ভ্রমণের জন্য চীনে আরও ফরাসি বন্ধুদের স্বাগত জানাই: সি চিন পিং
2024-05-14 16:32:31

ফ্রান্সে মে মাসে আইরিস ফুল (irises) ফোটে। প্যারিসের রাস্তায়, ক্যাফে ডি ফ্লোরের কাছে একটি বইয়ের দোকানের জানালায়, "দ্য থ্রি-বডি প্রবলেম" এর ফরাসি সংস্করণ এবং অন্যান্য চীনা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী অনেক লোককে আকৃষ্ট করেছিল।

হাজার হাজার মাইল দূরে বেইজিং-এর ফরবিডেন সিটির ওয়েনহুয়া হল, যেখানে "ফরবিডেন সিটি অ্যান্ড প্যালেস অফ ভার্সাই" প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছিল, সেখানে মানুষের ভিড় দেখা যায়। দুই শতাধিক বছরেরও বেশি আগের নিষিদ্ধ শহরের ফরাসি শৈলী এবং ভার্সাই প্রাসাদে চীনা ফ্যাশনকে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের প্রতিটি ‌আইটেমের মাধ্যমে চমত্কারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে; যা চীনা ও ফরাসি সভ্যতার মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ, বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষার ঐতিহাসিক গল্প তুলে ধরে।

 ষাট বছর আগে, চীন ও ফ্রান্স- দুই মহান দেশ করমর্দন করেছিল, চীন ও পশ্চিমের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতার দ্বার উন্মোচন করেছিল।

গত ৬০ বছরে, কয়েক প্রজন্মের মানুষ চীন-ফ্রান্স সম্পর্কের বিকাশ করেছে এবং দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব সময়ের সাথে আরও শক্তিশালী হয়েছে। উষ্ণ হ্যান্ডশেক ও বন্ধুত্বের গল্প চলতে থাকে।

“ভ্রমণের জন্য চীনে আসতে আরও ফরাসি বন্ধুদের স্বাগত জানাই।” চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং চীন-ফ্রান্স কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬০তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দেওয়া এক ভিডিও বক্তৃতায় তিনি এই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

এই উষ্ণ বন্ধুত্বের সাথে, ফ্রান্সের যুবদল চীনে তাদের যাত্রা শুরু করেছিল। প্রাচীন গ্রাম থেকে আধুনিক শহরগুলিতে, অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দক্ষতা থেকে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অন্বেষণে, চীনা সভ্যতার আকর্ষণ এবং প্রাণশক্তিতে নিজেদের নিমজ্জিত করে।

ফ্রান্সের মার্সেইর হাইস্কুলের ছাত্র ১৭ বছর বয়সী বুগাজি সোহেল বলেন, "এটি আমার প্রথম চীনে আসা। যদিও এটি মাত্র ৪ দিন, তবে এটি আমার জীবনের সেরা ৪ দিন।" নিষিদ্ধ শহর ও স্বর্গ মন্দির পরিদর্শন, গ্রেট ওয়ালে আরোহণ, বেইজিং রোস্ট হাঁস খাওয়া, জাদুঘর পরিদর্শন, নরম-পেন ক্যালিগ্রাফি শেখা, এবং ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করা, সোহেল ও তার সহপাঠীদের প্রতিদিন নতুন অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি লাভ করে। সে বলে- "আমি চীনকে অনেক পছন্দ করি।"

চীনে সে ভাল সময় কাটিয়েছে। এই ফরাসি যুবকের হৃদয়ে একই স্বপ্নের বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে: "একদিন, আমি আবার ফিরে আসব, ঠিক ১৩ বছর আগে, তাদের সিনিয়র বোন আদ্রিয়ান মেরির (চীনা নাম ডাই মিং সিন) মতো।"

২০১১ সালে, ফরাসি মেয়ে ডাই মিং সিন হাই স্কুলের ছাত্রী ছিল। চীনা শিক্ষক মাতালি সিয়ন (চীনা নাম: মা জিনহু) এর নেতৃত্বে সে একটি অল্প মেয়াদী শিক্ষা সফরের জন্য চীনে এসেছিল এবং চীনের সাথে একটি অবিচ্ছেদ্য বন্ধন তৈরি হয়েছিল। কলেজে প্রধান বিষয় হিসেবে চাইনিজকে বেছে নেওয়া থেকে শুরু করে স্নাতকের পর চীনে অধ্যয়ন করা, এখন ডাই মিং সিন চীনে থাকে এবং একজন ভিডিও ব্লগার হয়। তার বৃদ্ধি ও পরিবর্তন সবসময়ই চীনের সাথে যুক্ত।

"ফ্রান্স আমাকে জীবন দিয়েছে, এবং চীন সুন্দর রঙ দিয়েছে। কয়েক মাস আগে, যখন সে শুনেছিলে যে শিক্ষক মা আবার চীনে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন, তখন সে বিশেষভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে "হ্যান্ডশেক প্ল্যান" চালু করেছিলে: চীনা নেটিজেনদের আমন্ত্রণ জানিয়ে দিতে এই ফরাসি শিশুদের জন্য তাদের শুভেচ্ছা পাঠাবে, যারা চীন যাবে।

শীঘ্রই, তার ইমেল ইনবক্স সারা বিশ্বের ভিডিও দিয়ে পূর্ণ হয়ে গেল।

"চীনে স্বাগতম", "আশা করি তোমরা সফলতা পাবে", "কাবাব খেতে জিবোতে স্বাগতম", "চীনের পাঁচ হাজার বছরের সাংস্কৃতিক আকর্ষণের অভিজ্ঞতা নিন"... শিক্ষক মা অনেক মুগ্ধ হন, তিনি বলেছিলেন যে চীন ভবিষ্যত এবং তিনি আশা করেন যে, শিক্ষার্থীদের নিজস্ব চীনা গল্প থাকতে পারে।

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং উল্লেখ করেছেন, "আমাদের অবশ্যই পারস্পরিক বোঝাপড়া মেনে চলতে হবে এবং ২০২৪ সালের চীন-ফ্রান্স সংস্কৃতি ও পর্যটন বর্ষ ও প্যারিস অলিম্পিককে সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্প্রসারণ এবং সংযোগ বৃদ্ধির সুযোগ হিসেবে নিতে হবে।"

২০২৪ সালের চীন-ফ্রান্স সংস্কৃতি ও পর্যটন বছরে চীন ও ফ্রান্স পারফর্মিং আর্ট, ভিজ্যুয়াল আর্ট, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, পর্যটন প্রচার এবং অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিকে কভার করে সারা বছর ধরে শত শত উত্তেজনাপূর্ণ কার্যকলাপ সংগঠিত করায় সহযোগিতা করবে।

যুব বিনিময় থেকে ক্রীড়া সংলাপ, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষা থেকে উচ্চ শিক্ষা সহযোগিতা, উভয় পক্ষ একটি সমৃদ্ধ এবং প্রাণবন্ত উপায়ে দুই দেশের চমত্কার সংস্কৃতির সারমর্ম উপস্থাপন করেছে, দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের স্তর উন্নত করার জন্য সক্রিয়ভাবে নতুন উপায় অনুসন্ধান করেছে এবং ক্রমাগত পারস্পরিক বোঝাপড়া গভীরতর করেছে।

ফ্রান্স হল প্রথম দেশ চীনের সাথে সাংস্কৃতিক বছর পালন করে এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও স্থাপন করেছে। এটি চীনের সাথে যুব বিনিময় পরিচালনাকারী প্রথম প্রধান পশ্চিমা দেশ।

ফরাসি ন্যাশনাল ফার্নিচার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালক হার্ভে লেমোইন বলেছেন যে, ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে বিনিময়ের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা অনেক ভাল স্মৃতি দেখি। আজ, গভীর বন্ধুত্বের ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক নতুন প্রাণশক্তি বিকিরণ করছে।

 "সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান হল একে অপরের প্রতি হাত প্রসারিত করার মতো, যা আমাদের একে অপরকে গভীরভাবে বুঝতে এবং একে অপরের সংস্কৃতি সম্পর্কে কৌতূহলী করে।" ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাংস্কৃতিক বিষয়ক পরিচালক ক্যাট্রিন রাগারি বলেছেন।

রাষ্ট্রপ্রধানদের কূটনীতির দিকনির্দেশনা ও প্রচারে, দুই সভ্যতার মধ্যে কথোপকথন গভীরতর হতে থাকে এবং একটি নতুন গল্প লেখা হয়।

আজ, চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে  শতাধিক সিস্টার প্রদেশ এবং শহর রয়েছে। উভয় দেশেই বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যা বিদেশি ভাষায় কোর্স অফার করে। ফরাসি অপেরা, ব্যালে, স্থাপত্য, খেলাধুলা, খাদ্য, ফ্যাশন ইত্যাদি চীনে ব্যাপক আকর্ষণ রয়েছে। চাইনিজ কল্পকাহিনী, মূল ছবির বই, অ্যানিমেশন মুভি ইত্যাদি ক্রমশ ফরাসি জনগণের মনোযোগ ও ভালোবাসা আকর্ষণ করছে।

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং একবার বলেছিলেন যে, চীন-ফ্রান্স সম্পর্ক উন্নয়নে পারস্পরিক বোঝাপড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। প্রেসিডেন্ট ম্যাকখোঁও বলেছেন যে, প্রকৃত বন্ধুত্ব হল পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা। বর্তমান বিশ্ব এক শতাব্দীর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি হিসাবে, দুটি প্রধান সভ্যতা চীন ও ফ্রান্স, একে অপরের প্রশংসা করে এবং একে অপরের কাছ থেকে শেখে, বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য একটি নতুন উদাহরণ তৈরি করে।

ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রীয় কূটনীতি প্রধানদের দিকনির্দেশনায়, চীন ও ফ্রান্সের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং বন্ধুত্বের প্রচার চালাবে, বন্ধুত্বের নৌকার স্থিতিশীল যাত্রায় সহায়তা করবে এবং দুই দেশ ও বিশ্বের জনগণের কল্যাণে আরও বেশি অবদান রাখবে।

 

চীন-ফ্রান্স সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিকাশের সময় এসেছে

সম্প্রতি ফ্রান্সের প্যারিসে চীন-ফ্রান্স মানবিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন ফোরামের একাধিক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফোরামে অংশ নেওয়া উভয় দেশের লোকেরা বলেন যে, এ বছর চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬০ বছর, এবং একই সঙ্গে এটি চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে সংস্কৃতি ও পর্যটন বর্ষ। একই সময়, এটি এখনও ফ্রান্সের জন্য একটি অলিম্পিক বছর। দুই দেশের জনগণের মধ্যে জনগণের উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদার করার সময় এসেছে।

ফরাসি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ফ্রান্স-চীন ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যালোজ বলেন: "'৬০ বছর' চীনা সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ অর্থপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি যে, ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে আগামী ষাট বছর আরও চমত্কার হবে।"

ফোরাম চলাকালীন, "চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬০তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য ফটো প্রদর্শনী" অনুষ্ঠিত হয়। ৬০টি প্রদর্শনী ছবির মাধ্যমে, অংশগ্রহণকারীরা গত ৬০ বছরে চীন-ফরাসি রাজনৈতিক বিনিময়, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং অন্যান্য খাতের মূল্যবান মুহূর্ত এবং বিস্ময়কর গল্পগুলি পর্যালোচনা করেছেন।

ঐতিহাসিক ছবিগুলো ফ্রান্স-চীন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অ্যালাইন রাবার আবেগ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, "আমি প্রায় ৪৫ বছর ধরে ফ্রান্স-চীন বিনিময়ের সাথে জড়িত আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে ফটো প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত অনেক ইভেন্টের অভিজ্ঞতা নিয়েছি, এবং আমি সন্তুষ্ট বোধ করছি যে আমি আমার অংশটি করেছি।"

অংশগ্রহণকারীরা উল্লেখ করেছেন যে, চীন-ফ্রান্স সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং সমতা, পারস্পরিক শিক্ষা, সংলাপ এবং সহনশীলতার সভ্যতাগত ধারণাগুলিকে মূর্ত করে তোলে।

ফরাসি সিনোলজিস্ট রেমি ম্যাথিউ বলেছেন যে ফরাসি লোকেরা যারা চীনা সংস্কৃতি অধ্যয়ন করে তারা কেবল সিনোলজিস্টদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি কনফুসিয়াসের বিখ্যাত উক্তি উদ্ধৃত করেছেন, "যারা শিখতে জানে তারা ততটা ভালো নয় যারা শিখতে ভালোবাসে; যারা শেখা পছন্দ করে তারা ততটা ভালো নয় যারা শেখার আনন্দ পায়।" সাংস্কৃতিক বিনিময় "দুই দেশের জনগণকে আনন্দ ভাগাভাগি করার অনুমতি দিয়েছে।"

"গত ২০ বছরে, আমি কখনই চীনা শিল্পীদের সাথে আমার যোগাযোগ বন্ধ করিনি। আমাদের সম্পর্ক সর্বদাই পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া এবং সহনশীলতার সাথে এবং শৈল্পিক অভিব্যক্তির বিভিন্ন রূপকে অনুপ্রাণিত করেছে।" ফ্রান্সের আর্টিস্ট হাউস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রেমি ম্যাথিউ বলেন: "দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০ বছর উপলক্ষ্যে এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে।"

 এ বছর চীন-ফ্রান্স সংস্কৃতি ও পর্যটন বছর। প্যারিসের ৭তম অ্যারোন্ডিসমেন্টের ডেপুটি মেয়র জোসিয়ানা গোল্ড জানতে পেরেছিলেন যে চীন ফরাসি নাগরিকদের ভিসা সুবিধা প্রদান করে এবং চীন ভ্রমণ করতে চায়। গোল্ড বলেছেন: "অলিম্পিক গেমস এক’শ বছর পর প্যারিসে ফিরে এসেছে, এবং এটি ফ্রান্স এবং চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী উদযাপনের সাথে মিলে যায়। এই বছরটি আমাদের জন্য জনগণের মধ্যে বিনিময় বিকাশের একটি ভাল সুযোগ হবে।"

এই ফোরামের সময়, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক রিপোর্ট "চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন এবং উন্নয়ন" প্রকাশিত হয়। আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একজন ফরাসি বিশেষজ্ঞ জিন-পিয়ের পার্গ বলেছেন: "আধুনিক উন্নয়ন শুধুমাত্র পশ্চিমা-শৈলীর 'একক মডেল' নয়। আমাদের জয়-জয় এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তুলতে হবে।"

ফোরামে উপস্থিত কিছু চীনা প্রতিনিধি চীনের নতুন উন্নয়ন তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে বিশ্বকে যে নতুন সুযোগ প্রদান করে সে বিষয়েও কথা বলেছেন।

প্রধান ফোরামের পরে, "চীনের সুযোগ·ফ্রান্সের সাথে সংলাপ" সেলুন সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়। গুও জাংলং ভিডিও ওয়েবসাইট বিলিবিলির একজন ব্লগার। তিনি সেমিনারে ফ্রান্সে ছুরি-কাটা নুডল রেস্তোরাঁর একটি চেইন শুরু করার বিষয়ে তার গল্প শেয়ার করেছেন। তিনি বলেছিলেন যে সোশ্যাল মিডিয়াতে তার রেকর্ডগুলি চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও ঘনিষ্ঠ করেছে এবং তিনি অব্যাহতভাবে ফ্রান্সে চীনা গল্প বলতে ইচ্ছুক।

চীন-ফরাসি মানবিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন ফোরাম সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি, ফ্রান্সে চীনা দূতাবাস এবং ফ্রান্সের পাবলিসিস গ্রুপ দ্বারা সহ-সংগঠিত। এর থিম হল "জনগণের মধ্যে-সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান গভীর করা এবং 'চীন-ফরাসি চেতনা' প্রচার করা"।

চীন ও ফ্রান্সের সরকারি কর্মকর্তা, জাতিসংঘের সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক মূলধারার মিডিয়ার প্রধান, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক চেনাশোনা থেকে আসা লোকজন সহ প্রায় ২৫০জন এই ফোরামে অংশ নেন।

 ফ্রেঞ্চ ও চীনা জাদুঘরের মধ্যে সহযোগিতা ও পারস্পরিক শিক্ষা জোরদার করতে চাই: ফ্রান্সের গুইমেট মিউজিয়ামের পরিচালক লিনজের সাথে সাক্ষাত্কার

ফ্রান্সের গুইমেট ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ এশিয়ান আর্টের পরিচালক ইয়ানিক লিনজ সম্প্রতি প্যারিসের সিনহুয়া নিউজ এজেন্সিতে একান্ত সাক্ষাত্কার দেন। তিনি চীনা জাদুঘর নির্মাণের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, গুইমেট মিউজিয়াম চীনকে বোঝার জন্য একটি "দরজা"। এবং ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৬০তম বার্ষিকীকে একটি সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চান, এটি দুই দেশের জাদুঘরের মধ্যে সহযোগিতা ও পারস্পরিক শিক্ষা শক্তিশালী করার একটি সুযোগ।

 

গুইমেট মিউজিয়ামে এশিয়ান শিল্পের একটি বড় সংগ্রহ রয়েছে। প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট শিরাক একবার বলেছিলেন যে তিনি যখন ছোট ছিলেন, তিনি প্রায়শই গুইমেট মিউজিয়াম পরিদর্শন করতেন এবং চীনা সংস্কৃতি ও শিল্পের প্রতি তীব্র আগ্রহ তৈরি করেছিলেন। শিরাক প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর, তিনি ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়কে সক্রিয়ভাবে প্রচার করেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, গুইমেট মিউজিয়ামে চীন-সংক্রান্ত অনেক কার্যক্রম বা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। লিনজ বলেন: "ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুইমেট জাদুঘর একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অতীতে বা ভবিষ্যতে যাই হোক না কেন, এটি ইউরোপীয়দের জন্য চীনকে বোঝার একটি দরজা।"

এই বছর চীন এবং ফ্রান্সের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী চিহ্নিত করেছে এবং গুইমেট মিউজিয়ামও তার নিজস্ব "ইয়ার অফ চায়না" শুরু করেছে, যেটি সবসময় একটি সাধারণ এবং সহজ সরল চেহারা ছিল এই বসন্তে "লাল"। গুইমেই মিউজিয়াম এ বছর জনসাধারণের জন্য বিভিন্ন চীনা সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, যার মধ্যে চীনা একরঙা গ্লাসড চীনামাটির বাসন প্রদর্শনী, চীনের মিং রাজবংশের সোনার সামগ্রীর প্রদর্শনী, চীনা লোকসংগীত কনসার্ট ইত্যাদি রয়েছে।

লিনজ সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি "৬০ বর্ষের" বিশেষ তাত্পর্য সম্পর্কে ভালভাবে জানেন এবং ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকীর ইতিহাসে গুইমেট জাদুঘর অবশ্যই অংশ নেবে। লিনজের দৃষ্টিতে, "গুইমেইতে চীন বর্ষ" ফরাসি জনগণের কাছে চীনা সভ্যতার বৈচিত্র্য এবং চীনা ইতিহাসের গভীরতা প্রদর্শন কাজ করবে।

২০২৪ চীন-ফ্রান্স সাংস্কৃতিক পর্যটন বছর। লিনজ যখনই চীনে আসেন, তখনই তিনি গ্যালারি দেখেন। চাইনিজ ভিজ্যুয়াল আর্ট তাকে মুগ্ধ করে।

লিনজ বলেছেন যে, আজকের চীন মহান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে, এবং "গুইমট মিউজিয়াম ভবিষ্যতে চীনের সমসাময়িক শিল্প সৃষ্টি প্রদর্শনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।" গত মার্চ মাসে, গুইমেই মিউজিয়াম পুনরুদ্ধার করা দুনহুয়াং- পোশাকের একটি প্রদর্শনী করেছে। একটি ক্যাটওয়াক চীনা জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সৃজনশীল রূপান্তর প্রদর্শন করেছে।

গত এপ্রিলের শুরুতে, লিনজ চীনে একটি ফলপ্রসূ সফর শেষ করেন। সে সময়, তিনি গুইমেট মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে বেইজিংয়ের প্রাসাদ যাদুঘরের সাথে একটি কৌশলগত সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং পরের বছর প্যালেস যাদুঘরের শততম বার্ষিকী যৌথভাবে উদযাপন করার পরিকল্পনা করেন। গত মার্চ মাসে, গুইমেট যাদুঘর দুনহুয়াং একাডেমির সাথে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে; যাতে দুই পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর হয়। লিনজের দৃষ্টিতে, এটি নিশ্চিত করে যে ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় "এ বছর এবং ভবিষ্যতে শক্তিশালী হতে থাকবে।"

 "আমি চীনা জাদুঘরের আধুনিকতার খুব প্রশংসা করি। আমি আমার দলকে বলেছিলাম যে, আপনি যদি একবিংশ শতাব্দীতে একটি জাদুঘর দেখতে চান তবে চীনে যান। সেটা আমাদের রোল মডেল।"

 জিনিয়া/তৌহিদ/ফেই