চীন-থাইল্যান্ড দ্রুত গতির ট্রেন নির্মাণে চীনারাই অগ্রদূত
2024-02-26 10:47:02

বসন্ত উত্সব চলাকালেও চীন-থাই দ্রুত গতির ট্রেন প্রকল্প এগিয়ে চলেছে পুরোদমে। প্রকল্পের গতি মসৃণ রাখতে এ কাজে অগ্রদূতের ভূমিকায় ছিলেন চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের নির্মাতারা।

ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই থাইল্যান্ডের আবহাওয়া কিছুটা উষ্ণ হতে শুরু করে। এ সময় প্রকল্পের ৪-৩ বিড বিভাগের কাঠামোর বিমগুলো নির্মাণ ধাপে প্রবেশ করেছে। মেশিনের শব্দই বলে দেয়, শ্রমিকরা এখন সেগমেন্টাল বিম স্প্লাইসিংয়ের কাজে ব্যস্ত।

চীন ও থাইল্যান্ডের যৌথ ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে তৈরি হচ্ছে থাইল্যান্ডের প্রথম দ্রুত গতির ট্রেন। প্রকল্পের প্রথম ধাপে ব্যাংককের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর নাখোন রাচাসিমা যুক্ত হবে। দ্বিতীয় ধাপে সংযোগ বিস্তৃত হবে দেশটির উত্তর-পূর্ব সীমান্ত নং খাই পর্যন্ত, যার ফলশ্রুতিতে চীন-লাওস রেলপথে সরাসরি যুক্ত হবে ইউননান প্রদেশের রাজধানী খুনমিং। চীন-থাই দ্রুত গতির ট্রেনটি হবে থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক যোগাযোগের নতুন চালিকাশক্তি।

প্রকল্পের উত্পাদন ব্যবস্থাপক কাও লিয়াং বলেন, ‘চীনে বসন্ত উত্সব চলছে। আবার থাইল্যান্ডে বৃষ্টিপাত হচ্ছে কম। তাই চটজলদি কাজ এগিয়ে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সময় এটি।’

এপ্রিল মাসে থাইল্যান্ড বৃষ্টি হয়। ঘনঘন বৃষ্টি হলে তা নির্মাণকাজে বেশ প্রভাব ফেলবে। সুতরাং তাড়াতাড়ি এ নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব হলে সেটা নতুন বছরের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হবে।

কাও লিয়াং জানান, ২০২৩ সালে এ প্রকল্পের দলটিকে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে, যার মধ্যে ছিল উচ্চ তাপমাত্রা, বন্যা, পাইপলাইন ভেঙে যাওয়া। তারপরও এ সময় দলটি নকশা সুবিন্যস্তকরণের কাজসহ আরও কিছু প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি পেয়েছে।

এরই মধ্যে সুড়ঙ্গ তৈরির প্রক্রিয়া অর্ধেক শেষ হয়েছে। চুক্তি প্রক্রিয়ারও আশানুরূপ উন্নতি হয়েছে। বসন্ত উৎসব চলাকালে প্রকল্প দলকে এটি নিশ্চিত করতে হয়েছে যে, নদীপথের পাশে ১০টি ক্যাপ ঢালা হয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই।

টানা চতুর্থবারের মতো বিদেশে বসন্ত উৎসব পালন করতে হলো কাও লিয়াংকে। এর আগে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভেনিজুয়েলায় কাজ করেছিলেন।

কাও বললেন, ‘যখন উৎসব আসে, তখন বাড়ির কথা খুব মনে পড়ে। মনে হয়, পরিবারের কাছে আমি ঋণী।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পের নির্মাতা হিসেবে, সবাই এতে অভ্যস্ত। নির্মাণকাজে বিলম্ব যাতে না হয় সেজন্য প্রতি বসন্তেই এ প্রকল্পে কেউ না কেউ থাকেন।

বসন্ত উৎসব চলাকালে চীন-থাই দ্রুত গতির ট্রেন প্রকল্পে কাও লিয়াংসহ কাজ করছেন ৫৮ জন চীনা কর্মী। প্রকল্পের ব্যবসা সংক্রান্ত পরিচালক ওয়াং খান বলেন, যাতে কেউ একাকী বোধ না করে, তাই প্রকল্প বিভাগ কর্তৃপক্ষ কর্মীদের সংগঠিত করে একযোগে ডাম্পলিং তৈরির আয়োজনও করেছে।

সূর্যের আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে প্রকল্প প্রাঙ্গনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে উৎসবের বাণী ও ‘ফু’। ওয়াং খান বলেন, ‘বসন্ত উৎসব পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনের সময়। কিন্তু বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে অংশ নিতে পারা এবং নিজেদের ঘাম দিয়ে লক্ষ্য অর্জনে যার যার অভিষ্ট লক্ষ্য ব্যক্ত করতে পারা এবং প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা চালানোও কিন্তু বসন্ত উৎসব উদযাপনের সেরা পদ্ধতি।’

 

 (প্রেমা/ফয়সল/রহমান)