এপ্রিল ১৯: এ বছরের চীন আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলার আন্তর্জাতিকীকরণ আগের চেয়ে বেড়েছে অর্থাৎ এবার বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। একাত্তরটি দেশ ও অঞ্চলের ৪ হাজারেরও বেশি ব্র্যান্ড এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এবারের মেলায় ১৪৬২টি নতুন পণ্য এবং ৮৪টি দেশি ও বিদেশি ব্র্যান্ড উন্মোচি হয়। ব্রিটেন, মঙ্গোলিয়া ও মালয়েশিয়া প্রথম বারের মতো মেলায় অংশগ্রহণ করে। চীনে ব্রিটিশ উপ-বাণিজ্য দূত সোহেল শেখ বলেন, “চীনা বাজার সুযোগে ভরপুর এবং প্রতিযোগিতাশীল। ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো এবারের মেলায় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। এবারের অনুষ্ঠানে আমি এ বিষয় তুলে ধরবো।”
চীনে আয়ারল্যান্ডের দূতাবাসের ট্রেড কাউন্সেলর জোসেফ কিটিং বলেন, তিনি চতুর্থ বারের মতো চীন আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন। চীনের সঙ্গে তাঁর দেশের সহযোগিতার সম্ভাবনা অনেক। ফরাসি ফ্যাশন ব্র্যান্ড সেরুটি ১৮৮১’র প্রধান বিপণন কর্মকর্তা আউডে পেশেউক্স বলেন, কয়েক দশক আগে তারা চীনা বাজারের সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে পারে এবং চীনা বাজারে প্রবেশ করে। চীনা বাজার অন্বেষণ তাদের ঐতিহ্য।
বাজার হলো সবচেয়ে দুষ্প্রাপ্য সম্পদ। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য চীনের বিশাল আকারের বাজার মানে যথেষ্ট আয়। বর্তমান চীন মহামারী-পরবর্তী পুনরুদ্ধার থেকে বেরিয়ে ক্রমাগত প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ভোগের অবদান ছিল ৭৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এপ্রিল মাসে চীনের খুচরা শিল্পের সেন্টিমেন্ট সূচক হলো ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ। জার্মান ক্লিনিং ব্র্যান্ড কার্চার জানায়, চীনে প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ পণ্যের বিক্রি প্রতি বছর বাড়ছে।
বর্তমান চীনের মধ্যম আয়ের জনসংখ্যা ৪০ কোটিরও বেশি। অনুমান করা হচ্ছে, ২০৩৫ সালে এ সংখ্যা ৮০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ব্রিটিশ ঘড়ি সম্পর্কিত ব্র্যান্ড রিপোর্ট’র সিইও অলিভার রিপোর্ট বলেন, এ মেলা তাদেরকে বিশাল বাজার এনে দিতে সাহায্য করবে। ইতালির গাড়ি ব্র্যান্ড ডুকাটি’র চীনের সিইও লুকা বাতিলোরো মনে করেন, চীনে অনেক তরুণ ভোক্তা রয়েছে, যারা জীবন উপভোগ করতে পছন্দ করে। বিশ্বাস করা যায়, চীনা বাজার বাড়তে থাকবে।
বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করে, চীনা বাজার তাদেরকে অবিচ্ছিন্ন উদ্ভাবন শক্তি যোগাচ্ছে। এবারের ভোগ্যপণ্য মেলায় উন্মোচিত অনেক নতুন পণ্যে চীনা প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।
জার্মান কার্চার উন্মোচিত নতুন লিথিয়াম-আয়ন ফ্যাব্রিক ক্লিনিং মেশিন এবং স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স চীনা দল তৈরি করেছে। সিঙ্গাপুরের গৃহস্থালী পণ্য ব্র্যান্ড ওসিম’র প্রতিনিধি বলেন, “চীনা ভোক্তাদের ডিজিটালাইজেশন ও সবুজ ব্যবহারের চাহিদা বাড়ছে। আমরা কাস্টমাইজড পণ্য দিয়ে তাদের চাহিদা পূরণ করবো।”
এছাড়াও চীনের উন্মুক্ত ও বিশেষ ব্যবসায়িক পরিবেশ বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা যোগাচ্ছে। মার্কিন ব্র্যান্ড কোচ’র চীন শাখার চেয়ারম্যান লিলিয়ানা লুসিওনি জানান, এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে তাঁর প্রতিষ্ঠান হাইনানে একটি ডিউটি-প্রি শপ খুলেছে। চীনে আরও বেশি শপ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
এদিকে ১৩৫তম চীনের আমদানি ও রপ্তানি পণ্য মেলা অর্থাৎ ক্যান্ট ফেয়ার বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। চীন বিভিন্ন মেলার মাধ্যমে আরও বেশি বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে। (ছাই/রহমান)