অবকাঠামো নির্মাণ খাতে চীন-সার্বিয়া সহযোগিতা
2024-05-13 14:47:26

সম্প্রতি সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডের সুরচিন এলাকায়, দেশটির জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়াম প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচ অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং তাঁর ভাষণে প্রকল্পের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  তিনি বলেন, আড়াই বছর পর, সার্বিয়া ইউরোপ, এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্টেডিয়ামগুলোর একটির মালিক হবে; দেশটির জনগণ আরও উচ্চমানের ক্রীড়া স্থাপনা ও পরিষেবার অধিকারী হবে। তিনি সার্বিয়ার উন্নয়নে ব্যাপক সমর্থনের জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান এবং চীনা বন্ধুদের সাথে ‘মহান প্রকল্প’-টির সুষ্ঠুভাবে শেষ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সার্বিয়া জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়াম এবং বিশ্ব মেলা প্রদর্শনীকেন্দ্র—এই দুটি প্রকল্প দেশটির অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে আছে। পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন অফ চায়না (পাওয়ার চায়না) এই দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, দুটি প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ শেষ হবে। তখন, ফুটবল স্টেডিয়ামটি ৫২ হাজার দর্শক ধারণক্ষম হবে। আর, প্রদর্শনীকেন্দ্রটি দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থানগুলোর অন্যতম হবে।  ২০২৭ সালে বেলগ্রেড প্রফেশনাল এক্সপো এই কেন্দ্রেই আয়োজন করার হবে।

ফুটবল স্টেডিয়ামের ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ভুচিচ এবং অন্যান্য অতিথিরা স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে ফুটবলে স্বাক্ষর করে কংক্রিটে রাখেন। এমন বৈশিষ্ট্যময় পদ্ধতিতে স্টেডিয়ামের জন্য ভিত্তি স্থাপন করার লক্ষ্য হলো, প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য শুভ কামনা জানানো।

বিশ্ব মেলা পার্কের নির্মাণ সাইট বেশ ব্যস্ত। এক-একটি বিরাট পাইল মেশিন গর্জে উঠছে। চীন ও সার্বিয়ার নির্মাণকর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করছেন। ড্যানিয়েল গেলমানোভিচ বললেন, তিনি প্রকল্পের বাস্তবায়নকাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পন্ন হবে বলে আশা করেন। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাজ শেষ হবার পর বেলগ্রেডে এটি হবে ল্যান্ডমার্ক স্থাপত্য। এতে শহরের ভাবমূর্তি যেমন উন্নত হবে, তেমনি এখানকার অর্থনীতিও উন্নয়নের ছোঁয়া পাবে। তিনি চীনা প্রতিষ্ঠানকে তাদের জন্য মূল্যবান কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ধন্যবাদ জানান। কারণ, আয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানও ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে স্থানীয়দের।

পাওয়ার চায়না আন্তর্জাতিক কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ছেন কুয়ানফু বলেন, কোম্পানিটি সার্বিয়ার বাজারে পরিষেবা উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়। বিশেষ করে, জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়াম ও বিশ্ব মেলা প্রদর্শনীকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নের ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। কোম্পানিটি কার্যকরভাবে প্রকল্পের নির্মাণচুক্তি বাস্তবায়ন করবে এবং সময়মতো কাজ শেষ করবে।

বেলগ্রেডের সড়কে হাঁটলে মাঝে মাঝে ‘২০২৭ বেলগ্রেড প্রফেশনাল এক্সপো’-র বিজ্ঞাপন দেখা যায়। স্থানীয় তথ্যমাধ্যম বলছে, চীনা প্রতিষ্ঠান গভীরভাবে বিশ্ব মেলা পার্ক ও নিকটবর্তী অঞ্চলের নির্মাণকাজে অংশ নিচ্ছে। সার্বিয়ার ভাবমূর্তি উন্নয়নে এবং বেলগ্রেডের অবকাঠামোর মান উন্নয়নে এ প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।

সার্বিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি মিং বলেন, ‘২০২৭ বেলগ্রেড প্রফেশনাল এক্সপো’র আয়োজন শুধু পুরো সার্বিয়ার জন্য নির্মাণ ও পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ মহান আনন্দের ব্যাপার নয়, চীন-সার্বিয়া বাস্তব সহযোগিতা গভীরতর করার জন্য নতুন সুযোগও বটে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ কাঠামোয় চীন-সার্বিয়া অবকাঠামো সহযোগিতার উজ্জ্বল বিষয় অসংখ্য এবং এক্ষেত্রে অনেকগুলো ‘প্রথম’ সৃষ্টি করেছে। বেলগ্রেড জেমুন-বোরকা সেতু হলো ইউরোপে চীনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্মিত প্রথম সেতু; ই ৭৬৩ এক্সপ্রেস হলো ইউরোপে চীনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্মিত প্রথম এক্সপ্রেস সড়কপথ। এ ছাড়া, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এর ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প হিসেবে হাঙ্গেরি রেলপথ ইউরোপে চীনা দ্রুতগতির ট্রেনের প্রথম পদচিহ্ন। (প্রেমা/আলিম)