এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে
১। ঢাকায় পালিত হলো চীনা পর্যটন দিবস
২। ১১ বছর পর আরেক বাংলাদেশির এভারেস্ট জয়
৩। টুকরো খবর-
· ভিসা-মুক্ত নীতি চালু হওয়ায় বেড়েছে পর্যটক
· আধুনিক টিকিট বুকিং ব্যবস্থায় চীনে বেড়েছে বিদেশি পর্যটক
বিশ্বব্যাপী অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রেখেছে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। কতো-শতো দেশ, কতো সংস্কৃতি, কতো ভাষা, কতো পেশা,.... কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা সময়ের টানাটানিতে দেখা হয় না, ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’
‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু...’সেই অদেখাকে দেখাতেই আমাদের আয়োজন "ঘুরে বেড়াই"।
দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান, সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান ‘ঘুরে বেড়াই’।
ঘুড়ে বেড়াই অনুষ্ঠানের ৭১তম পর্ব আজ। আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি, আফরিন মিম।
১। ঢাকায় পালিত হলো চীনা পর্যটন দিবস
‘চীনকে আবিষ্কার করুন, সুখী জীবন উপভোগ করুন- এই প্রতিপাদ্যে ঢাকায় পালিত হলো চীনা পর্যটন দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে রোববার ঢাকার জাতীয় জাদুঘরের অডিটোরিয়ামে যৌথভাবে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওফেং, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ এর সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্বোধনী বক্তব্যে চীনা পর্যটন দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে চীনা লি শাওফেং বলেন, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ভৌগোলিক ও মানসিক সম্পর্ক রয়েছে। চীন সব সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর জোর দেয়। এসময় তিনি চীনের সমৃদ্ধ পর্যটন সম্পদ ও প্রাণবন্ত সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বেইজিং এবং ইউনানসহ চীনের বিভিন্ন প্রদেশ বাংলাদেশী পর্যটকদের ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ জানান।
অনুষ্ঠানে জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন দেশ ও জাতির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন, সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়ানোএবং পারস্পরিক বন্ধুত্বকে গভীর করার সেতু হিসেবে পর্যটনের ভূমিকা অপরসীম।
তিনি আশা করেন যে এই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশী জনগণকে চীনা সংস্কৃতি ও পর্যটনের সৌন্দর্যকে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করবে,আর এর মাধ্যমেই দুই দেশের জনগণের মধ্যে আদান-প্রদান এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
পর্যটন ও সংস্কৃতি জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে উল্লেখ করে আবদুস সালাম আরেফ বলেন, চীন প্রচুর পর্যটন সম্পদের ভরপুর একটি দেশ। বেইজিং, সাংহাই, ইউনান, সিচাং(তিব্বত), সিচুয়ান, কুয়াংসি এবং শানসি-এর মতো শহর ও অঞ্চলসহ চীনের বিভিন্ন প্রদেশ বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয় গন্তব্য। তিনি অভ্যন্তরীণ এবং বহির্মুখী পর্যটনের উন্নয়নে উভয় দেশের পর্যটন কর্তৃপক্ষের মধ্যে আরও সহযোগিতার বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি নিজেদের কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং চীন বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শন করা হয় । এরপর ফিতা কেটে এক্সিবেশন হল উদ্বোধন করেন চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওফেং। এসময় তিনি এক্সিবেশন সেন্টারটি ঘুরে দেখেন।
প্রতিবেদন- নাজমুল হক রাইয়ান
সম্পাদনা- আফরিন মিম
২। ১১ বছর পর আরেক বাংলাদেশির এভারেস্ট জয়
এবার বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়েছেন বাবর আলী। ১১ বছর পর ভয়ংকর এ যাত্রায় সফল হলেন আরেক বাংলাদেশি। জানা গেছে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন চট্টগ্রামের বাবর আলী।
পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানা সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষ করে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। সেখানে অবস্থান করেন সপ্তাহখানেক।
ট্রেকিং পর্ব শেষ করে পৌঁছান এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে। মূল অভিযান শুরু হয় সেখান থেকে। পর্বতের চূড়ায় উঠতে সময় লাগে প্রায় দুই মাসের মতো।
এদিকে যাত্রা শুরুর আগে বাবর আলী জানিয়েছিলেন, মাউন্ট এভারেস্টে জয় করা অনেকের স্বপ্ন। প্রতিবছর হাজারো পর্বতারোহী এভারেস্টের পথে হাঁটেন। এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পর আরেক পর্বতশৃঙ্গ লোৎসে ওঠার চেষ্টা বাংলাদেশ থেকে আগে হয়নি। আমি সেই চ্যালেঞ্জটাই দিয়েছি।
বাবর আলী চট্টগ্রামের বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন। ৩৩ বছর বয়সী এ যুবক লেখাপড়া শেষে শুরু করেছিলেন চিকিৎসাপেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন।
এভারেস্ট জয়ের আগে বাবর আলী সারগো রি, সুরিয়া পিক, মাউন্ট ইয়ানাম, মাউন্ট ফাবরাং মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা,মাউন্ট শিবা মাউন্ট রামজাক, মাউন্ট আমা দাবলাম ও চুলু ইস্ট পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন এ তরুণ।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন মুসা ইব্রাহীম। ২০১০ সালের ২৩ মে এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি। এরপর ২০১১ সালের ২১ মে মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, ২০১২ সালের ১৯ মে নিশাত মজুমদার, ২০১২ সালের ২৬ মে ওয়াসফিয়া নাজরীন এবং ২০ মে সজল খালেদ এভারেস্টের চূড়ায় পা রাখেন। নিশাত মজুমদার প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন।
প্রতিবেদন- আফরিন মিম
সম্পাদনা- ফয়সল আবদুল্লাহ
৩। টুকরো খবর-
· ভিসা-মুক্ত নীতি চালু হওয়ায় বেড়েছে পর্যটক
ভিসা-মুক্ত নীতি চালু হওয়ায় পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের পর্যটন খাত আরও ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। চীন সরকারের এমন নীতির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আরও অধিকহারে পর্যটক আসছেন প্রদেশটির নানচিং শহরে।
গত ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া ভিসা-মুক্ত প্রবেশ নীতির আওতায়, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন এবং মালয়েশিয়ার সাধারণ পাসপোর্টধারীরা ১৫ দিন পর্যন্ত চীনে ভিসা ছাড়া ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন। নতুন এ নীতিটি ব্যবসা, পর্যটন এবং ভ্রমণকারীদের জন্য প্রযোজ্য। এটি নানচিং শহরকে আরও আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করছে।
এ নীতির অধীনে ৫৩ টি দেশের নাগরিকরা ১৫ দিনের জন্য ভিসা ছাড়াই নানচিং ভ্রমণ করতে পারছেন।
স্থানীয় পর্যটন কর্তৃপক্ষের তথ্য দেখা গেছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে শহরটিতে ৫১ হাজার ৫০০ জন বিদেশী পর্যটক এসেছেন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
সম্প্রতি নানচিংয়ে জার্মানির ৩০ জনেরও বেশি পর্যটক দুই দিনের জন্য ভ্রমণ করেন। এ সময়ে তারা স্থানীয় নদীতে লাইট শো উপভোগ করেন। এছাড়া ৬০০ বছরেরও বেশি পুরানো প্রাচীর পরিদর্শন করেছেন। ঐতিহ্যবাহী চীনা কাগজ কাটা এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ঘুরে দেখেন তারা।
· আধুনিক টিকিট বুকিং ব্যবস্থায় চীনে বেড়েছে বিদেশি পর্যটক
বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শায়ানসি প্রদেশের রাজধানী সি’আনের বিশ্ববিখ্যাত টেরাকোটা ওয়ারিয়ার্স জাদুঘরটি। এটি মূলত সম্রাট ছিন সি হুয়াংয়ের সমাধি।
সম্প্রতি জাদুঘরটিতে বিদেশি পর্যটকরা নিজস্ব মুদ্রায় আগাম টিকিট বুকিংয়ের পেমেন্ট করার সুযোগ পাচ্ছেন মোট ৯০০টি টিকিটিং প্লাটফর্মে। এ কারণে স্থানটিতে বেড়েছে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা।
পর্যটকরা ওভারসিজ ইন্টিগ্রেশন সার্ভিস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তাদের টিকিট আগাম বুক করছেন। বিশ্বের ৩৯টি দেশ ও অঞ্চলের মোট ২৯টি মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা রয়েছে এ পরিষেবার আওতায়।
অস্ট্রেলিয়া থেকে চীনে শিক্ষাসফরে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরিষেবাটি খুব ভালো লেগেছে। এটা সুবিধাজনক ও সহজ মনে হচ্ছে। হয়তো বন্ধুদের নিয়েও এখানে আসতে পারি।’
অপর এক অস্ট্রেলীয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশ থেকে লোকজনকে চীনে সুন্দর জিনিস দেখাতে নিয়ে আসবো।’
প্রতিবেদন- আফরিন মিম
সম্পাদনা- ফয়সল আবদুল্লাহ
ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও প্রযোজনা - আফরিন মিম
অডিও সম্পাদনা- রফিক বিপুল
সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী