প্যারিসের অরলি বিমানবন্দরে প্রেসিডেন্ট সি’র লিখিত বক্তৃতা
2024-05-06 16:20:26

মে ৫: প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর আমন্ত্রণে, আমি ফরাসি প্রজাতন্ত্রে আমার তৃতীয় রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করতে পেরে খুব আনন্দিত। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে, আমি দু’বার বসন্তকালে ফ্রান্সে এসে স্থানীয় জনগণের সাথে চীন ও ফ্রান্সের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম এবং ৫৫তম বার্ষিকী উদযাপন করেছি। এবার দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আমি আবার ফ্রান্সের সুন্দর ভূমিতে পা রাখলাম এবং খুব সৌহার্দ্য অনুভব করলাম। চীন সরকার এবং জনগণের পক্ষ থেকে, আমি এই সুযোগে ফরাসি সরকার এবং  জনগণকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানাতে চাই।

প্রাচ্য ও পশ্চিমা সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি হিসেবে, চীন এবং ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে প্রশংসা ও আকৃষ্ট করে আসছে। ফরাসি আলোকিত চিন্তাবিদরা খুব আগে থেকে চীনা সংস্কৃতি অধ্যয়ন শুরু করেন এবং চীনা জনগণ ভলতেয়ার, দিদেরো, হুগো এবং বালজাকের মতো ফরাসি সংস্কৃতিক অসামান‍্য ব‍্যক্তিত্বদের সাথেও পরিচিত। ষাট বছর আগে চীন ও ফ্রান্স স্নায়ুযুদ্ধের বাধা ভেঙ্গে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। বিগত ৬০ বছরে, চীন-ফ্রান্স সম্পর্ক সর্বদা পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে চীনের সম্পর্কের অগ্রভাগে রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য বিভিন্ন সামাজিক ব্যবস্থা দেশগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জয়-জয় সহযোগিতার একটি উদাহরণ স্থাপন করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীন-ফ্রান্স সম্পর্ক উচ্চ স্তরের উন্নয়ন বজায় রেখেছে এবং বিমান চলাচল, মহাকাশ, পারমাণবিক শক্তি, কৃষি, খাদ্য, সবুজ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা নতুন ফলাফল অর্জন অব্যাহত রেখেছে। দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার উন্নতিতে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় ও সহযোগিতা করেছে। চীন-ফ্রান্স সংস্কৃতি ও পর্যটন বর্ষের বিভিন্ন কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। চীন-ফ্রান্স সম্পর্কের উন্নয়ন শুধুমাত্র দুই দেশের জনগণের জন্যই সুফল বয়ে আনেনি, বরং অশান্ত বিশ্বে স্থিতিশীলতা ও ইতিবাচক শক্তির সূচনা করেছে।

সফরের সময়, আমি নতুন পরিস্থিতিতে চীন-ফ্রান্স এবং চীন-ইইউ সম্পর্কের উন্নয়নের পাশাপাশি বর্তমান প্রধান আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যাগুলোর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সাথে গভীরভাবে মতবিনিময় করবো। আমি আশা করি এই সফরের মাধ্যমে আমরা দুই দেশের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে সুসংহত করবো, রাজনৈতিক পারস্পরিক আস্থা বাড়াবো, কৌশলগত ঐকমত্য গড়ে তুলবো, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আদান-প্রদান ও সহযোগিতা আরও গভীর করবো, ইতিহাসের মশাল জ্বালিয়ে সামনের পথ আলোকিত করবো, চীন-ফ্রান্স সম্পর্কের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যত তৈরি করবো, এবং বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে নতুন অবদান রাখবো।

(স্বর্ণা/হাশিম/লিলি)