সিচাংয়ে শিশুদের নামকরণের রীতিনীতি
2024-03-22 19:21:01

 এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও সিচাং-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর সিচাং সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা সিচাং নিয়ে কথা বলব।

 

সিচাংবাসী তথা তিব্বতিদের দৃষ্টিতে, একটি শিশুর নামকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি তার সারাজীবনের বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে সম্পর্কিত। বেশিরভাগ সময়, একজন জীবিত বুদ্ধ সন্ন্যাসী বা একজন মর্যাদাবান প্রবীণকে শিশুর নাম রাখতে অনুরোধ করা হয়। অনেক সময় বাবা-মাও তাদের সন্তানদের নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী নাম রাখেন। নামকরণের সময় সাধারণত যখন শিশুর বয়স প্রায় এক মাস হয়। কেউ কেউ জীবিত বুদ্ধকে গর্ভাবস্থাতেই শিশুর জন্য একটি নাম রাখতে অনুরোধ করেন। অতীতে, সাধারণ মানুষ যখন জীবিত বুদ্ধ বা লামার কাছে একটি নাম জিজ্ঞাসা করত, তখন কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান ছিল না, তাদের লিঙ্গ নির্দেশ করার জন্য শুধুমাত্র জীবিত বুদ্ধ বা বিশিষ্ট ভিক্ষুর কাছে একটি হাদা ও তিব্বতি রূপার কয়েকটি তাল উপহার দিতে হতো। অভিজাত পরিবারগুলো প্রায়ই জীবিত বুদ্ধের কাছে শিশুকে নিয়ে যেত। জীবিত বুদ্ধ শিশুর মাথার উপরের দিকে চুলের একটি ছোট টুকরো কেটে ফেলতেন এবং তারপরে একটি শুভ নাম রাখতেন। যদি একটি শিশু বড় হয়ে সন্ন্যাসী (বা সাধারণ মানুষ) হয়ে যায়, তাহলেও তাকে ধর্মনাম নেওয়ার জন্য ‘খেনপো’, ‘ওয়েংজ্য’ বা জীবিত বুদ্ধসহ  বিশিষ্ট ভিক্ষুর কাছে যেতে হয়। জীবিত বুদ্ধ  ও  ‘খেনপো’সহ  বিশিষ্ট ভিক্ষু যখন তাদের সন্তানদের নাম রাখেন, তখন তাদের নামের সবসময় স্পষ্ট ধর্মীয় অভিব্যক্তি থাকে।

তিব্বতি নামগুলোর খুব সমৃদ্ধ অর্থ রয়েছে। বিভিন্ন উপায়ে নামকরণ করা হয়। সাধারণ নামগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্ম-সম্পর্কিত নাম। ধর্মের সাথে সম্পর্কিত নাম তুলনামূলকভাবে বেশি। তিব্বতি সমাজে ধর্মের গভীর প্রভাব এতে প্রতিফলিত হয়। তিব্বতি নামকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যও ফুটে ওঠে এতে। শুভেচ্ছা জানানো, প্রশংসা করা, এবং জন্মতারিখ স্মরণ রাখার সাথে সম্পর্কিত নামও রাখা হয়। তিব্বতের গণতান্ত্রিক সংস্কারের পর, তিব্বতের জনগণের নামও আধুনিক উত্সবের সাথে সম্পর্ক রেখে করার প্রথা চালু হয়েছে। জাতীয় দিবস, মে দিবস, ইত্যাদি অনেকের নামের সাথে সম্পর্কিত।

তিব্বতিদের সন্তানদের নাম রাখার অনেক উপায় আছে। উদাহরণস্বরূপ, নবজাতককে দুর্ঘটনা ও দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে বাবা-মা ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের সন্তানদের জন্য বিশেষ ডাকনাম বেছে নেযন। এসব ডাকনাম সাধারণত পশুপাখির নামে রাখা হয়। এতে ছোট বাচ্চার প্রতি বাবা-মার বিশেষ ভালোবাসা ও স্নেহও প্রকাশ পায়।

 

প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা:  https://bengali.cri.cn/  সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (ঊর্মি/আলিম)