নতুন বছরে ই উ শহরে ক্ষুদ্রপণ্য বাজার আবার খুলেছে
2024-03-07 16:59:07

চীনের চান্দ্র নববর্ষ ও বসন্ত উত্সবের পর বিশ্বের বৃহত্তম ক্ষুদ্রপণ্য বিতরণ কেন্দ্র, চীনের চেচিয়াং প্রদেশের ই উ শহর গ্রাহকদের স্বাগত জানাতে আবার খোলা হয়েছে।

ই উ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শহরের একটি খেলনা দোকানের মালিকা ছেন মেই চুন নতুন খেলনা শেলফে সাজাতে ব্যস্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, গুণমান এবং ব্র্যান্ডের প্রতি গ্রাহকদের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। আমরা প্রতি বছর শতশত নতুন পণ্য উদ্ভাবনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে পণ্যগুলো মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাসহ অনেক বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। বসন্ত উত্সবের আগের অর্ডারগুলো মার্চ মাসের শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়েছে। চলতি বছর কোম্পানিটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজার খুঁজবে।’ ছেন মেই চুন নতুন বছরে আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ।

৭৫ হাজারেরও বেশি দোকান ২১ লাখেরও বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ৩ কোটি ২০ লাখেরও বেশি কর্মীর সঙ্গে সংযুক্ত। নতুন বছরের শুরুতে ‘ওয়ার্ল্ড সুপারমার্কেট’ নামে পরিচিত ই উতে স্পষ্টভাবে বিশাল সংখ্যক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রাণশক্তি অনুভব করা সম্ভব।

চলতি বছর হলো জর্জ নামে একজন ভারতীয় ব্যবসায়ি’র এই মার্কেটে আসার ২০তম বছর। তিনি বলেন, ‘বসন্ত উত্সবের পর বাজার আবার খোলার প্রথম দিনে এখানে আসতে অভ্যস্ত হয়েছি আমি। ই উ ব্যবসায়িক সহযোগিতার সুযোগে পূর্ণ। গত বছর আমি ই উতে ২০০ কন্টেইনার পণ্য কিনেছিলাম এবং এই বছর আমি ৩০০ কন্টেইনার পণ্য কেনার পরিকল্পনা করছি।’

ই উ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শহরের এক দোকান মালিক চাং চি ইং তার নতুন পণ্য দেখান ক্রেতাদের। সেটি হচ্ছে ১০০ গ্রামের অতি হালকা ছাতা, প্রায় একটি তালুর আকারের মতো, যা একটি হ্যান্ডব্যাগ বা কোট পকেটে সহজেই ধরে যাবে। চাং চিইং বলেন, ‘১০০টিরও বেশি দেশে আমাদের গ্রাহক রয়েছে, তাই আমাদের অবশ্যই বিভিন্ন বাজারের চাহিদা অনুসারে শৈলী, রঙ, প্যাকেজিং ইত্যাদির উপর চুলচেরা গবেষণা এবং উন্নয়ন করতে হবে এবং প্রতি সপ্তাহে নতুন পণ্য তৈরি করতে হবে।’

শুধু পণ্যের ক্ষেত্রেই নয়, নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগের প্রসারের সাথে সাথে অনেক উচ্চ প্রযুক্তি নিঃশব্দে আরও বেশি ব্যবসায়িদের কাছে চলে এসেছে এবং ঐতিহ্যগত বাণিজ্য বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।

গত বছরের শেষ দিকে চাং চিইং চীনা ভাষায় একটি ভিডিও শুট করার পর এআই প্রযুক্তি দিয়ে নিজ উদ্যোগে ইংরেজি, ফরাসি, আরবি এবং স্পেনিশসহ নানা ভাষার সংস্করণ বের হয়েছে। এসব ভিডিও ইন্টারনেটে পোস্ট করার পর ২০ লাখেরও বেশি ক্লিক পেয়েছে এবং দোকানের জন্য অনেক ক্রেতাও আকৃষ্ট করেছে।

চৌ ইং নামে আরেকটি দোকানের মালিক এআই প্রযুক্তির সুবিধাভোগী। তিনি বলেন, কিছু ইংরেজি বললেও বিভিন্ন দেশের গ্রাহকদের কাছে খুব স্পষ্টভাবে পণ্য ব্যাখা করা একটু কঠিন। এআই প্রযুক্তি আমাদের যোগাযোগের সমস্যাগুলো সমাধান করতে সক্ষম। তিনি আরো বলেন, ‘বসন্ত উত্সবের পর বাজার আবার খোলার প্রথম দিনে আমি এক লাখেরও বেশি ইউয়ান রেনমিনপি মূল্যের অর্ডার পেয়েছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমার বাণিজ্যে সুযোগ সুবিধা এনে দিয়েছে এবং আমি বাজার নিয়ে আস্থাশীল।’

শক্তিশালী জনপ্রিয়তা মানে প্রচুর ব্যবসার সুযোগ। ই উ মল গ্রুপের পরিসংখ্যান অনুসারে চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের পর বাজার আবার খোলার প্রথম দিনে বাজারের দোকানপাট খোলার হার ছিল ৯৪.৬ শতাংশ এবং যা ২০২৩ সালের চেয়ে  ২.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারে ঘুরে বেড়িয়েছেন ২ লাখ ২৮ হাজার জন।

ই উ মল গ্রুপের উপ প্রধান কোং ছেং হাও বলেন, ‘নতুন বছরে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ সহাবস্থান করে। এমন প্রেক্ষাপটে ই উ’র প্রাণশক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতাকে প্রতিফলিত করতে পারে। গ্রুপটি আরো বিস্তৃত বাজারে ব্যবসার বেশি সুযোগ খোঁজাতে আরো বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করছে।’