নিজের চাওয়া জীবন কাটাতে পারছি: ইয়াং ওয়েই
2024-03-07 16:23:19

গত ১৮ ফেব্রয়ারি ড্রাগন বর্ষের প্রথম কাজের দিনে রাত ১০টায় ইয়াং ওয়েই মাত্র অফিস ত্যাগ করেছেন। এ দিন চীনের সিয়োং আন গ্রুপের ডিজিটাল শহর কোম্পানির উপমহাপরিচালক হিসেবে তিনি সিয়োং আন নতুন অঞ্চলের ব্যবসায়িক পরিবেশ সুবিন্যাস সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন, স্মার্ট জ্বালানি কোম্পানি পরিদর্শন করেছেন, ন্যাশনাল গ্রিডের স্মার্ট ব্যবস্থাপনার কাজ বেগবান করেছেন এবং সহযোগী পক্ষের সঙ্গে সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সুবিন্যাসের কাজ করেছেন।

গত ৭ বছরে ইয়াং ওয়ে জীবন-যাত্রার নানা স্বাদ নিয়েছেন। তবে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতিও অর্জন করেছেন। সিয়োং আন নিয়ে তার গভীর আবেগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সিয়োং আন একটি ভবিষ্যতমুখী শহর। এটার সঙ্গে বড় হলে অনেক সম্ভাবনা থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

ইয়াং ওয়েই ১৯৭৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একসময় চীনে ফ্রান্সের অরলিন্সের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি ছিলেন। তারপর স্বদেশে ফিরে এসে স্টক তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক ব্যবসায়িক নির্বাহী কর্মকর্তা হন।

২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে চীনের হ্য পেই সিয়োং আন নতুন অঞ্চল স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়, যা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিশ্বজুড়ে চীনের সিয়োং আন গ্রুপের নিয়োগের খবর দেখে ইয়াং ওয়েই খুব উত্তেজিত। তিনি বেইজিংয়ের চাকরি ছেড়ে সিয়োং আন অঞ্চরে বড় কিছু কাজ করতে চান। ‘সুযোগ পেলে ভিন্ন জীবন কাটাও’– তিনি এমন কথা বলেছেন। সে সময় সিয়োং আন অঞ্চল উন্নয়নের কাজে জড়িত প্রধান কোম্পানি-সিয়োং আন প্রুপ মাত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই গ্রুপটির দরকার বিনিয়োগ, অর্থায়ন, অবকাঠামো এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নানা জনশক্তি। ইয়াং ওয়েই সে নিয়োগপত্র দেখে দ্রুত বিছানা থেকে উঠে কম্পিউটার খুলে তার সিভি জমা দিয়েছেন। বিশ্বজুড়ে গ্রুপটি ২৩ জনকে নিয়োগ করতে চাচ্ছিল। তবে আবেদনকারীর সংখ্যা ৪ হাজার জনেও বেশি। বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎকার দেওয়ার পর ইয়াং ওয়ে অবশেষ এ গ্রুপে চাকরি পান। তাই সে বছরের জাতীয় দিবসের পর তিনি সিয়োং আনে কাজ শুরু করেন।

সিয়োং আন অঞ্চলের মূল অঞ্চল রুং ছেং জেলা। রুং ছেং জেলার আও ওয়েই ভবনের তিন তলায় রয়েছে ইয়াং ওয়েইর অফিস। এখান থেকে শুরু হলো তাঁর সিয়োং আন স্বপ্ন। আও ওয়েই ভবন একসময় একটি হোটেল ছিল। পরে সিয়োং আন অঞ্চল গঠনের জন্য অফিস ভবনে পরিণত হয়। সে সময় এখানকার পথঘাট ও সবকিছু দেখতে ছোট জেলার মতো ছিলো । ইয়াং ওয়েই ও তার সহকর্মীরা রাতে হোটেলে উঠেন। মাঝেমধ্যেই হোটেলের রুম পর্যাপ্ত নয়। তারা দু’জন একটি বিছানায় ঘুমান।

ইয়াং ওয়েই’র স্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন যে, স্বামী ও স্ত্রী আবার ‘দু’শহরে বাস করতে হবে।’ তবে ইয়াং ওয়েই ভাবছিলেন যে, সিয়োং আন অঞ্চলের উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি একটি খালি কাগজে বণাঢ্য জীবনের চিত্র আকঁতে চান।

২০১৭ সালে ইয়াং ওয়েই সবেমাত্র সিয়োং আন গ্রুপের বিনিয়োগ ও অর্থায়ন বিভাগের উধ্বর্তন ব্যবস্থাপক হয়েছেন। তার সামনে একটি পরীক্ষা রয়েছে। সেসময় গ্রুপটি অর্থায়নে অগ্রসর ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায়। এ কাজে কোনো উপযোগী প্রার্থী ছিল না। ইয়াং ওয়েই এ সুযোগ দেখে ইতিবাচকভাবে এ কাজের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আবেদন করেন। এরপর থেকে তিনি প্রতিদিন প্রায়ই গভীর রাত পর্যন্ত ব্লকচেইন প্রযুক্তি বই পড়েন এবং এ নিয়ে উন্নয়ন দলের সঙ্গে আলোচনা করেন। ধীরে ধীরে তিনি ব্লকচেইন প্রযুক্তির তত্ত্ব জানার পাশাপাশি নিজেই কোডিং করতে পারেন। একজন অর্থায়ন ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি ও কোডিং দক্ষ মানুষ হয়ে ওঠেন ইয়াং ওয়েই।

২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ইয়াং ওয়ে’র নেতৃত্বেব্লকচেইন ফান্ড ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম অনলাইন হয়। এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অর্থায়ন, অর্থ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা করা এবং বেতন দেওয়াসহ নানা কাজের স্বচ্ছ প্রশাসন সম্ভব হয়। তখনো তাঁর সিয়োং আন আসার এক বছর হয়নি।

ব্লকচেইন ফান্ড ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্মের কারণে অর্থ প্রশাসনের নিরাপত্তা, মানদন্ড উন্নীত হয়, যা সিয়োং আন’র গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

(রুবি/হাশিম)