গতকাল (বৃহস্পতিবার) শতাধিক জার্মান কোম্পানি, শিল্প সমিতি ও তথ্যমাধ্যমের প্রতিনিধিরা দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের উয়ের্জবার্গে এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা আলোচনা করেন, উচ্চ মানের উন্নয়নের মাধ্যমে চীন যে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়ন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তাতে জার্মানির সঙ্গে সহযোগিতার কী নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এ অনুষ্ঠানের আয়োজক জার্মানির ভিজিজি কোম্পানির বাণিজ্য ও কৌশল পরিচালক গার্ড কিলবার্গার মনে করেন, জটিল ও পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মুখে সংলাপ ও সহযোগিতার গুরুত্ব বাড়ছে এবং সেটার বাস্তবায়নে দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “পারস্পরিক আস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং আমরা তথ্যমাধ্যম হিসেবে তার জন্য একটি প্ল্যাটফোর্ম প্রদান করতে চাই। চার-পাঁচ বছর আগের তুলনায় নানা ক্ষেত্রে চীন আরও লক্ষ্যণীয় ভূমিকা পালন করছে। যেমন গাড়ি, বিদ্যুৎ পরিবহন, এআই, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ নানা ক্ষেত্রে চীন আশ্চর্যজনক উদ্ভাবনশক্তি দেখিয়েছে এবং লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। সংশ্লিষ্ট শিল্পে চীনা কোম্পানিগুলো নেতৃত্ব স্থানে রয়েছে।”
অনুষ্ঠান চলাকালে যন্ত্রপাতি উৎপাদন, তথ্যপ্রযুক্তি, ইন্টারনেট, পরিবহনসহ নানা শিল্পের উদ্যোক্তা ও বিশেষজ্ঞরা চীনের বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন এবং শিল্পের রূপান্তর সম্পর্ক তাদের মতামত ও পর্যবেক্ষণ জানান। শ্যাফলার টেকনোলোজি এজি কোম্পানির স্পেশাল মেশিনারি মার্কেটিং বিভাগের প্রতিনিধি ফ্রানজিসকা ফুটজ জানান, চীনে উত্থাপিত নতুন মানের উত্পাদনশক্তির ধারণাটি অনুপ্রেরণামূলক। তিনি বলেন, “এটা নতুন ধারণা নয়, গেল কয়েক বছরে আমরা স্পষ্টভাবে চীনে এমন উন্নয়নের ধারা দেখেছি এবং আমরা বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে এর আরও দ্রুত উন্নয়ন হবে। আমরা ডিজিটাল ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চীনা বৈশিষ্ট্যের আধুনিকায়ন থেকে উপকৃত হবো। নতুন সুযোগ পাবো, পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতা গভীরতর করবো এবং নতুন চালিকাশক্তি অর্জন করবো, যা থেকে বিশ্ব অর্থনীতি লাভবান হবে।”
অনুষ্ঠানের অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উচ্চ ও নতুন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে চীন বড় সাফল্য অর্জন করেছে। এখন নতুন মানের উত্পাদনশক্তিকে আধুনিক শিল্পব্যবস্থা গড়ে তোলার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হিসেবে গ্রহণ করলে তা জার্মান কোম্পানিগুলোর জন্য আরও বেশি বাণিজ্যিক ও সহযোগিতার সুযোগ আনবে।
বেই ফিলজ কোম্পানির সিনিয়র ইন্টারনেট মার্কেটিং ম্যানেজার মারকুস ক্লমুনজনার বলেন, “চীনের শক্তিশালী নবায়ন দক্ষতা আছে। চীনে জার্মান কোম্পানিগুলো এ সুযোগের সদ্ব্যাবহার করে সহযোগিতার মাধ্যমে নবায়ন ও নতুন মানের উত্পাদনশক্তি উন্নয়ন করতে পারে। আমি আশা করি, চলতি বছর চীন অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এমনকি অতিক্রম করতে পারবে এবং তার মধ্য দিয়ে বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে চালিকাশক্তি যোগাবে।”
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা মনে করে, চলতি বছর চীনা অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা আন্তর্জাতিক বাজারে আস্থা যোগাবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। চীনা বৈশিষ্ট্যের আধুনিকায়নে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক জার্মান কোম্পানিগুলো চীনা কোম্পানগুলোর সঙ্গে উন্নয়নের সুযোগ অন্বেষণ করে, যোগাযোগ ও সহযোগিতার মাধ্যমে পরস্পরের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।
জার্মানি গেশাফৎসথুহা ইভিওম কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিলস হর্টসম্যান বলেন, “আমি চীনা অর্থনীতির উন্নয়নের ব্যাপারে আস্থাবান। গেল কয়েক বছরে মহামারি ও সরবরাহ চেইন সংকটে আমরা উপলব্ধি করতে পারি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে চীনের অগ্রগতির ওপর নজর রাখি আমরা; বিশেষ করি ডিজিটাল ক্ষেত্রে চীন অসাধারণ নবায়ন বাস্তবায়ন করেছে, যা থেকে আমরাও শিখতে পারি।”(শিশির/রহমান/লিলি)