এপ্রিল ১৬: সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, চীনের প্রধান অর্থনৈতিক সূচকগুলো অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে প্রতিফলিত হচ্ছে যে, চীনা অর্থনীতি অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে এবং এর অভ্যন্তরীণ চালিকাশক্তি বেড়েছে।
চীনা জাতীয় তথ্যকেন্দ্রের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, গত মার্চে দেশের বিনিয়োগ সূচক বেড়েছে বার্ষিক ৫.৮ শতাংশ। বৃদ্ধির গতি দ্রুত। এর মধ্যে উত্পাদন ক্ষেত্রের সূচক ব্যাপকভাবে বেড়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে উত্পাদন শিল্পে বিনিয়োগের সূচক বেড়েছে বার্ষিক ১৩.৩ শতাংশ; মার্চ মাসে বেড়েছে ৪০.৬ শতাংশ। মার্চ মাসে সরঞ্জাম রূপান্তর, পুনর্নবীকরণ ও পরিবর্তন সম্পর্কিত বিনিয়োগের সূচক বেড়েছে ৬৫.৫ শতাংশ।
গত মার্চ মাসে অবকাঠামো ও গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশব্যাপী নির্মাণসামগ্রীর বহুমুখী পরিচালন হার ৫৫.৫২ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
এদিকে ভোগের পরিমাণও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সারা দেশে প্রধান ব্যবসায়িক এলাকায় সংশ্লিষ্ট সূচক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে গত মার্চ মাসে ১৭.৭ শতাংশ বেড়েছে। অফলাইনে ভোগের পরিমাণ বেড়েছে। চীনের ধারাবাহিক ভোগব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার কারণে, প্রধান ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর অর্ডারের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে, ‘চীনের পরমাণু শক্তি উন্নয়ন প্রতিবেদন, ২০২৪’ গতকাল (সোমবার) প্রকাশিত হয়। পরিসংখ্যানে বলা হয়, চীনের পারমাণবিক শক্তি ইউনিট স্থায়ী নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলভাবে কার্যকর হচ্ছে। ২০২৩ সালে চীনের পাঁচটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্প অনুমোদন করা হয় এবং পাঁচটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুত ইউনিট চালু করা হয়। এ পর্যন্ত চীনের ২৫টি পারমাণবিক বিদ্যুত ইউনিট নির্মিত হচ্ছে। মোট ইনস্টল করা ক্ষমতা ৩০.৩ মিলিয়ন কিলোওয়াট হবে। নির্মাণাধীন প্রকল্পের সংখ্যা ও ইনস্টল ক্ষমতা—দুই দিক দিয়ে বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে চীন।
চীনের আমদানি ও রপ্তানি পণ্যমেলা তথা কুয়াংচৌ মেলা সোমবার শুরু হয়। মেলা চলবে ৫ মে পর্যন্ত, অনলাইন ও অফলাইনে তিন দফায়। এবারের মেলাস্থলের আয়তন ১৫.৫ লাখ বর্গমিটার, প্রদর্শনী স্টল প্রায় ৭৪ হাজারটি, অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার। এটি নতুন রেকর্ড।
একই দিন সিনচিয়াংয়ের ইনিং ও কাজাখস্তানের আলমাটির মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমান রুট আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। এখন সিনচিয়াংয়ের উরুমছি ও কাশগরের পর ইনিংও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মর্যাদা পেলো। উরুমছি শুল্ক বিভাগ যাত্রীদের আরও দক্ষ ও সুবিধাজনক সেবা দিচ্ছে।
চীনের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চিয়াংসি প্রদেশের রুইজিন ও কুয়াংতং প্রদেশের মেইচৌর মধ্যে রুইমেই রেলপথের দীর্ঘতম সেতু মিয়ানশুয়েই-এর নির্মাণকাজ সোমবার শুরু হয়েছে। রেলপথটি ২০২৭ সালের জুন মাসে চালু হবে। চালু হওয়ার পর দক্ষিণ চিয়াংসি ও উত্তর কুয়াংতংয়ের পুরোন বিপ্লব এলাকার পরিবহনব্যবস্থা ব্যাপকভাবে উন্নত হবে।
বিভিন্ন সূচক ও পরিসংখ্যান থেকে প্রতিফলিত হচ্ছ যে, চীনা অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ চালিকাশক্তি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং চীনা অর্থনীতি অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। (ছাই/আলিম)