এপ্রিল ২১: “মার্কিন রাজনীতিক মুখে বলেন, ‘দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব’-কে সমর্থন দেন, কিন্তু বাস্তবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন দিতে চান না”, “যুক্তরাষ্ট্র আবারও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে বৃহত্তম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে”...সম্প্রতি জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক সদস্যপদ চেয়ে ফিলিস্তিনের আবেদনে মার্কিন ভিটোর প্রতিক্রিয়ায়, বিশ্বব্যাপী নেটিজেনরা এ ধরনের সমালোচনামূলক বাক্য ব্যবহার করেন। চীন, মিসর, আয়ারল্যান্ডসহ একাধিক দেশ এতে হতাশা প্রকাশ করেছে। এদিকে, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের এক ঘোষণায় যুক্তরাষ্টের এহেন আচরণের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মার্কিন সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির পথে বাধা সৃষ্টি করেছে।
১৮ এপ্রিলের মার্কিন আচরণ ফিলিস্তিনি জনগণের কয়েক দশকের স্বপ্ন নিষ্ঠুরভাবে আবারও ভেঙ্গে দিয়েছে। এটা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে যু্ক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামি ও দ্বৈতনীতির প্রমাণ। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ চলছে। অথচ এক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্র তার যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। উল্টো, ফিলিস্তিনি জনগণ যখন নিজেদের বৈধ অধিকার দাবি করেছে, তখন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিহীনভাবে তাকে বাধা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাসী সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট ভারসাম্যহীন নীতি ইতোমধ্যে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার বৃহত্তম বাধাতে পরিণত হয়েছে।
যে-দেশ মন থেকে সত্যিকারের অর্থে ‘দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব’-কে সমর্থন দেয়, সে-দেশ জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের আনুষ্ঠানিক সদস্যপদের আবেদনের বিরোধিতা করতে পারে না। মার্কিন রাজনীতিকরা মুখেই বলেন ‘দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব’-এর কথা, কিন্তু বাস্তবে ফিলিস্তিনিদের আশা ভঙ্গের কারণ হন।
বিশ্লেষকরা বলেন, একদিকে মার্কিন সরকার সবসময় ইসরায়েলকে নিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মনে করে আসছে। এজন্য সবসময় বিনাশর্তে ইসরায়েলের পাশে এসে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যায়ও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বের ভূমিকা রাখতে চায়। এই কারণে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ভারসাম্যপূর্ণ নীতি অনুসরণ করা অসম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের চোখে, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ নয়, নিজের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, ফিলিস্তিনের আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়া, ‘দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব’ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে না। তাহলে, এ মার্কিন প্রতিনিধির কাছে বিশ্ববাসীর প্রশ্ন: ‘দুই রাষ্ট্র তত্ত্ব’ বাস্তবায়নের জন্য কী কী কাজ সহায়ক হবে? ফিলিস্তিনের জনগণের ভাগ্য ও ভবিষ্যতের বিরুদ্ধে কেউ ভিটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না।
(আকাশ/আলিম/ফেইফেই)