চীন ও হন্ডুরাসের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সাংবাদিক হন্ডুরাসের রাজধানী টেগুসিগালপা থেকে গাড়িতে করে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের এল পারাইসো প্রদেশের একটি কফি প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় যাচ্ছিলেন।
প্রায় ১২০ কিলোমিটারের যাত্রা শুরুর দিকে পাহাড়ে উঠতে হয়। পাহাড়ে উঠার কাঁচা রাস্তা খানাখন্দে ভরা। মাত্র ২৮ কিলোমিটার পথ যেতে ১ ঘন্টা ১০ মিনিট লেগে যায়। পাহাড় পার হওয়ার পর সমতল রাস্তা।
কফি কারখানায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় দুপুর হয়ে যায়। পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণের জন্য দশ-বার জন কর্মী কফি বীজ ভরা বস্তা নির্দিষ্ট জায়গায় বহন করছেন।
প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল ব্যক্তি সান্তোস আলবার্তো গাইতান জানান, প্রত্যেক বস্তার ওজন ৬০ কেজি। কফি সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচু এবং এবড়ো-খেবড়ো পাহাড়ি জমিতে চাষ করা হয় বলে যন্ত্র বা সরঞ্জামের মাধ্যমে বড় পরিমাণে তোলা ও বহন করা কঠিন হয়। ফলন ঋতুতে প্রচুর মানবশক্তি দরকার হয়।
কফি হন্ডুরাসের প্রধান রপ্তানিজাত কৃষিপণ্য। কফি শিল্প দেশটির কৃষি উত্পাদনের প্রায় ৩০ শতাংশ। দেশটির কফি সমিতির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সারা দেশের ১৮টি প্রদেশের মধ্যে ১৫টিতে কফি চাষ হয়। ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি পরিবার কফি উত্পাদনের সঙ্গে যুক্ত। তাদের মধ্যে ৯২ শতাংশ ছোট উত্পাদনকারী এবং ৭ শতাংশ মাঝারি উত্পাদনকারী। তার মানে, দেশটির কফি শিল্প প্রধানত বিক্ষিপ্ত ছোট কৃষি ব্যবস্থাপনা। কফি শিল্পের উন্নয়ন অনেক স্থানীয় জনসাধারণের জীবিকার সঙ্গে জড়িত।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লাতিন আমেরিকার কফি চীনা ভোক্তাদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গত বছর দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর হন্ডুরাসের কফি বীজের প্রথম চালান চীনা বাজারে প্রবেশ করে। এটি হন্ডুরাসের বৈশিষ্ট্যময় পণ্যে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশটির কফি চীনের বেশ কয়েকটি ই-কর্মাস প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হচ্ছে।
চীন ও হন্ডুরাসের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা উভয় পক্ষের জন্য উপকারী সহযোগিতার জানালা খুলে দিয়েছে। পাশাপাশি হন্ডুরাসের জনগণের জন্য কল্যাণ ডেকে এনেছে।
এল পারাইসো প্রদেশের পার্লামেন্ট সদস্য জন মিল্টন গার্সিয়া আশা করেন, চীনের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেশটির আরও বেশি কফি চীনের অতিবৃহৎ বাজারে প্রবেশের সুযোগ হবে। ফলে দেশটির কফি চাষ ও প্রক্রিয়াকরণে যুক্ত মানুষের জীবন আরও সুন্দর হবে। (প্রেমা/রহমান)