সম্পাদকীয়: ২০২৪ চোংকুয়ানছুন ফোরাম শুরু; আন্তর্জাতিক উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি বিনিময়ের সমাবেশস্থল হয়ে উঠেছে বেইজিং
2024-04-26 15:24:32

এপ্রিল ২৬: চলতি বছরের চোংকুয়ানছুন ফোরাম ২৫ থেকে ২৯ এপ্রিল চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো ‘উদ্ভাবন: আরও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা’। একশ’রও বেশি দেশ ও অঞ্চলের দেড় শতাধিক সরকারি বিভাগ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এতে অংশ নিচ্ছে। ফোরামে বিভিন্ন ক্ষেত্রের শতাধিক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ এবং হাজার হাজার অতিথি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, সামাজিক অগ্রগতি, জনগণের জীবিকা, টেকসই উন্নয়ন, উন্নয়ন সুযোগ অন্বেষণ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন এবং আরও সুন্দর ও উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য শক্তি ও জ্ঞানে অবদান রাখবেন।

চোংকুয়ানছুন ফোরাম হলো চীনের বিশ্বমুখী বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন বিনিময় ও সহযোগিতার জাতীয় প্ল্যাটফর্ম। এবারের ফোরামে রয়েছে পাঁচটি মূল অংশ - সম্মেলন, প্রযুক্তি বিনিময়, ফলাফল প্রকাশ, অত্যাধুনিক প্রতিযোগিতা এবং সহায়তামূলক কার্যক্রম। ফোরামে সর্বশেষ প্রযুক্তি, নতুন মানের উত্পাদন শক্তি, উন্মুক্ত পরিবেশ, প্রযুক্তি খাতের যোগ্য ব্যক্তি, প্রযুক্তি প্রশাসন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ৬০টিরও বেশি সমান্তরাল ফোরাম আয়োজন করা হবে।

চায়না মোবাইল রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রেসিডেন্ট হুয়াং ইয়ু হং বলেন, এই ফোরাম শুধু বিনিময়ের জন্য একটি বিস্তৃত প্ল্যাটফর্মই যোগায়নি, বরং অনেক সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করেছে এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের উন্নয়ন বেগবান করেছে। তিনি বলেন, খুব উন্মুক্ত এই ফোরাম অনেক আন্তর্জাতিক কোম্পানিকে আকৃষ্ট করেছে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিদরাও এখানে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন এবং সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। তিনি বিশ্বাস করেন, সবাই এখানে আলোচনা ও বিনিময়ের মাধ্যমে অনেক অনুপ্রেরণা পাবেন একং অনেক সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করবেন।

এবারের ফোরামের জন্য ‘উদ্ভাবন: আরও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলা’ এই প্রতিপাদ্য নির্ধারণের লক্ষ্য হলো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ভবিষ্যতের শিল্প উন্নয়নের ধারাকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা, বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবনের নিয়ম ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করা এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবন ধারণা ও উন্নয়ন চেতনা বিনিময় করা।

বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রকাশনা সংস্থা স্প্রিংগার নেচার গ্রুপের চীন শাখার প্রেসিডেন্ট আন নুওজি চায়না মিডিয়া গ্রুপকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, চোংকুয়ানছু সফলভাবে অনেক দেশের বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে এবং মানুষদের জন্য ধারণা বিনিময় ও প্রজ্ঞাগত যোগাযোগের একটি চমত্কার প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। এসব বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে এসেছেন। কেউ প্রযুক্তি খাত থেকে এসেছেন, কেউ সংশ্লিষ্ট খাতের নীতিনির্ধারক আবার আর কেউ সামাজিক বিজ্ঞানের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। এমন বিস্তৃত ক্ষেত্রের মানুষের অংশগ্রহণ ফোরামকে একটি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে। এ কারণে চোংকুয়ানছুন ফোরামের মূল্য অসামান্য।

স্প্রিংগার নেচার গ্রুপ-প্রকাশিত ‘নেচার ইনডেক্স—রিসার্চ সিটিস’ প্রতিবেদন অনুসারে, বেইজিং টানা ৭ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী গবেষণা শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত তথ্য পরিষেবা প্রদানকারী ক্লারিভেট অ্যানাসিটিক্স-প্রকাশিত বিশ্বের উদ্ধৃত বিজ্ঞানীদের তালিকা থেকে দেখা যায়, বেইজিংয়ে উদ্ধৃত বিজ্ঞানীদের সংখ্যা ৪১১জনে পৌঁছেছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে চোংকুয়ানছুন ফোরামের সমান্তরাল ফোরাম ‘বিজ্ঞানের দশক আন্তর্জাতিক ফোরামে’ বেইজিংয়ের ডেপুটি মেয়র মা জুন বলেন, বর্তমানে বেইজিং আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চেষ্টা করছে এবং বিশ্বের উদ্ভাবন নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে উঠেছে এ শহর। বেইজিং প্রযুক্তিগত উন্মুক্ত সহযোগিতা চালিয়ে যাবে, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংস্থা, শিল্প জোট, বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরিষেবা ইত্যাদি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে আকৃষ্ট করবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক উদ্ভাবনের পরিবেশ তৈরি করবে।

(তুহিনা/রহমান)