জীবাশ্ম জিনবিদ্যা গবেষক তরুণ বিজ্ঞানী ফু ছিয়াও মেই
2024-03-28 16:48:44

“আমি কে? আমি কোথা থেকে এসেছি এবং কোথায় যাবো? মানব বিবর্তন বরাবরই চীনের তরুণ বিজ্ঞানী ফু ছিয়াও মেই’র গবেষণার বিষয়।

১৯৮৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন ফু ছিয়াও মেই। তিনি চীনের বিজ্ঞান একাডেমির মেরুদণ্ডী জীবাশ্মবিদ্যা ও নৃবিদ্যা ইনস্টিটিউটের গবেষক। দীর্ঘকাল ধরে তিনি জীবাশ্ম জিনবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। এ কাজে মূলত ডিএনএ’র ভিত্তিতে মানব উত্স ও বিবর্তনের বিষয় নিয়ে গবেষণা করা হয়।

গত ১৯ জুন ফু ছিয়াও মেই ইউনেস্কোর সদরদপ্তরে আব্দুল্লাহ আল ফোজান পুরস্কার গ্রহণ করেন। ইউনেস্কো ২০২১ সালে এ পুরস্কার চালু করেছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতের ক্ষেত্রে তরুণদের উল্লেখযোগ্য কাজের জন্য এটি প্রথম এ ধরনের পুরস্কার। প্রতি দু’বছরে ৫ জনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জীবাশ্ম জিনবিদ্যা বিষয়ের শীর্ষ বিজ্ঞানীদের একজন হিসেবে ফু ছিয়াও মেই ২ হাজার ৫০০ প্রার্থীর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন। তিনিই প্রথম চীনা বিজ্ঞানী যিনি এ পুরস্কার পেলেন।

জীবাশ্ম জিনবিজ্ঞানী হওয়ার আগে ফু ছিয়াও মেই চারবার বিষয় পরিবর্তন করেন। ১৯৯৮ সালে মাধ্যমিক স্কুল থেকে পাস করে বেরোনোর পর তার বাবার কথামতো তিনি নর্মাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে তিনি পুরার্কীতি সংরক্ষণের বিষয় বেছে নেন। এরপর সেটি বাদ দিয়ে তিনি প্যালিও রেসিপি বিষয় নেন। সবশেষে তিনি প্রাচীন ডিএনএ গবেষণার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন।

ফু ছিয়াও মেই বলেন, কৌতুহল এসবের চালিকাশক্তি। প্রতিদিন তিনি ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন। মাঝ্যমধ্যে ভোর ৩-৪টার দিকে ঘুমোতে যান। তিনি গবেষণার পাগড়ি হিসেবে পরিচিত। গবেষণায় তার ক্লান্তি লাগে না। কারণ তিনি আনন্দের সঙ্গে কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন, এবং তার গবেষণা সীমিত নয়। এটা মানুষের মধ্যে কৌতুহল ও উৎসাহ তৈরি করে। এটিই ফু ছিয়াও মেইকে এই গবেষণায় আকৃষ্ট করে।

মানব উত্পত্তির রহস্যের প্রতি মানুষের কৌতুহল প্রাচীনকাল থেকেই। ফু চিয়াও মেই বিশ্বাস করেন, প্রাচীন ডিএনএ গবেষণা তার গুরুত্ব পাবে। এটি একটি বাতিঘরের মতো মানবজাতির পথ উজ্জ্বল করবে।

বর্তমানে ফু ছিয়াও মেই ‘মেড ই চায়না’ নামে একটি প্রাচীন ডিএনএ গবেষণা দল গঠন করেছেন। দলের সদস্যদের গড় বয়স ৩০ বছর। তরুণ হলেও তারা নিজেদের জন্য নেতৃস্থানীয় অবস্থান তৈরি করেছেন। ফু ছিয়াও মেই বলেন, “এক্ষেত্রে রয়েছে অনেক অজানা বিষয়। সেসব অজানা বিষয় আমাদের পরিশ্রমের চালিকাশক্তি।”