বিশ্ব-কৃষির টেকসই উন্নয়ন ঘটাবে ‘চীনা ঘাস’
2024-03-11 14:29:22

(মাইসেলিয়াম (চুনছাও) হলো এমন এক ধরনের ভেষজ, যা আহারযোগ্য ও ঔষধী মাশরুমের পুষ্টির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।)

 

সম্প্রতি তিনদিনব্যাপী ‘চুনছাও প্রযুক্তির ব্যবহারিক প্রয়োগ এবং দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান বেগবান ও পরিবেশ সংরক্ষণে এর অবদান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারটি ফিজির নাদিতে শেষ হয়েছে। সেমিনারটির লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন দেশে আরও বেশি করে চুনছাও প্রযুক্তি এবং এর ব্যবহারিক দিকগুলো তুলে ধরা। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের কল্যাণে এই ‘সুখের ঘাস’-এর ক্ষেত্র তৈরি করাও ছিল এর উদ্দেশ্য।

ফিজির কৃষি ও জলপথমন্ত্রী ভাতিমি রায়ালু, ফিজিতে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত চৌ চিয়ান, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগের কর্মকর্তা আমসন সিবান্দা এবং চীনের চুনছাও প্রযুক্তির জাতীয় প্রকৌশল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী লিন জানসি’সহ ২০টি দেশের শতাধিক প্রতিনিধি সেমিনারে অংশ নিয়েছেন।

 

ফিজির সঙ্গে চুনছাও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করার জন্য চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে রায়ালু বলেন, ২০১৪ সালে চুনছাও প্রকল্প কার্যকর হওয়ার পর থেকে দু’পক্ষের সহযোগিতা ঘনিষ্ঠতর হয়েছে। এ প্রকল্পে চাষীদের জন্য ২০ লাখ বৃহৎ প্রজাতির চুনছাও’র চারার যত্ন নেওয়া হয়েছে। এটি পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি পানি ও মাটির ক্ষয় সমস্যার সমাধানও করে। বর্তমানে ২ হাজার ৪শ’রও বেশি কৃষি পরিবারের  কাছে চুনছাও পদ্ধতিতে চুনছাও চাষের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি যা খাদ্য নিরাপত্তায়ও সহায়ক।


সেমিনারে চৌ চিয়ান বলেন, চুনছাওকে বলা যেতে পারে চীনা ঘরানায় ‘কয়েকজন মানুষকে মাছ ধরা শেখানো’র একটি প্রাণবন্ত উপস্থাপন। চুনছাও প্রকল্প আরও বেশি দেশে কার্যকর ও বেগবান করতে চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে সহযোগিতামূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। এতে করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর টেকসই কৃষি তৈরির দক্ষতা ও মান অব্যাহতভাবে উন্নত হবে। এতে করে ধারাবাহিক বৈশ্বিক উন্নয়ন হবে আরও গভীর ও বাস্তব। যার মাধ্যমে ছোট কিন্তু সুন্দর ‘চীনা ঘাস’ আরো বেশি দেশে ফোটাতে থাকবে ‘সুখের ফুল’।


লিন জানশি বলেন, চুনছাও প্রযুক্তিতে ‘ঘাস থেকে খাবার’ বলতে বোঝায় ভোজ্য মাশরুম, ‘ঘাস থেকে শস্য’ হলো পশুসম্পদ ও পোল্ট্রি শিল্পের উপাদান এবং ‘ঘাস থেকে কাঠ’ বলতে বোঝায় ফাইবার, ফাইবারবোর্ড ও কাগজের মণ্ড। আবার ‘ঘাস থেকে কয়লা’ মানে হলো বিদ্যুৎ উৎপাদন। এ ধরনের পরিবেশগত ছয়টি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় জৈব সার। যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর দারিদ্র্য বিমোচন ও কৃষির টেকসই উন্নয়নের নতুন পথ খুলবে।

 

চীন-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশের চুনছাও কেন্দ্র সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করেছেন সেমিনারে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা। সেখানে তারা চুনছাও পানি ও মাটির ক্ষয় ব্যবস্থাপনা খামার, ভোটুয়ালেভু কলেজের চুনছাও মাশরুম উৎপাদন প্রদর্শনী বেজ ইত্যাদি পরিদর্শন করেছেন। ফিজির বিভিন্ন মহলে ইতোমধ্যে চুনছাও প্রযুক্তির ব্যবহারিক সাফল্য বেশ প্রশংসা পেয়েছে। সবাই মনে করছেন,আরও অনেক দেশে চুনছাও প্রযুক্তির একটি বড় ব্যবহারিক ক্ষেত্র তৈরি হবে। সেই সঙ্গে চুনছাও গবেষণা, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন আলোচ্যবিষয় নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করেছেন।

 

প্রেমা/ফয়সল