বিজনেস টাইম-২
2024-03-01 19:43:22

চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।

এই পর্বে থাকছে:

১.  চীনের গতিশীল অর্থনীনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্লেষণ

২. আকাশ ও মাটির পর এবার ভূমির নিচের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতির পালে হাওয়া দিচ্ছে চীন।

৩. পদ্মা রেল সেতু প্রকল্প ভূমিকা রাখছে উন্নয়ন-সমৃদ্ধিতে , বাড়ছে কর্মসংস্থান

বিশ্লেষণ পর্ব:

বিশ্বের ২য় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন । সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষদের নিয়ে করা একটি জরিপে বিশ্বের ৯৩ শতাংশ মানুষ চীনের অর্থনৈতিক শক্তি ও সম্ভাবনার প্রশংসা করেছে। তারা বিশ্বাস করে চীনের শক্তিশালী অর্থনীতির হাত ধরে প্রাণ ফিরে পাবে বিশ্বের টালমাটাল অর্থনীতি। কোন পদ্ধতিতে চীন তার অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছে তা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর।

 

কর্পোরেট প্রোফাইল:

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবার দক্ষিণ চীনের কুয়াংচৌতেও নেওয়া হয়েছে অভিনব কৌশল। মাটির নিচে বানানো হচ্ছে সুপরিসর দোকানপাট। আর মাটির নিচের ওই সব শপিং মলে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে কাজে লাগানো পাতাল রেল ব্যবস্থাকে।

ফ্যাশন থিয়ানহ প্লাজা এমনই এক ভূগর্ভস্থ প্লাজা। প্রদেশের মেট্রোলাইনের সংযোগের কারণে শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে ফ্যাশন থিয়ানহ প্লাজা। যেখানে বিদেশি ব্রান্ডের পণ্যের সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে স্থানীয় নানা পণ্য, বুটিক, ট্রেন্ডি স্ট্রিট ফ্যাশন সামগ্রী ইত্যাদি।  

 

 

 

প্রায় ২০টি ফুটবল মাঠের সমান জায়গা জুড়ে থাকা প্লাজাটির ২০২১ সালে গ্রাহক ছিল সাড়ে ৪ কোটি। সুবিধাজনক অবস্থান আর যেকোন সময় সাবওয়ের মাধ্যমে মলে প্রবেশ করা যায় বলে তরুণদের কাছেও এটি হয়ে উঠেছে আড্ডা দেওয়ার অন্যতম একটি পছন্দের গন্তব্যে।ফ্যাশন থিয়ানহ প্লাজার একজন গ্রাহক বলেন,

‘কেনাকাটা ছাড়াও, এখানে তরুণরা নানা ধরনের অভিজ্ঞতা পেতে পারে। এখানে খেলাধুলারও ব্যবস্থা আছে। চাইলে এসকেপ রুমও খেলা যায়।’

কুয়াংচৌ ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল সেন্টারে আরেকটি পাঁচতলা ভূগর্ভস্থ শপিংমল তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এটা হবে প্রায় ৯ লাখ বর্গফুট জুড়ে।

আরেকজন গ্রাহক বলেন,

১ অথবা ৩ নম্বর মেট্রো দিয়ে আমরা এখানে আসি। এটা খুবই সুবিধাজনক।‘’

কুয়াংচৌর "১৪তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা" অনুসারে আগামী বছরের মধ্যে সকল অবকাঠামোর নেটওয়ার্কগুলোকে আরও উন্নত করা হবে বলে জানা গেছে।

পরিকল্পনাটির লক্ষ্য মূলত একটি আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক অবকাঠামো ব্যবস্থা স্থাপন করা।

একদিকে ড্রোনের মাধ্যমে চীন যেমন তার শহরগুলোর স্বল্পউচ্চতার  আকাশপথকে কাজে লাগাচ্ছে, তেমনি মাটির নিচের স্থানকেও ফেলে রাখছে না বিনা কাজে।

দক্ষিণ চীনের পার্ল রিভার ডেল্টা ক্লাস্টার এবং দেশের পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের শহরগুলো বিশেষ করে ইয়াংজি বদ্বীপ অঞ্চলের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে এভাবেই।

 

।। প্রতিবেদন: শাহানশাহ রাসেল

।। সম্পাদনা: ফয়সল আবদুল্লাহ

 

 

 

 

ভিন দেশে চীন:

বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এবং সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে পদ্মা রেল সেতু প্রকল্প। এর কাজ সম্পন্ন হলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনে আসবে ব্যাপক পরিবর্তন। এটি শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে মূর্ত প্রতীকও।

এই প্রকল্প ইতোমধ্যেই স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব রাখছে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ফলে জনগণের আয়ের উৎস বেড়েছে। বেড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যও।

 

সিআরইসির দেওয়া তথ্যমতে, ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার কমলাপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলছে। বাকি অংশের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রকল্পটিতে চীনা নাগরিকদের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিভিন্ন পদে প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক কাজ করছেন। বর্তমানে অনেক অংশের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় কমে এসেছে কর্মী সংখ্যাও।

 

পদ্মা রেলসেতু প্রকল্পের যেসব বিভাগে কাজ করছে তার মধ্যে অন্যতম হলো- নির্মাণ, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রশাসন এবং লজিস্টিক। তাদের অবদান প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এই চার বিভাগের আওতায় প্রকৌশলী, স্থপতি, প্রশাসন, দক্ষ শ্রমিক, সহকারী কর্মী, মেডিকেল কর্মী, নিরাপত্তা কর্মী, পরিবহন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বিভিন্ন পদে কাজ করছেন বাংলাদেশের নাগরিকরা।

 

তারা সিআরইসির সঙ্গে কাজ করতে পেরে একদিকে যেমন খুশি তেমনিভাবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে চীনের নির্মিত অন্য যেকোনও প্রকল্পে কাজ করতেও আগ্রহী।

 

তেমনি একজন বাংলাদেশি মোহাম্মদ আল কাফী। সিআরইসির ডিভিশন ২ তে ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ  করছেন।

 

 

চলতি বছর এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদী চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন।

 

এদিকে বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সিআরইসি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও পরিচালনা করছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকরা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান ও দক্ষতাও অর্জন করছে।

 

ফলে প্রকল্প শেষে হয়তো সিআরইসির সকলে নিজ দেশে ফিরে যাবে কিন্তু এদেশের নাগরিকদের মাঝে আজীবন রয়ে যাবে সিআরইসির দেওয়া প্রশিক্ষণ এবং ভালোবাসা।

 

।। প্রতিবেদন: শুভ আনোয়ার

।। সম্পাদনা: ফয়সল আবদুল্লাহ

 

 

 

 

প্রযোজনা ও উপস্থাপনা- শাহানশাহ রাসেল

 

অডিও সম্পাদনা- নাজমুল হক রাইয়ান

 

স্ক্রিপ্ট সম্পাদনা- ফয়সল আবদুল্লাহ

 

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী