চীনের ইনার মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কুবুছি মরুভূমিতে একটি ভাস্কর্য রয়েছে। বড় একটি গাছ গোটা পৃথিবী ধারণ করে আছে। ভাস্কর্যটির নাম 'আশা ধারণ করা'। কুবুছি বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে মরুভূমি থেকে সবুজে রূপান্তরিত হয়েছে এবং এটি পরিবেশ সুরক্ষাকারীদের কীর্তি। ভাস্কর্যে সে-সত্যই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
বৃক্ষরোপণকাজে জড়িত ছিলেন মর্গান ডাও। তিনি বলেন:
"ভোরে ঘুম থেকে উঠি প্রতিদিন। গাড়িতে করে চারাগাছ নিয়ে মরুভূমিতে যাই। সূর্যাস্তের সময় ঘাম ও বালিতে মাখামাখি শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরি। এটাই ছিল কুবুছি মরুভূমিতে আমাদের আগের জীবন। আমরা সবুজের স্বপ্ন নিয়ে মরুভূমিতে বৃক্ষরোপণ করেছি। কয়েক দশকের প্রতিটি দিন কেটেছে একইভাবে। আমি ১৯৭৪ বা ১৯৭৫ সাল থেকে বৃক্ষরোপণ শুরু করি। প্রথমে আমি ০.১৩ থেকে ০.২ হেক্টর জমিতে বৃক্ষরোপণ করি। ২০০২ সাল থেকে আমি ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ শুরু করি।"'
বৃক্ষরোপণের ক্ষেত্রে কুবুছি মরুভূমির হাংচিনছিতে বসবাসকারী মর্গান ডাও-এর অভিজ্ঞতা অনেক। একসময় তাঁর জনস্থানে মরুকরণ গুরুতর আকার ধারণ করে। সেখানে তখন সড়ক ও গাছ ছিল না। কৃষক ও পশুপালকদের জীবন অনেক কঠিন ছিল। তখন মর্গান ডাও বিকল্প চিন্তা করতে লাগলেন। তিনি গ্রামের কমিটি থেকে কিছু সরকারি চারা গাছ নিয়ে বাড়ির কাছাকাছি রোপণ করা শরু করেন। তার লাগানো চারাগাছ একসময় বড় হল এবং তিনি আরও উত্সাহী হয়ে উঠলেন।
২০০৩ সালে স্থানীয় সরকার বাসিন্দাদেরকে বৃক্ষরোপণ খাতে ভর্তুকি প্রদান শুরু করে। মর্গান ডাও তখন থেকে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ শুরু করেন। তিনি প্রতিদিন মরুভূমিতে বৃক্ষরোপণ করতেন। এ ছাড়া, তিনি বিভিন্ন স্থান থেকে নতুন ধরনের চারাগাছ কিনে মরুভূমিতে পরীক্ষামূলকভাবে লাগাতে শুরু করেন। পানি ও চারাগাছ বহন এবং খনন ও জলসেচনসহ বিভিন্ন কাজ তিনি নিজেই করতেন। এভাবে তার নিজের হাতে লাগানো গাছ বাড়তে লাগল। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে প্রতিবছরে তার দ্বারা সৃষ্ট বনভূমির আয়তন বছরে ৩০ হেক্টর করে বৃদ্ধি পেতে লাগল। এ-পর্যন্ত তিনি ৬৬০ হেক্টর জমিতে বৃক্ষ রোপণ করেছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গাছ অন্তর্ভুক্ত। তিনি প্রতিবছর চারাগাছ বিক্রি করে প্রচুর আয়ও করছেন।