‘চীনের উন্নয়নে উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম-২০২৪’: অর্থ মন্ত্রণালয় কীভাবে উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়নকে সমর্থন করবে, ব্যাখ্যা অর্থমন্ত্রীর
2024-03-25 14:53:29

মার্চ ২৫: ‘চীনের উন্নয়নে উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম-২০২৪’-এর দু’দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন গতকাল (রোববার) বেইজিংয়ে শুরু হয়েছে। সম্মেলনে চীনের অর্থমন্ত্রী লান ফু আন বলেন, নতুন বছরে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্র করে নতুন মানের উত্পাদন শক্তি লালন করবে, এবং সরবরাহব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার ও চাহিদার কাঠামোগত ব্যবস্থাপনার সমন্বয় করে অর্থনৈতিক অঙ্গনের স্থিতিশীল ও সুষ্ঠু উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

চীনের দুই অধিবেশন সবেমাত্র শেষ হওয়ার পর এবারের এই বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। এতে চীনের অব্যাহত উন্নয়নের চালিকাশক্তি ও সম্ভাবনা এবং চীনের সামষ্টিক নীতির পরিচয়সহ আলোচ্য বিষয় অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। গেল বছরের শেষদিকে কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্মেলনে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত হয়েছে যে,  ২০২৪ সালে চীনের অর্থ বিষয়ক ইতিবাচক নীতির গুণগত মান উন্নয়ন করে এর কার্যকারিতা বাড়ানো উচিত। চীনের সরকারী কার্যবিবরণীতে  অর্থ বিষয়ক ইতিবাচক নীতির আরো বিন্যস্ত করা হয়েছে।

এ বছর চীনের অর্থ বিষয়ক ইতিবাচক নীতি কীভাবে গুণগত মান উন্নয়ন করে কার্যকারিতা বাড়াবে, এই সম্পর্কে দেশি-বিদেশি অতিথিদের কাছে পাঁচটি ক্ষেত্রের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন চীনের অর্থমন্ত্রী লান।

অর্থ কীভাবে উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়নকে সমর্থন করবে? অর্থমন্ত্রী লান প্রথমে কীভাবে ‘নতুন মানের উত্পাদন শক্তি দ্রুত উন্নয়নকে সমর্থন করে উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়নে প্রবল চালিকাশক্তি যোগাবে’, সে বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, নতুন মানের উত্পাদন শক্তি উন্নয়ন করা উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্বপূর্ণ ফোকাস। নতুন মানের উত্পাদন শক্তির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নব্যতাপ্রবর্তন। অর্থমন্ত্রী লান বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈজ্ঞানিক নব্যতাপ্রবর্তনকে এক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেব অগ্রাধিকার দিয়েছে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়। চীন গবেষণা ব্যয়ে স্থিতিশীলভাবে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, এবং এ ক্ষেত্রে  বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ বেশি।

দ্বিতীয়ত, ‘কার্যকর চাহিদা বৃদ্ধিকে সমর্থন করে অভ্যন্তরীণ উত্পাদনের চালিকাশক্তি উন্নয়ন জোরদার করা’।

২০২৩ সালে চীনে চূড়ান্ত ভোগের অবদানের হার ৮২.৫ শতাংশ, যা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ৪.৩ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। অর্থমন্ত্রী লান বলেন, পরবর্তীতে অব্যাহতভাবে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর কৌশল এবং সরবরাহব্যবস্থা অবকাঠামোগত সংস্কার গভীর করার বিষয়টি সমন্বয় করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অভ্যন্তরীণ চাহিদার ইতিবাচক ভূমিকা জোরদার করবে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়।

তৃতীয়ত, ‘জীবিকা কল্যাণ বৃদ্ধিকে সমর্থন করে সকলের সঙ্গে উন্নয়নের ফলাফল ভাগাভাগি করা’।

অর্থের এই ‘কেক’ কীভাবে বিতরণ করা যায়?

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী লান বলেন, চীনের বেশিভাগ অর্থ-সম্পদ শিক্ষা, চিকিত্সা, বীমা এবং পরিবেশ রক্ষাসহ বিভিন্ন জীবিকা ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হবে। মৌলিক জীবিকা প্রতিষ্ঠাকাজ জোরদার করার মাধ্যমে জনগণের সুখ এবং নিরাপত্তা বোধ উন্নত করতে হবে।

চতুর্থত, ‘উচ্চমানের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ বৃদ্ধিকে সমর্থন করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা’।

অর্থমন্ত্রী লান বলেন, অর্থনীতির বিশ্বায়নে আজ, বিশ্বে কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নেই, কেবল উন্মুক্ততাই সমৃদ্ধির একমাত্র পথ। তিনি বলেন, চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক অর্থ বিষয়ক বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করবে, প্রধান অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সামষ্টিক নীতিগত ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও সমন্বয় জোরদার করবে, সত্যিকারের বহুপক্ষবাদ মেনে চলবে, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে বাস্তব সহযোগিতা গভীরতর করবে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

পঞ্চমত, ‘আর্থিক শুল্ক ব্যবস্থার সংস্কার গভীরতর করে অবিরাম উন্নয়নের দক্ষতা বাড়ানো’।

অর্থমন্ত্রী লান বলেন, চীনা শৈলীর আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন করায় মাঝারি, দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পকালীন লক্ষ্যমাত্রার সমন্বয় করা দরকার, যাতে বিভিন্ন পক্ষের সুপ্তশক্তি এবং সক্রিয়তাকে কাজে লাগানো যায়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি’র) কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাষ্ট্রীয় পরিষদের বিন্যাস অনুযায়ী, চীনা শৈলী আধুনিকায়নের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এক সুসংহত আধুনিক আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে আমাদের। (ওয়াং হাইমান/হাশিম/ছাই)