এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও সিচাং-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর সিচাং সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা সিচাং নিয়ে কথা বলব।
একজন সিচাংবাসী তথা তিব্বতির জীবনকে শিষ্টাচারের জীবন বলা যেতে পারে। একটি শিশুর জন্ম থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে বিয়ে পর্যন্ত, মৃত্যুর সময় থেকে মৃত্যুর পরে আত্মার ঊর্ধ্বে আরোহণ পর্যন্ত—বিভিন্ন জটিল আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে সিচাংয়ে। এগুলো সিচাংয়ের জনগণের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
জন্মানুষ্ঠান
জন্ম হল একজনের জীবনের সূচনা। জন্মানুষ্ঠান হল একটি শিশুকে পৃথিবীতে বরণ করে নেওয়ার একটি অনুষ্ঠান। ঐতিহ্যবাহী তিব্বতি সমাজে, সেকেলে ধারণার প্রভাবে, ঋতুস্রাব, গর্ভাবস্থা এবং প্রসবের সময় মহিলাদের ‘অশুচি’ বলে মনে করা হয়। উপরন্তু, প্রয়োজনীয় চিকিত্সা ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবের কারণে, গর্ভবতী মহিলা এবং প্রসবকালীন মহিলারা প্রায়শই যুক্তিসঙ্গত যত্ন পান না, শিশু ও নতুন জন্মগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে মৃত্যুহারও বেশি।
গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে, সাধারণ পরিবারের গর্ভবতী মহিলারা বিশেষ যত্ন পান না। সামর্থ্য থাকলে কোনো কোনো পরিবার গর্ভবতী মেয়েদের উন্নত ও পুষ্টিকর সম্পূরক খাবার খাইয়ে থাকে। গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে এবং প্রসবের আগে, প্রতিটি পরিবার নিজের অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে, গর্ভবতী মহিলাদের মাংস ও ঘিজাতীয় পুষ্টিকর খাবার খাইয়ে থাকে।
অতীতে, যখন গর্ভবতী মহিলারা সন্তান প্রসব করতেন, তখন পশুপালন এলাকার মহিলারা বেশিরভাগই আলাদাভাবে স্থাপন করা সাধারণ তাঁবুতে সন্তান প্রসব করতেন। কোনো বিশেষ ধাত্রী ছিল না, এবং মা বা শাশুড়ি সাধারণত বাচ্চা প্রসব করতে সাহায্য করতেন। যখন একজন মহিলা সন্তান প্রসব করেন, তখন তার স্বামী সাধারণত আশেপাশে থাকেন না এবং যতটা সম্ভব দূরে থাকেন। এটাই দস্তুর। বলা হয় যে, সন্তানের পিতা যদি ডেলিভারির স্থানে উপস্থিত থাকেন, তাহলে শিশুর জন্মগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিতে পারে। জন্মের সময় একজন সন্ন্যাসীকে সূত্র জপ করতে ও প্রার্থনা করতে আমন্ত্রণ জানানোও একটা প্রথা।
যদি বাড়িতে কোনো গর্ভবতী মহিলা থাকে, তবে বাইরের লোক যাতে ইচ্ছামতো প্রবেশ না করতে পারে, তা জানাতে একটি লাল ব্যানার বা একটি বিশেষ চিহ্ন সাধারণত দরজায় টাঙানো হয়।
প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://bengali.cri.cn/ সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (ঊর্মি/আলিম)