ের টানাটানিতে দেখা হয় না, ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’

‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু...’সেই অদেখাকে দেখাতেই আমাদের আয়োজন "ঘুরে বেড়াই"।

দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান, সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান ‘ঘুরে বেড়াই’।

ঘুড়ে বেড়াই অনুষ্ঠানের ৭২তম পর্ব আজ। আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি, আফরিন মিম।

১। ভিসা ছাড়াই ১৫ দিন চীন ভ্রমণের সুযোগ

ভিসা ছাড়াই ১৫ দিন চীন ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা। তবে সবাই নয়; শুধুমাত্র যারা ক্রুজ শিপ তথা প্রমোদতরী ব্যবহার করে চীনে প্রবেশ করবেন, তারাই ভিসা ছাড়া দেশটির নির্বাচিত কিছু প্রদেশে অবস্থান করতে পারবেন।

আন্তর্জাতিক ক্রুজ ব্যবহার করে চীনে প্রবেশকারীরা ভিসা ছাড়া ১৫ দিন চীনে অবস্থান করতে পারবেন। সম্প্রতি এ ঘোষণা দিয়েছে চীন। মূলত পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। 

 

চীনের ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনআই) এক বিবৃতিতে বলেছে, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী বিদেশি পর্যটকদের চীনের ১৩টি উপকূলীয় ক্রুজ বন্দরের যেকোনো একটিতে প্রবেশ করতে হবে। 

 

 

এছাড়া পর্যটকদের অন্তত দুইজনের একটি দল গঠন করে কোনো একটি চীনা ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবহার করে ভ্রমণ করতে হবে এবং একই ক্রুজে দেশ ত্যাগ করতে হবে। ট্যুর গ্রুপ বেইজিং বা অন্যান্য উপকূলীয় প্রদেশ ভ্রমণ করতে পারবে।

 

সিএনআইর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিদেশি পর্যটকদের প্রমোদতরী নেয়ার জন্য ভিসামুক্ত প্রবেশ নীতির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন চীনের পর্যটন অর্থনীতির বিকাশকে ত্বরান্বিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এটি চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

 

চলতি বছর চীনের প্রমোদতরী ব্যবসায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। দেশটির প্রথম অভ্যন্তরীণভাবে নির্মিত ক্রুজ লাইনার ‘অ্যাডোরা ম্যাজিক সিটি’ চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রথম সমুদ্রযাত্রা করে।

 

ভিসামুক্ত ট্রানজিট নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের অন্য দেশে ট্রানজিট করার সময় ১৪৪ ঘণ্টা পর্যন্ত চীনে অবস্থানের সুযোগ দেয়। চীনে ভিসামুক্ত ট্রানজিট করতে পারে মোট ৫৪টি দেশ। সবশেষ গত বছরের নভেম্বরে নরওয়ে এ তালিকায় যুক্ত হয়।

 

প্রতিবেদন- আফরিন মিম

সম্পাদনা- ফয়সল আবদুল্লাহ

 

২। সিনচিয়াংয়ে পর্যটকের ঢল

চীনের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াং। এখানে প্রকৃতি যেমন অপরূপ সুন্দর তেমনি এখানে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর লোকজ ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ।  সিনচিয়াংয়ের বাসিন্দা কাজাখ জাতির রয়েছে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য।

সিনচিয়াংয়ের ইলি কাজাখ স্বায়ত্তশাসিত প্রিফেকচারে এখন অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু মানুষের ভিড়। ইলি একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থান। এখানে লোকজ ও এথনিক সংস্কৃতিকে ভিত্তি করে পর্যটন শিল্পকে চাঙা করে তোলা হচ্ছে।

ইলির ইনিং সিটির লিউসিং স্ট্রিটে পর্যটন স্পট গড়ে উঠেছে। এখানে স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ সাংস্কৃতিক অঞ্চল। সামনে রয়েছে বিশাল খোলা চত্বর। এই খোলা চত্বরে কবুতরের ঝাঁক চোখে পড়ে। পর্যটকরা পাখিকে খাবার দেন। তাদের সঙ্গে ছবিও তোলেন।

এখানে খোলাচত্বরে অনেক পর্যটক আসেন। তাদের জন্য ঘোড়ায় টানা গাড়িতে চড়ে বেড়ানোসহ নানা রকম বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে।

ইনিং সিটিতে স্থাপন করা হয়েছে কাজানছি লোকজ পর্যটন এলাকা। এখানে কাজাখ জাতির লোকজ সংস্কৃতি পরিবেশিত হয়। রয়েছে বিশেষ লোকজ খাদ্যের রেস্টুরেন্ট। কাজানছি লোকজ পর্যটন এলাকার শুরুতেই রয়েছে কারুকার্য করা বিশাল তোরণ। এই তোরণ দিয়ে প্রবেশের পর চোখে পড়ে কারুশিল্পের বিভিন্ন দোকান।

এখানে কাজাখজাতির বিশেষ কিছু খাদ্যের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সেসব রেস্টুরেন্টে কাবাব, রোস্ট, রুটি বিখ্যাত। এই এলাকার ভিতরে  স্ট্রিট ফুড বা পথের ধারে রয়েছে মজাদার সব খাবার । আরও রয়েছে লোকজ কারুপণ্যের বিশাল সমাহার।

কাজাখজাতির বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কাজাখ এমব্রয়ডারি করা পোশাক ও অন্যান্য সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে এখানে। কাজাখরা রঙিন পোশাক পরতে ভালোবাসে। এই পর্যটন এলাকার দোকানগুলোতে কাজাখ পোশাক ও টুপি মিলবে যা পর্যটকরা সুভেনির হিসেবে কিনে নিচ্ছেন। এখন গ্রীষ্মের চমৎকার আবহাওয়া। নানা রকম ফুল ফুটেছে। ইলিতে আসা পর্যটকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ফুলের ছবি তুলতে।

বিশেষ ধরনের বাদ্যযন্ত্রের দোকানেও ভিড় জমেছে। কাজাখজাতির সংগীতের ঐতিহ্য অনেক সমৃদ্ধ। ইলিতে বিশেষ কিছু দোকান রয়েছে যেখানে ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বিক্রি হয়। ইলিতে পর্যটকের ঢল নামায় চাঙা হয়ে উঠেছে স্থানীয় অর্থনীতিও।

প্রতিবেদন- শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা- ফয়সল আবদুল্লাহ

 

 

৩। টুকরো খবর-

 

·       প্রিপেইড ট্রাভেল কার্ডে শাংহাই ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা

 

প্রিপেইড ট্রাভেল কার্ডে চীনের শাংহাই মিউনিসিপালটি ঘুরে বেড়াতে পারবেন পর্যটকরা। এতে করে যারা মোবাইলে পেমেন্ট করতে আগ্রহী নয়, তারাও সহজে পেমেন্ট করতে পারবেন। আপাতত সুযোগটি পাবেন চীনের অভ্যন্তরীণ পর্যটকরা।

 

শাংহাই সিটি ট্যুর কার্ড ডেভেলপমেন্ট কোং লিমিটেড বলছে, শাংহাই পাস নামের কার্ডটি দিয়ে সর্বোচ্চ এক হাজার ইউয়ান ব্যালেন্সসহ বিভিন্ন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, পর্যটন স্থান এবং শপিং মলে পেমেন্ট করা যাবে।

 

 

কোম্পানি বলছে, কার্ডটি হংছিয়াও এবং ফুতং বিমানবন্দর এবং পিপলস স্কয়ার স্টেশনের মতো প্রধান পাতাল রেল স্টেশনগুলোতে কেনা যাবে এবং রিচার্জ করা যাবে।

 

কার্ডটি বাস, সাবওয়ে, ট্যাক্সি, ফেরি এবং শাংহাই ওরিয়েন্টাল পার্ল টাওয়ার, শাংহাই মিউজিয়াম এবং শাংহাই ওয়াইল্ড অ্যানিমেল পার্কের মতো পর্যটক আকর্ষণে ব্যবহার করা যাবে।

 

·        সিচাংয়ে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক

 

গেল বছর পর্যটন খাত থেকে আয়ে রেকর্ড করেছে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিচাং (তিব্বত) স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। যার দৃশ্যমান ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে স্থানীয়দের জীবনযাত্রায়।

 

সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সিচাং কমিটির ডেপুটি সেক্রেটারি এবং সিচাং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চেয়ারম্যান ইয়ান চিনহাই এ তথ্য জানিয়েছেন।

 

 

স্থানীয় এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘গেল বছর সিচাংয়ে দেশ-বিদেশ থেকে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছে। আর এখান থেকে আয় হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার কোটি ইউয়ানেরও বেশি।’

 

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যাও দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩০০ জনে।

 

·       চা বাগানে পর্যটন বাড়ছে

 

চায়ের দেশ চীন। এই পানীয়র আদি জন্মস্থান বলা হয় এই দেশকে। তাইতো শুধু চা উৎপাদন নয়, চা শিল্প পর্যটনেও খুব জনপ্রিয় এই দেশের বিভিন্ন চা বাগান।

 

 

চীনের হুবেই প্রদেশের হ্যফং কাউন্টিতে চা বাগানের উন্নয়নের পাশাপাশি বিকাশ ঘটছে পর্যপন শিল্পের। চা বাগানের সুন্দর দৃশ্যের জন্য ভিড় করছেন পর্যটকরা। আর তাদের উন্নত পরিষেবা দিতে গড়ে উঠছে হোম স্টে।

 

এদিকে প্রদেশের চোওমা টাউনেও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন চা বাগান। এই চা বাগানগুলোর টি প্লান্টিংয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। যার ফলে চা বাড়ছে চা উৎপাদন । পাশাপাশি চা বাগানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সংখ্যাও বাড়ছে আগের চেয়ে কয়েকগুন। 

 

 

প্রতিবেদন- আফরিন মিম

সম্পাদনা- ফয়সল আবদুল্লাহ

 

ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও প্রযোজনা - আফরিন মিম

অডিও সম্পাদনা- রফিক বিপুল

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী