চলতি বছরের বসন্ত উত্সবে পর্যটনের দারুণ জনপ্রিয়তার কারণ
2024-02-21 16:49:20

এ বছর চীনের বসন্ত উত্সবে ৮ দিন ছুটি ছিল। বিভিন্ন কারণে এবারের বসন্ত উত্সবে ছুটিতে পর্যটন বাজারের পরিসংখ্যান রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। তথ্য অনুসারে, বসন্ত উত্সবের ছুটিতে চীনের অভ্যন্তরীণ ভ্রমণকারীর সংখ্যা হয়েছে ৪৭৪ মিলিয়ন, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৪.৩ শতাংশ বেড়েছে। এর পেছনে কি কি নতুন পরিবর্তন ও নতুন বৈশিষ্ট্য আছে? পর্যটন শিল্পের কিছু ব্যক্তি তাদের মতামত জানিয়েছেন।

 

এই শীতকালে চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বরফ ও তুষার ভ্রমণ বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। এ নিয়ে চীনের হাইনান প্রদেশের পর্যটন, সংস্কৃতি, ব্রডকাস্টিং, টিভি ও ক্রীড়া বিভাগের পরিচালক চেন থিয়ে চুন বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যটন বাজারের জনপ্রিয়তা থেকে দেখা যায় যে, অনেক বছর ধরে দেশের বরফ ও তুষার পর্যটন উন্নয়নের চেষ্টা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে এবং প্রতিফলিত হয়েছে যে, মানুষের ভ্রমণ আরও বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে চীনের শীতকালীন পর্যটনের দুটি ভিন্ন ধরন ও গন্তব্য তৈরি হবে। একটি হল উত্তরাঞ্চলের বরফ ও তুষার পর্যটন, অন্যটি হল দক্ষিণাঞ্চলের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দ্বীপের পর্যটন। হাইনান দ্বীপ হল দক্ষিণ চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনস্থান। ভবিষ্যতে পর্যটন কাঠামোর উন্নয়নে এর অনন্য সুবিধা তৈরি হবে। একই সময়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বরফ ও তুষার ভ্রমণের জনপ্রিয়তা একটি মৌলিক নিয়মও প্রকাশিত হয়, তা হল পর্যটকদের পছন্দের পণ্য ও ভালো ভোগের পরিবেশ থাকলে পর্যটকদের ভোগের ইচ্ছা অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে, পর্যটন বাজার অবশ্যই সমৃদ্ধ হবে।

 

চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের ছুটিতে, বসন্ত উত্সব মেলায় ঘুরে বেড়ানো, আতশবাজি পড়ানো, লণ্ঠন প্রদর্শন উপভোগ করা ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী কার্যক্রম বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ব্যয় ৬৩২.৩ বিলিয়ন ইউয়ান, যা মহামারির আগে অর্থাত ২০১৯ সালের চেয়ে ৭.৭ শতাংশ বেশি। অভ্যন্তরীণ পর্যটন জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি পারস্পরিক ভিসা ছাড়, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সুবিধা এবং বিমান রুট পুনরায় চালু করাসহ বিভিন্ন অনুকূল নীতির জন্য বিদেশে ভ্রমণকারী চীনা পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, আর অনেক বিদেশি পর্যটকও চীনে ভ্রমণ করছেন।

চীনা পর্যটন গবেষণা একাডেমির প্রেসিডেন্ট তাই পিন বলেন, ৭.৭ শতাংশের প্রবৃদ্ধি অর্জন করা খুব কঠিন ছিল। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

সরকারের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গার সরকার একটি ভালো ভোগের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যা পর্যটকদের ভোগের ইচ্ছা জাগিয়েছে। বিভিন্ন জায়গা নিজের বৈশিষ্ট্য অনুসারে পর্যটকদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেছে, সাধারণ পর্যটকদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, শহর বা গ্রামের সুন্দর দিকগুলো প্রদর্শন করা হচ্ছে। পর্যটক সেই সুন্দর জীবন দেখে এবং বন্ধুত্ব ও স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে ব্যয় করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

 

পর্যটন বাজারের দৃষ্টিকোণ থেকে, বর্তমান পর্যটন পণ্য আরো সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় হয়েছে। অতীতে মানুষ প্রধানত পাহাড়, নদী ও পুরাকীর্তি দেখার জন্য ভ্রমণ করত। এখন এসব ছাড়া শহরের সুন্দর কৃত্রিম দৃশ্য, থিয়েটার, এমনকি বাজার, যথেষ্ট বৈশিষ্ট্যময় হলে তা পর্যটনস্থান হতে পারে। আর নতুন প্রযুক্তির উন্নয়নও মানুষকে নতুন ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দিয়েছে। যেমন কুয়াং শহরে ২০২৪টি ড্রোনের ড্রোন শো অনলাইন ও অফলাইনে অনেক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

পর্যটকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায় মানুষের ভোগের ইচ্ছা বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের বসন্ত উত্সবের ছুটিতে কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর প্রথম বসন্ত উৎসব ছুটি। মানুষের ভ্রমণের সময় মহামারীর জন্য আটকা পড়ার চিন্তা নেই, আরো বেশি মানুষ বাইরে ভ্রমণ করতে চায়। ভ্রমণকারীর পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চীনের পর্যটন বাজার সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে এবং ভবিষ্যতে আরো ভালো হয়ে উঠবে।

(তুহিনা/তৌহিদ/শুয়েই)