মার্চ ৮: এ বছরের চীনের দু’টি অধিবেশনে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং সরকারি কার্যবিবরণী তুলে ধরেছেন। এটি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ বছরে চীনের সরকারি কার্যবিবরণীর কোন নতুন তথ্য ও হাইলাইট প্রকাশিত হয়েছে এবং উচ্চমানের উন্নয়নের কোন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে? তাহলে আজকের অনুষ্ঠানে আমি এ বিষয় তুলে ধরবো।
এ বছরের সরকারি কার্যবিবরণীতে এ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণের ব্যাপক বিবেচনার পর লক্ষ্যটি প্রণয়ন করা হয়। বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থান বাড়ানো, নাগরিকদের আয় বৃদ্ধি, ঝুঁকি প্রতিরোধ ও সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার প্রয়োজন। মধ্যম থেকে দীর্ঘ মেয়াদে ২০৩৫ সালে চীন মৌলিকভাবে সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন করবে। এর জন্য মাথাপিছু জিডিপি মাঝারিভাবে উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে। বিভিন্ন অনুমান অনুসারে, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ বজায় রাখতে হবে।
তাহলে এ লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে কিনা? চীনের অতি-বৃহৎ মাপের বাজারের চাহিদার সুবিধা, সম্পূর্ণ শিল্প ব্যবস্থার সুবিধা সরবরাহ এবং অসংখ্য উচ্চ-মানের কর্মীদের প্রতিভা সুবিধা আছে। পাশাপাশি এ বছর ধরে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ইতিবাচক প্রবণতা বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল করার নীতিগুলো অব্যাহতভাবে কার্যকর হচ্ছে। সাধারণত কৌশলগত সুযোগ ও ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জ সহাবস্থান করে, তবে অনুকূল পরিস্থিতি প্রতিকূল অবস্থার চেয়ে বেশি।
কীভাবে জনগণের জীবিকা উন্নয়ন করা হবে? কর্মসংস্থান হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায়। এ বছরের সরকারি কার্যবিবরণীতে শহুর কর্মসংস্থানের সংখ্যা ১.২ কোটি জনেরও বেশি করার কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু গত বছরেরও লক্ষ্য ছিল প্রায় ১.২ কোটি জন। কর্মসংস্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়ন বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য সরকারি কার্যবিবরণীতে এ বছরে কর্মসংস্থান স্থিতিশীলতা সমর্থন করার জন্য রাজস্ব, কর, আর্থিকসহ বিভিন্ন নীতিকে শক্তিশালী করার অনুরোধ জানানো হয়। বৃহৎ কর্মসংস্থান ক্ষমতাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সমর্থন জোরদার করা এবং সমস্ত ধরণের কর্মসংস্থান বৈষম্যকে দৃঢ়ভাবে দূর করা হবে। কর্মসংস্থান ছাড়াও শিক্ষা, চিকিত্সা ও সামাজিক বীমার ক্ষেত্রের ভর্তুকি বাড়ানো হবে।
সরকারি কার্যবিবরণীতে ব্যাপকভাবে ব্যয় কাঠামো উন্নীত এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলের দায়িত্ব ও মৌলিক জীবিকার আর্থিক নিশ্চিত জোরদার করার কথা বলা হয়।
অভ্যন্তরীণ চাহিদা চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি। ভোগ উন্নয়নের জন্য আয় বাড়ানো, সরবরাহ উন্নয়ন এবং সীমাবদ্ধতা কাটানোর বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য আরো বেশি সুবিধাজনক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা জানি, গত বছরে গোটা বিশ্বে বিনিয়োগের পরিমাণ ১৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। গত বছরে চীনে বিদেশী বিনিয়োগের হার ৮ শতাংশ কমেছে। তবে চীনের বাজার বড়, সুপ্তশক্তি বেশি, প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সুযোগ বেশি। অনেক প্রতিষ্ঠান চীনকে তাদের প্রথম পছন্দ বা বিশ্বের শীর্ষ তিন বিনিয়োগ গন্তব্যের একটি হিসাবে বিবেচনা করবে।
আরেকটি কাজ হবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়নের জন্য চীন অনেক উপযোগী ব্যবস্থা নিয়েছে। এ বছরে অব্যাহতভাবে এসব ব্যবস্থা কার্যকর হবে এবং আরো বেশি নতুন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২০২৪ সালে চীন টেলিকমিউনিকেশন ও চিকিৎসা পরিষেবাসহ পরিষেবা শিল্পগুলোর জন্যও বাজারে প্রবেশাধিকারের কাড়াকড়ি শিথিল করবে। এ ছাড়াও চীন এবং বাইরের দেশগুলোর মধ্যে কর্মী বিনিময় আরও সহজতর করা হবে। কার্যকরভাবে কাজ, অধ্যয়ন এবং ভ্রমণের জন্য চীনে আসা বিদেশীদের জন্য সুবিধা দেয়া এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরুদ্ধার দ্রুততর করা হবে।
বন্ধুরা, আপনাদেরকে আজকের টোপিক দেখার জন্য ধন্যবাদ। মুক্তা, সিএমজি, বেইজিং থেকে। (ছাই)