১৪তম বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব শুরু
2024-04-18 14:41:59


এপ্রিল ১৮: ১৪তম বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব আজ (বৃহস্পতিবার) বেইজিংয়ের ‘হুয়াই রৌ’ জেলার ‘ইয়ান ছি হু’তে শুরু হয়েছে। ‘থিয়ান থান পুরস্কার’ বিজয়ী নির্বাচন, বেইজিং প্রদর্শনী, বেইজিং পরিকল্পনা সংক্রান্ত থিম ফোরাম, বেইজিং বাজার, চলচ্চিত্র কার্নিভাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের চলচ্চিত্র উত্সবসহ শতাধিক অনুষ্ঠান পৃথক পৃথকভাবে এবারের চলচ্চিত্র উত্সবকে ঘিরে আয়োজিত হবে।

চলচ্চিত্র বিনিময়ের মাধ্যমে বৈশ্বিক সভ্যতার পারস্পরিক শেখার সেতু গড়ে তোলা হয়েছে। ১৪ বছর পার করে বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব ইতোমধ্যেই জাতীয় সাংস্কৃতিক বিনির্মান এবং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শক্তিশালী দেশ নির্মাণকাজকে এগিয়ে নেয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এই চলচ্চিত্র উত্সবকে দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্রের সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং পারস্পরিক শেখার জানালা হিসেবে অভিহিত করা হয় এবং এটি বিশ্বের কাছে বেইজিংয়ের দেওয়া আরেকটি সুন্দর ‘কার্ড’।

১৯০৫ সালে ‘তিং চুন শান’ চলচ্চিত্র বেইজিংয়ের ‘ছিয়ান মেন’ ভবনে প্রদর্শিত হয়, যা প্রাচীন রাজধানীকে চলচ্চিত্রের সাথে একটি অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ করে।

২০১১ সালে বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবের সূচনা হয়। বিগত ১৪ বছরে বৈশ্বিক চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক ফলাফল অর্জন করেছে বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব। এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার হয়েছে এবং আন্তঃদেশীয় ও আন্তঃসংস্কৃতি চলচ্চিত্র প্রচারকে এগিয়ে নেওয়া হয়েছে, চীনা চলচ্চিত্রের উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়নেও অবদানও রেখেছে এটি।

গোটা চীনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে বেইজিংয়ে সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র সম্পদ এবং শিল্প উন্নয়নের ভিত্তি রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বেইজিং পর্যায়ক্রমে ‘ছাংচিন হু’ , ‘লিউ লাং তি ছিউ ২’ এবং ‘তি আরশি থিয়াও’সহ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র  তৈরী করেছে, চলচ্চিত্র নির্মাণের সংখ্যায়ও সারা দেশে শীর্ষে রয়েছে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেইজিং শহরে ‘নতুন সময়পর্বে রাজধানীর চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ’ প্রকাশিত, এতে অর্থ সহায়তা দেওয়া থেকে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাণ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্প থেকে বৈজ্ঞানিক নব্যতাপ্রবর্তনের গভীর সম্পর্কোন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া এবং চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শ্যুটিং পরিষেবা সুনিশ্চিতকরণ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে ১২টি পদক্ষেপ প্রস্তাবিত হয়েছে। এটি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পের উন্নয়নে শক্তিশালী সমর্থন দিয়েছে।

পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বর্তমানে বেইজিংয়ে নিবন্ধিত চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন সংস্থার সংখ্যা ২০ হাজারেরও বেশি, যা গোটা চীনের মোট পরিমাণের ৪০ শতাংশ। রাজধানীতে থিয়েটার চেইনের সংখ্যা ৩০টি, শহুর সিনেমা হলের সংখ্যা ৩১৩টি, পর্দার সংখ্যা ২ হাজার ২৭১টি, এবং আসনের সংখ্যা ২ লাখ ৯২ হাজার ৬ শ’রও বেশি। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে বেইজিংয়ের চলচ্চিত্রের মোট বক্স অফিস আয়ের পরিমাণ ৭০ কোটি ইউয়ানেরও বেশি, যা সারা দেশের সকল শহরকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থানে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বেইজিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব চালু হওয়ার পর অতিথির সংখ্যা, অংশগ্রহণকারী চলচ্চিত্রের গুণগত মান এবং আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী শক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে উন্নয়ন হয়েছে। ‘থিয়ান থান পুরস্কার’ চিহ্নিত হওয়ার পর, বিশ্বের ৯০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার চলচ্চিত্র এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।

২০২৪ সাল হচ্ছে চীন ও ব্রাজিলের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী, এবারের চলচ্চিত্র উত্সবে প্রধান অতিথি দেশ হিসেবে ব্রাজিলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, এতে প্রথমবারের মতো কূটনীতিকের সিনেমার মরসুম  এবং ‘চলচ্চিত্র উত্সবের আন্তর্জাতিক সভাকক্ষ’ যোগ করা হয়েছে। শিল্প মাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্র, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের বিনিময় এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়েছে। (ওয়াং হাইমান/হাশিম/স্বর্ণা)