‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৬৭
2024-04-24 22:57:42


‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা। 

১. শেষ হলো গ্রেটার বে এরিয়ার শিক্ষার্থীদের ডিজাইন প্রতিযোগিতা


  

তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য দ্বিতীয় শেনচেন-হংকং-ম্যাকাও ডিজাইন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। সম্প্রতি দক্ষিণ চীনের কুয়াংতোং প্রদেশের শেনচেনের একটি প্রযুক্তি কেন্দ্রে এই ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১২৮টি পুরস্কার বিতরণ করা হয়।  


এর আগে ‘বিনিময় এবং একীকরণের মাধ্যমে ভবিষ্যত তৈরি করা’ থিমের অধীনে প্রতিযোগিতাটি ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর চালু হয়। এতে শেনচেন, হংকং ও ম্যাকাওয়ের ৬৪৭টি স্কুলের লক্ষাধিক শিক্ষক এবং ছাত্র অংশগ্রহণ করেন এবং ৬ হাজার ৭৮টি ডিজাইন জমা দেওয়া হয়।

 

এসময় গ্রেটার বে এরিয়া তথা বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের এর ছাত্রদের ঐক্য ও প্রাণশক্তি প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানের সময় বিভিন্ন ধরনের পারফরমেন্স মঞ্চস্থ করা হয়।


প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদক: ফয়সল আবদুল্লাহ

 

২. ক্যারিয়ার পরিকল্পনা প্রতিযোগিতায় ৯ মিলিয়নেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে

 

চীনে কলেজপড়ুয়া ছাত্রদের নিয়ে ক্যারিয়ার পরিকল্পনা শীর্ষক একটি প্রতিযোগিতায় নিবন্ধন করেছিল ৯৫ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য ৬০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ও ৮০জন শিক্ষক ফাইনালে উঠেছে। সম্প্রতি কলেজ এবং প্রাদেশিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে এবং শীঘ্রই শুরু হবে জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার ফাইনাল পর্ব।  


এ প্রতিযোগিতার লক্ষ্য হলো যারা স্নাতক সম্পন্ন করেনি তাদের উন্নয়ন এবং স্নাতকধারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। আবার যারা কলেজে পড়ছে তারা এর মাধ্যমে পাবে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের নির্দেশনা।

  

প্রদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক বিজয়ীদের মধ্যে একজন ওয়েনচৌ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইউতি চেচিয়াং। তিনি বলেন, 

‘আমি বেশি যা অর্জন করেছি তা হলো সাহস ও দৃঢ়তা। যখন হেরে গিয়েছিলাম, তখন প্রতিযোগিতাটি  আমার ক্যারিয়ারের লক্ষ্য সম্পর্কে আমাকে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলেছিল। আমি অপারেশন অফিসার হিসেবে ভবিষ্যতে মৎস্য উৎপাদন শিল্পে কাজ করতে চাই। আমি এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে  বাইরের অনেক ছাত্রদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে তাদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পেরেছি যা আমার ব্যক্তি জীবনকে প্রভাবিত করবে।’

 

এই প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্বের  প্রশিক্ষণ প্রতিযোগিতার ফাইনাল ২০ এপ্রিল ও ১০ মে গ্রোথ কনটেস্ট ফাইনাল এবং ১১ মে কর্মসংস্থান প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।  

ইস্ট চায়না নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইয়াং চুসিয়ান এর মতে ’এ প্রতিযোগীদের লক্ষ্য যখন তখন বদলে যেতে পারে এবং ক্যারিয়ারও  আলাদা হতে পারে। তবে আমি  প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজের জীবনের লক্ষ্য স্থির করার চেষ্টা করছি ‘


চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ ছাত্র বিভাগের উপ-পরিচালক উ আইহুয়া জানালেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য জীবনবৃত্তান্ত লেখা থেকে শুরু করে লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউর মুখোমুখি হওয়া পর্যন্ত চাকরি খোঁজার প্রক্রিয়ায় সহায়তা এবং সামগ্রিক ক্যারিয়ারের লক্ষ্য অর্জনে কাজ করবে এই প্রতিযোগিতা।’

  

এই কর্মকর্তা আরও বললেন, এ ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তরুণরা তাদের চাকরি খোঁজার ব্যাপারে আরও দক্ষ হবে। স্নাতকদের জন্য ইন্টার্নশিপের সুযোগও আসতে পারে এতে। ধাপে ধাপে শিক্ষকদের জন্য আরও ভালো কর্মপরিকল্পনা এবং কিভাবে শিক্ষাদানের মানসম্মত কোর্স তৈরি করা যায় সেই সম্পর্কেও পরামর্শ দেওয়া হয় এ প্রতিযোগিতায়।


প্রতিবেদক : রফিক বিপুল 

সম্পাদক: ফয়সল আবদুল্লাহ 


৩. হানফু মেকআপ শিল্পে তরুণদের সম্পৃক্ততা 

 

হান চীনাদের পরিধান করা একটি ঐতিহ্যবাহী পোশাক হানফু। এই পোশাকের আছে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এই পোশাকের সঙ্গে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের বা ক্লাসিক্যাল মেকআপের আছে গভীর সম্পর্ক। কোনো বিশেষ আয়োজনে হানফু পরলে প্রয়োজন হয় ভারি মেকআপেরও। তবে সেই মেকআপের ধরনটা হয় ভিন্ন। সাজের বহিঃপ্রকাশও তাই আলাদা। 


হানফু মেকআপ আর্টিস্ট শ্যুয়ে সিয়ংচেন। চীনে হানফু মেকআপ নিয়ে অনেক শিল্পী কাজ করছেন। সিয়ংচেনও তাদের একজন। 

হানফুর বিশ্ব নিয়ে সিজিটিএন এর বিশেষ প্রোগ্রাম "কলিং অল হানফু ট্যালেন্টস"।  এই সৌন্দর্য শিল্পীর গল্পটা ওই তথ্যচিত্রেরই অংশ।  এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হলো হান জনগণের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হানফুর পেছনের গল্প তুলে ধরা। 

 

থাং, সং এবং মিং রাজবংশের চীনের নারীরা হানফু পরার সময় কীভাবে সাজগোজ করতেন, কী উপাদান ব্যবহার করতেন, কীভাবে সেই পুরনো ঐতিহ্যগুলোকে আধুনিক ফ্যাশন আকারে তরুণ প্রজন্মের সামনে উপস্থাপন করা যায় এসব নিয়ে গবেষণা করছেন এই শিল্পী। কারণ নতুন প্রজন্মের কাছে নান্দনিক এই উত্তরাধিকারটি পোঁছে দিতে চান শ্যুয়ে সিয়ংচেন।


শিক্ষানবিশদের জন্য হানফুর ওপর প্রশিক্ষণ কোর্সও চালু করেছেন সিয়ংচেন। আধুনিক ফ্যাশনকে প্রাধান্য দিয়েই তাদের ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প শেখাচ্ছেন তিনি।

  

২০০৭-০৮ সালের দিকে এই শিল্পী পেশাদার হানফু মেকআপ শেখা শুরু করেন। পরে ২০১১-১২ সালের দিকে এই পেশার প্রতি তার গভীর আগ্রহ জন্মায়। তিনি চীনের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছেন। এমনকি বিদেশেও অনেক ইভেন্টে কাজ করেছেন। হানফু একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্টেও প্রদর্শিত হতে পারে, যা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল তার কাছে। গত ১০ বছরে পৃথিবীর সবর্ত্রই বিশাল পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।    

 


চীনারা এখন তাদের দৈনন্দিন পোশাকেও হানফুকে অন্তর্ভুক্ত করছে। তারা বলছে এটি তাদের ঐতিহ্যের প্রতি উপলব্ধি বাড়িয়ে দেয় এবং শেকড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে।


প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদক: ফয়সল আবদুল্লাহ 


৪. গাজার তরুণদের ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরতে হবে: জাতিসংঘে চীনা দূত



গাজায় তরুণরা যে ভয়াবহ পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে সেটা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন জাতিসংঘে সদ্য নিযুক্ত চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি ফু ছোং। সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণদের ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উন্মুক্ত বিতর্কের সময় ফু এ কথা বলেন। 

  

গাজায় চলমান সংঘাতের গুরুতর প্রভাব তুলে ধরে ফু উল্লেখ করেন, ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে অগণিত যুবকও ধ্বংসস্তূপে হারিয়ে গেছে। ফু জানালেন, তারা শিক্ষক, ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ার ও সর্বোপরি সমাজের মেরুদণ্ড হতে পারত। কিন্তু যুদ্ধ তাদের জীবন গ্রাস করেছে।



আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।

  

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী  

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল 

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী