‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৬০
2024-03-06 10:00:05


‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী।  দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।

 

১. চীনের নবযাত্রায় তরুণদের উদ্যমী হওয়ার আহ্বান প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের

 

তরুণ কর্মকর্তারাই চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের উত্তরসূরি উল্লেখ করে তাদেরকে কমিউনিস্ট পার্টির লক্ষ্যের প্রতি সৎ থেকে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে চীনের নবযাত্রায় ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। 

সম্প্রতি ন্যাশনাল একাডেমি অব গভর্ন্যান্সে পার্টির তরুণ ও মধ্যবয়সী কর্মকর্তাদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রেসিডেন্ট সি।

দলের প্রতি আস্থা রেখে সক্রিয় অনুশীলনে অংশ নিতেও তরুণদের আহ্বান জানান তিনি। তাদেরকে মার্কসবাদ নিয়ে পড়াশোনা করে এর প্রায়োগিক দক্ষতা বাড়িয়ে সুনির্দিষ্ট ফল অর্জন করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট সি আরও বলেন, তরুণদের অবশ্যই সক্রিয়ভাবে পার্টির প্রতি আনুগত্য ও সততার অনুশীলন করতে হবে এবং রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তাদের পার্টির রাজনৈতিক শৃঙ্খলা ও নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলা, সৎ থাকা, বস্তুনিষ্ঠ কাজ করা এবং সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বানও জানান তিনি।

নিঃস্বার্থ হয়ে তরুণরা যেন জনগণের মঙ্গলে নিজেদের উৎসর্গ করে সে আহ্বানও জানান সি।

আরও ভালো ও বেশি পরিমাণে দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে, সংস্কার ও উদ্ভাবনের প্রতি আগ্রহী হয়ে নানা ধরনের সমস্যার সমাধানেও তরুণদের এগিয়ে আসার প্রেরণা দেন চীনা প্রেসিডেন্ট।

সকল স্তরের দলীয় সংগঠনগুলোকে সি বলেন, তাদের উচিত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষিত করা, কঠোর তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তোলা, যারা একটি শক্তিশালী দেশ গড়া এবং জাতির পুনর্জাগরণের দায়িত্ব নিতে পারবেন।

 

প্রতিবেদক : ফয়সল আব্দুল্লাহ

সম্পাদক: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

 

২. উদ্ভাবনী সামাজিক শিক্ষা কার্যক্রম ভিত্তিক টিভি প্রোগ্রামের তালিকা প্রকাশ

 

‘চীনা সভ্যতার ছাপ, নতুন যুগের একটি অধ্যায় রচনা’ এই থিমে টিভি প্রোগ্রামের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে সিএমজি। তালিকায় ছয়টি বিভাগে ৪৪টি উদ্ভাবনী গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে।

প্রথম বিভাগে, "জাতির মহত্ত্ব: যুব চীন" এই থিমে দেশের প্রাণবন্ত এবং উদ্যমী চেতনা প্রদর্শনের লক্ষ্যে সাতটি বড় প্রোগ্রাম রাখা হয়। দ্বিতীয় বিভাগে, "দ্য গ্রেট বিউটি: বিউটি অফ দ্য ইস্ট" থিমে ১৬টি প্রোগ্রাম উন্মোচন করা হয়, যা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি এবং চীনা সভ্যতার সৌন্দর্য তুলে ধরেছে।

তৃতীয় বিভাগটিকে বলা হচ্ছে ‘বিজ্ঞানচর্চা ও শিক্ষার মাধ্যমে চীনকে উদ্দীপিত করার মহাপরিকল্পনা’। এতে মূলত চারটি উদ্ভাবনী প্রকল্পকে সঙ্গে নিয়ে বিজ্ঞান ও শিক্ষার মূল বিষয়টাকে ফোকাস করা হবে এবং বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় আলোকপাত করে পড়াশোনার মূল নির্যাসটুকু অন্বেষণ করা হবে।

চতুর্থ অধ্যায়ে আছে "সরকার ব্যবস্থা ও আইনের শাসন"। সমকালীন চীনে আইনের শাসন নিয়ে পাঁচটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হবে এতে।

পঞ্চম বিভাগে আছে ‘স্বাস্থ্য ও সুস্থতার পথ। চীনের প্রবীণ সমাজের জন্য দরকারি মানসম্পন্ন ও মর্যাদাপূর্ণ কিছু চাহিদার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে এতে। এ অংশে থাকছে ৯টি প্রিমিয়াম প্রোগ্রাম রয়েছে।

এ ছাড়াও, ‘চীনা কবিতা প্রতিযোগিতা’ এবং ‘চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতা’র সাফল্যের পর এমন মেধাভিত্তিক কাজের ওপর তিনটি নতুন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।

এর মধ্যে আবার ‘চাইনিজ ডিজাইন কম্পিটিশন’-এ  দেখানো হয়েছে শিল্প ও প্রযুক্তির সংঘর্ষ।

 

"চীনা ভ্লগার প্রতিযোগিতা"য় আসছে সারা বিশ্বের নামকরা সব ভ্লগার। একসঙ্গে তারা তুলে ধরবেন চীনের সৌন্দর্য।

কালি দিয়ে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতাটি মূলত পানি ও কালির মেলবন্ধনকে তুলে ধরে শৈল্পিক প্লাটফর্মে। যাতে ফুটে ওঠে পূর্বের সাংস্কৃতিক আবহ। সেই সঙ্গে চীনের ঐতিহ্যবাহী কালি-শিল্পেরও একটি প্লাটফর্ম করে এ আয়োজন। 

 

প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদক: ফয়সল আব্দুল্লাহ

 

৩. অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারুকাজ সংরক্ষণে চীনা তরুণী 

 

হানফু হেয়ারপিন বা চুলের কাটার ব্যবহার করে চীনের একজন তরুণ ডিজাইনার ঐতিহ্যবাহী চীনা তিয়েনছুই কারুশিল্প ব্যবহার করে বানাচ্ছেন চমৎকার সব জিনিসপত্র।

 

তিয়েনছুই, যা ,মাছরাঙার পালক শিল্প নামেও পরিচিত।

এটি চীনের একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেখানে মাছরাঙার পালকগুলো বিভিন্ন অলংকার তৈরির জন্য সোনার বা রূপার ভিত্তির ওপর সূক্ষ্মভাবে স্থাপন করা হয়।    

এই শিল্পে একসময় পাখির শরীর থেকে তাজা পালক ছিঁড়ে নেওয়া হতো। তাই তিয়েনছুইকে নিষ্ঠুর সৌন্দর্য হিসেবেও বর্ণনা করা হয় পুরনো নথিতে।

তবে এখানকার আধুনিক হানফু চুলের কাটা যারা বানাচ্ছেন, তারা ব্যবহার করছেন পাখির ঝরে যাওয়া পালক।

 

তিয়েনছুই তৈরি করছেন প্রতিভাবান চীনা তরুণী ওয়াং চিনহুয়ান। হানফু চুলের কাটার এ ডিজাইনার পালন করছেন প্রায় ৫০০ টি প্যারাকিট জাতীয় পাখি। যার বেশিরভাগই বাজরিগার। পাখিগুলোর পালক ঝরে গেলে সেগুলো সংগ্রহ করেন ওয়াং। এতে করে পালকের মান থাকছে উন্নত।

বেশ যত্ন নিয়েই বাছাই করতে হয় পালক। আর এ কাজে ওয়াং বেছে নেন মাঝারি ও পরিপূর্ণ পালকগুলো। কোনো ধরনের দাগ বা ছোট হলে সেটা হয়ে যায় বাতিল। আর এই পালক বাছাই করাটাও শিখতে হয় হানফু ডিজাইনারদের।

 

এরই মধ্যে হানফু হেয়ারপিন বানিয়ে ইন্টারনেট তারকা হয়ে গেছেন ওয়াং। তার হানফু সাজসজ্জা তৈরির দৃশ্যও এখন বেশ সাড়া ফেলছে তরুণ প্রজন্মের মাঝে।

 

সম্প্রতি চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিজিটিএনে সম্প্রচারিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠান "কলিং অল হানফু ট্যালেন্টস"  এ ওয়াংয়ের গল্প তুলে ধরা হয়। এ অনুষ্ঠানের প্রতিটি তথ্যচিত্রই নির্মাণ করেছে সিজিটিএন।  এই প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো হান জনগণের ঐতিহ্যবাহী পোশাক হানফুর পেছনের গল্প তুলে ধরা।

 

প্রতিবেদক : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদক: ফয়সল আব্দুল্লাহ

 

 

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। শুভকামনা সবার জন্য। আল্লাহ হাফেজ।  

 

 

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী 

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী