মার্চ ২৬: প্রশান্ত মহাসাগরের ছোট দ্বীপদেশ নাউরু বিষুবরেখা থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরে ‘স্বর্গ দ্বীপ’ নামেও পরিচিত। এর প্রাকৃতিক পরিবেশ ফসল চাষের জন্য উপযুক্ত নয়। সবজি ও ফল সাধারণত আমদানি করা হয়। তবে চীনের জুনকাও প্রযুক্তি শিগগিরই এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের কাছে চীন-নাউরু সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরবো।
এ বছরের বসন্তকালে নাউরুর পরিবেশ পরিচালনা ও কৃষিমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হেস-টেক্কে ফোয়েলেপ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোর জুনকাও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ ক্লাসে নাউরুর প্রথম ছাত্র হয়েছেন। জুনকাও প্রযুক্তির উদ্ভাবক ৮০ বছর বয়সী অধ্যাপক লিন চান সি ফিজিতে গিয়ে তাঁদেরকে প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষা দেন।
গত জানুয়ারিতে চীন নাউরু’র সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করেছে। দু’দেশের জনগণ যৌথভাবে মৈত্রীর নতুন ইতিহাস শুরু করেছে।
গত ২৫ মার্চ চীন সফরের সময় নাউরু’র প্রেসিডেন্ট ডেভিড রানিবোক আদিয়াং চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠককালে সি বলেন, চীন-নাউরু সম্পর্ক উন্নয়নে দু’দেশের জনগণের ভালো হবে। আদিয়াং চীনা অভিজ্ঞতা থেকে শেখা এবং চীনের সঙ্গে ফলপ্রসূ ও পারস্পরিক কল্যাণের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উন্নয়নে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান।
দুই নেতা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে নির্মাণ, বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কৃষির ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে ফোয়েলেপ ফিজিতে সপ্তাহব্যাপী প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ জুনকাও প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি স্থানীয় জুনকাও প্রযুক্তি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, অনুশীলনে মাশরুম চাষ শিখেছেন, মাশরুম সংগ্রহ করেছেন এবং টেকসই উন্নয়ন কৌশল বুঝেছেন এবং মূল্যবান অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন।
কোর্সের সময় চীনের জাতীয় জুনকাও প্রকল্প প্রযুক্তি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী লিন চান বলেন, এ প্রযুক্তি সরলতা ও প্রমিতকরণ অর্জন করেছে। যেকোন পরিবার এ শিল্পে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং উন্নীত করতে পারে। এর খরচ কম, অর্থনৈতিক সুবিধা উচ্চ এবং পরিবেশগত সুবিধা বেশি। এবারের প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হলো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোয় ব্যাপকভাবে জুনকাও প্রযুক্তি উন্নীত করা এবং আরো বেশি উন্নয়নশীল দেশকে দারিদ্র্যবিমোচন ও কৃষির টেকসই উন্নয়নের সহায়তা করা।
যখন সি চিন পিং ফুচিয়ান প্রদেশে কাজ করতেন, তখন তিনি ব্যাপকভাবে জুনকাও বিজ্ঞানগত গবেষণার কাজ উন্নয়ন করতেন। তিনি নিংসিয়াও হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলকে সহায়তা পরিকল্পনায় জুনকাও প্রযুক্তি ভূমিকা ত্বরান্বিত করেছেন। তাঁর উদ্যোগে জুনকাও প্রযুক্তি সহায়ক পরিকল্পনা হিসেবে পাপুয়া নিউ গিনিতে উন্নীত হয়েছে। এটি জুনকাও প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শুরু করে। এ পর্যন্ত জুনকাও প্রযুক্তি শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে প্রয়োগ করা হয়েছে। অনেক দেশের জনগণ জুনকাওকে চীনা ঘাস ও সুখী ঘাস বলে অভিহিত করে।
নাউরুতে আরো ভালভাবে জুনকাও প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য ফোয়েলেপ নিজের দেশে প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষামূলক পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন। তিনি আরো বেশি স্থানীয় কৃষককে জুনকাও চাষের আকর্ষণ করতে চান। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, জুনকাও প্রযুক্তি আমদানি করলে নাউরু’র খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা উন্নীত এবং জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলার সামর্থ্য উন্নয়ন করা যাবে।
নাউরু’র বহুসংস্কৃতি বিষয়ক বিভাগের মহাসচিব
ফোয়েলেপ ড্যানিয়েল আয়ো মনে করেন, চীনের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে নাউরুসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোকে দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আরো বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করত পারে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ ও সমগ্র অঞ্চলের সাধারণ উন্নয়নের জন্য সহায়ক। (ছাই/হাশিম)