মার্চ ২৩: হুইসেলব্লোয়ারের রহস্যময় আত্মহত্যা থেকে বিমানের নিরাপত্তা সমস্যা পর্যন্ত মার্কিন বোয়িং কোম্পানির বিষয়ে জনমতের চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী পিট বুটিগিগ ও ফেডারেল এভিয়েশন প্রশাসনের প্রধান মাইক হুইটেকার বোয়িংয়ের মান নিয়ন্ত্রণের সমস্যা রয়েছে স্বীকার করেন। তবে সমাধানের ব্যবস্থা ও সরকারের তত্ত্বাবধান দায়িত্ব নিয়ে দু’জন কিছুই বলেন নি। বাইরের সন্দেহ ও ক্ষোভ শান্ত করতে এ মনোভাব যথেষ্ট নয়। বোয়িংয়ের সন্দেহজনক ইস্যুতে বিশ্বকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাখ্যা দিতে হবে। সিএমজি সম্পাদকীয় এসব মন্তব্য করেছে।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ৬২ বছর বয়সী বার্নেট বোয়িং কোম্পানিতে ৩০ বছর কাজ করেছেন। মান নিয়ন্ত্রণ ম্যানেজার হিসেবে তিনি বহুবার বিমানের নির্মাণের সমস্যা ও কোম্পানির পরিচালনার সমস্যা নিয়ে উন্মুক্তভাবে কথা বলেছেন। ৯ মার্চ তিনি একটি ট্রাকে “আত্মহত্যা” করেছেন বলে জানা যায়। তবে তিনি তার বন্ধুকে একবার বলেছেন যে, তিনি কোনভাবেই আত্মহত্যা করবেন না, যদি তার কোন সমস্যা হয় তা আত্মহত্যা হবে না। বার্নেটের মৃত্যুটি বোয়িংয়ের আস্থার সংকটের ছোট একটি অংশ। চলতি বছর কোম্পানির ধারাবাহিক নিরাপত্তা সমস্যা হয়েছিল। প্রথম দু’মাসে ৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীও তার সফরকালে বিমান পরিবর্তন করেন। মার্চ মাসে বোয়িং যাত্রীবাহী বিমানের টায়ার পড়া ও আগুন ধরে যাওয়াসহ নানা সমস্যা হয়। বোয়িং কর্মীরা কাজের সময় ড্রাগ নেন ইত্যাদি। বিশ্বের উন্নত একটি কোম্পানি হিসেবে বোয়িং কোম্পানির কী হয়েছে? কোম্পানিটির ইতিহাস ২০০ বছরের পুরানো এবং তার নিরাপত্তা ও নির্মাণ দক্ষতা একসময় মার্কিনীদের গর্বের বিষয় ছিল।
সিএমজি সম্পাদকীয়তে বলা হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবই দ্রুত উন্নত হয়। অন্য দেশ বোয়িংয়ের নির্মাণ অভিজ্ঞতা থেকে শিখছে। কিন্তু, মার্কিন অর্থনীতির অবনতি হচ্ছে। বিশ্লেষকগণ মনে করেন, দীর্ঘসময় ধরে বোয়িং কোম্পানি গুণগতমান বৃদ্ধির তুলনায় মজুদের ওপর বেশ গুরুত্ব দেয়। ঘনঘন কোম্পানির কর্মকর্তা বদল হয় এবং জবাবদিহিতার অভাবে কোম্পানির নির্মাণ ও উত্পাদনে ধারাবাহিক সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি মার্কিন সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ এতে কোনো তত্ত্বাবধান করে নি। এমনকি বিমান নিরাপত্তা স্বীকৃতি কাজ বোয়িংসহ বিমান নির্মাতার হাতে দেওয়া হয়েছে। যার অর্থ রেফারিং ক্ষমতা ক্রীড়াবিদদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই সাবেক সরকারি কর্মকর্তা।
বিমানের নিরাপত্তা বড় একটি ব্যাপার এবং জননিরাপত্তার সঙ্গে তা জড়িত। মার্কিন সরকারের সমস্যা ও দায়িত্ব পালন এড়ানো উচিত্ নয়। সংশ্লিষ্ট পক্ষের উদ্বেগ নিয়ে একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেয়া উচিত্ বলে মনে করে সিএমজি সম্পাদকীয়।
(শিশির/তৌহিদ/লিলি)